নড়াইলের অসহায় মানুষের আস্থার প্রতিক পুলিশ সুপার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন,

0
326

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল: নড়াইলের জনগনের আস্থার প্রতিক শত শত সাধারন নাগরিক সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ প্রধান অতিথি পুলিশ সুপারকে বরন করে নিলেন। দুটি বিবাদমান গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের বিরাজমান সংঘাতের নিরসন করলেন নিমিষে, সাধারন মানুষের মুখে নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম (বার)র প্রশংসা কেউ কেউ বলছিলো পুলিশ সুপারকে টাকা দিয়ে কেনা যায়না, উনার মত ভালো মানুষ আছে বলেই নড়াইলের অসহায় জনগন পুলিশি সেবা পাচ্ছে। আইনজীবী সমিতির সভাপতি তার বক্তব্যে আক্ষেপের সাথে বললেন পুলিশ সুপারের সামাজিক সমস্যা নিরসনের দ্রুত পদক্ষেপের জেরে কোর্টে মামলা মোকদ্দমা কমে যাচ্ছে। সামাবেশ শেষ করে নিজের গাড়ীতে উঠতেই পুলিশ সুপারের ফোন বেজে উঠলো। অপর প্রান্তে অসহায় এক কলেজ ছাত্রী জানালো বখাটেরা তাকে উত্যক্ত করছে। তাৎক্ষনিক ভাবে ডিবি টিমকে ভিকটিমের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়। এমন পুলিশ সুপার যদি সব জেলায় থাকে তাহলে পুলিশ সম্পর্কে জনগনের মাঝে আস্থা ফিরে আসবে নিশ্চিত, কীভাবে পরিত্যাক্ত জলাশয়সমুহকে নিজ উদ্যোগে পরিচ্ছন্ন করে মাছের একুরিয়াম করা হয়েছে। অব্যাবহৃত পুলিশ লাইনের ভুমিতে ধান চাষ করে এখনকার প্রজন্মকে কৃষি বিষয়ক ব্যাবহারিক শিক্ষা প্রদান করেছে। নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম (বার)। ছুটির দিনেও ইউনিফর্ম পরে। ছুটলো শহরতলী থেকে দূরে এক ইউনিয়নে “দাংগা এবং মাদকবিরোধী” এক সমাবেশে প্রধান অতিথী হিসেবে অংশ নিতে। “নড়াইলে থাকবে না দাঙ্গা, হবে না মামলা” নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম (বার)। এরই ধারাবাহিকতায় মাসুম গ্রুপ ও মোস্তাফিজ গ্রুপের মধ্যে চলমান দ্বন্দ নিরসনে এ আনুষ্ঠানিকভাবে সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি করেন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও দুই পক্ষের নেতাকর্মীবৃন্দ। আনুষ্ঠানিক এ সম্প্রীতির বন্ধন চলাকালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ টগর বলেন, এই দুই গ্রামের মধ্যে চলমান দ্বন্দ-সংঘাত আমরা স্থানীয়ভাবে দীর্ঘদিন ধরেও সমাধান করতে সক্ষম হইনি। কিন্তু পুলিশ সুপার স্যারের সঠিক দিক-নির্দেশনায় দীর্ঘদিনের চলমান এ দ্বন্দ সংঘাত নিরসন করা সম্ভব হয়েছে। এখন থেকে অত্র এলাকার জনগণ আর দাঙ্গা হাঙ্গামায় জড়াবেনা বলেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, পিপিএম (বার) বলেন, দাঙ্গা হাঙ্গামা কোনো সভ্য সমাজের কাম্য নয়। আজ থেকে অত্র এলাকায় কোনো দাঙ্গা হাঙ্গামা চলবে না। আপনাদের যে কোনো প্রয়োজনে নড়াইল জেলা পুলিশ আপনাদের সাথে আছে। আপনাদের নিরাপত্তা বিধান করা পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এরপরও যদি কেউ দাঙ্গা হাঙ্গামায় লিপ্ত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হামলা-পাল্টা হামলা, মামলা-পাল্টা মামলায় জর্জড়িত দুটি গ্রামের প্রায় অধিকাংশ মানুষই আসামি। নড়াইলের আদালতে দুটি পক্ষের ৯টি মামলা চলমান। এই দুটি গ্রামের ৮২ জনের নামে থানায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। রাতে পুলিশের ভয়ে ঘুমাতো হয় অন্যগ্রামে অথবা বাগানে। ২০১১ সাল থেকে চলে আসা বিরোধ গত চার বছর ধরে সংঘাত বেড়ে যায়। গত এক বছরে দু’পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলায় এখন অন্তত ৪ জন পঙ্গুত্ববরণ করেছে। অসংখ্য মানুষ শরীরে একাধিক আঘাতে চিহ্ন নিয়ে বেঁচে আছেন। নড়াইল শহর সংলগ্ন আউড়িয়া ইউনিয়নের বিরোধপূর্ণ দুটি গ্রাম শড়াতলা ও রামচন্দ্রপুর। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দীর্ঘদিন ঘটে চলেছে রক্তপাতের ঘটনা। নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস হোসেন পিপিএম’র মতে এই দুটি গ্রাম মারামারি করে অন্তত ১৭ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন। তাদের সন্তানদের পড়াশোনাও চরমভাবে ব্যবহত হচ্ছে। দুটি গ্রামের এই বিরোধের বিষয়টি নড়াইলের পুলিশ সুপার উদ্যোগ নেন। দুটি পক্ষের মাতব্বরদের সাথে আলোচনার এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন নিয়ে মীমাংসায় বসেন। আউড়িয়া ইউনিয়নের বাদশার গ্যারেজ সংলগ্ন একটি ধানের চাতালে মীমাংসার জন্য উভয়পক্ষ উপস্থিত হন। মীমাংসার এই বৈঠকে উপস্থিত হন নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শরফুদ্দিন, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইলিয়াস হোসেন (পিপিএম) নড়াইল জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আশিকুর রহমানসহ, চন্ডিবরপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান ভূঁইয়া, আউড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. পলাশ মোল্যা, আউড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ. রহমান চৌধুরীসহ অনেকে। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়, সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যাসহ ক্লাবের সকল সদস্যবৃন্দ। উভয়পক্ষের মাতবরদের বক্তব্য শেষে বিরোধ মীমাংসার সিদ্ধান্ত নেন গ্রামবাসী। উপস্থিত অতিথিবৃন্দ উভয়পক্ষের মাতবরদের হাতে হাত ধরিয়ে দেন। আর কোনো মারামারি করবে না বলেও দু’পক্ষের লোকজন ওয়াদাবদ্ধ হন। বক্তব্যকালে এক পক্ষের মাতবর জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমার বিমানবাহিনীতে ক্লার্ক পদে চাকরি হয়েছিলো। চাকরিতে যোগদানের জন্য রওয়ানা হলে ২০১৭ সালের ৪ মার্চ প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে বেপরোয়াভাবে মারধর করে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। আমি পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করি। তিন মাসেও সুস্থ হতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত চাকরিতে যোগদান করতে পারিনি। এই দ্বন্দ্বের কারণে দলের কয়েকজন পঙ্গু জীবনযাপন করছেন। আমরা আর বিরোধ চাই না।’ অপরপক্ষের মাতবর রবি মোল্যা বলেন, ‘আমার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমার দলের কয়েকজন পঙ্গু হয়ে বসে আছে। মামলা-মোকদ্দমাসহ প্রতিপক্ষের হামলার আতঙ্ক নিয়েই চলাফেরা করতে হয়। অন্যান্য এলাকার উন্নয়ন হচ্ছে, আর আমরা মারামারি করে সবদিকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমরা মনের থেকে সকল বিভেদ ভুলে মিলে-মিশে বাস করতে চাই।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here