চৌগাছায় ইউপি সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসি

0
2282

চৌগাছা (যশোর) যশোরের চৌগাছা উপজেলার ধুলিয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত ইউপি সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা ফারুক হোসেনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসি। ভুক্তভোগী এলাকাবাসি তার বিচারের দাবিতে রবিবার দুপুরে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে এসে বিক্ষোভ করেন। পাশাপাশি তারা এ বিষয়টি নির্বাহী কর্মকর্তাকে মৌখিক ভাবে অবহিত করেন। পরে নির্বাহী কর্মকর্তার আশ্বাসে তারা উপজেলা চত্ত্বর ত্যাগ করে থানায় যেয়ে একটি মামলা করেন।
স্থানীয়রা জানান, ধুলিয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বর ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ফারুক হোসেনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ। তিনি কৌশল অবলম্বন করে এলাকার নিরিহ মানুষদের ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১ মার্চ এমনই একটি কৌশল করতে যেয়ে সে হাতে নাতে ধরা পড়ে। এরপর থেকেই এলাকার মানুষ তার বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠে। রবিবার দুপুরে এলাকার শতশত নারী পুরুষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে তার বিচারের দাবি জানাতে থাকেন। একপর্যায় নির্বাহী কর্মকর্তার আশ্বাস পেয়ে তার উপজেলা চত্তর ত্যাগ করেন। পরে এলাকাবাসি চৌগাছা থানায় হাজির হয়ে ওই মেম্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে থানায় একটি মামলা করেন। এলাকাবাসি জানান, মেম্বর ফারুক হোসেন একজন মাদক ব্যবসায়ী। সে ইউপি সদস্য হওয়ার আগে এলাকার চিহিৃত অপরাধী হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। নির্বাচনে জোর করে ভোট নিয়ে সে মেম্বর নির্বাচিত হয়। বিগত ২ বছরে সে এলাকার নিরীহ মানুষ জনের কাছ থেকে নানা কৌশলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসি। এরমধ্যে শাহাজাদপুর গ্রামের ডাক্তার মমিনুর রহমানের কাছ থেকে ৫০ হাজার, ধুলিয়ানী রনির নিকট থেকে ১ লাখ ৪২ হাজার, একই গ্রামের ব্যবসায়ী আঃ মমিনের নিকট থেকে ১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। গর্ভোকালিন ভাতা দেয়ার নাম করে ধুলিয়ানী গ্রামের রোকেয়া বেগমের নিকট থেকে ৭ হাজার, বিধাব ভাতার কার্ড দেয়ার নাম করে একই গ্রামের সরবানুর নিকট থেকে ৫ হাজার টাকা পকেটস্থ করেন। এছাড়া ধুলিয়ানী গ্রামের আব্দুর রহিমের ২টি গরু, দিলিপ কুমারের বাড়ি থেকে ৩টি ছাগল ও ১টি গরু জোর নিয়ে যেয়ে বিক্রি করে দেয়। গত ১ মার্চ মালায়েশিয়া প্রবাসী ধুলিয়ানী গ্রামের জৈনক ব্যক্তির স্ত্রী ২ সন্তানের জননীর ঘরে ওই মেম্বর তার এক সহযোগী এলাকার চোর হিসাবে পরিচিত ফতেপুর গ্রামের সাহেব আলীকে উঠিয়ে দেয়। এ ঘটনা ওই মহিলার কলেজ পড়–য়া ছেলে মমিনুর রহমান দেখে ফেলে। সে মেম্বরের এহেন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলে তার উপর চড়াও হয় মেম্বর ফারুক হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, তোমার মা ভাল না এখবর যদি প্রচার হয় তাহলে তোমদের সম্মানহানী হবে। তাই ১ লাখ টাকা দাও বিষয়টি চেপে যাবো। মেম্বর ফারুক হোসেন ওই অসহায় পরিবারকে বলাচলে ফাঁদে ফেলে প্রবাসীর স্ত্রীর নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকার একটি ব্যাংক চেক হাতিয়ে নেয়। এঘটনা পরের দিন জানাজানি হলে স্থানীয়রা মেম্বরের বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠে। এ বিষয়ে মেম্বর ফারুক হোসেনের মোবাইলে বারবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসির্ভ করেননি। সংশ্লিষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান বলেন, মেম্বর ফারুক হোসেন এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ দল গড়ে তুলে এ ধরনের কর্মকান্ড দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন। এর একটি বিহিত হওয়া জরুরী বলে তিনি জানান। থানা অফিসার ইনচার্জ রিফাত খান রাজিবের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের একটি বিষয় আমি শুনেছি। থানায় একটি মামলাও হয়েছে। তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here