নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ-ত্রুটিপূর্ণ, বিচারবিভাগীয় তদন্তের পক্ষে মত টিআইবির

0
320

খবর৭১ঃ ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে ব্যাপক অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও ত্রুটিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। প্রতিষ্ঠানটি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিচার বিভাগীয় তদন্তের পক্ষে মত দিয়েছে।

দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে করা গবেষণা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলের প্রার্থীদের জন্য সমতল ক্রীড়াভূমি (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) ছিল না এবং প্রার্থীদের মধ্যেও ছিল না আইন মানার প্রবণতা। এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়েছে, তবে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু হয়নি।

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ও ত্রুটিপূর্ণ হয়েছে। তাই এ নির্বাচন নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া উচিত।’

ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, নির্বাচনের অনিয়ম ও প্রার্থীদের করা অভিযোগ নিরসনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভূমিকা ছিল নগণ্য। তারা সব দলের জন্য সমান পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও ব্যর্থ হয়েছে ইসি। নির্বাচনী প্রচারে বিরোধী প্রার্থীদের ওপর ক্ষমতাসীনদের বল প্রয়োগ করতেও দেখা গেছে। এসব বিষয়ে অভিযোগ করা হলেও ইসিকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে দেখা যায়নি।

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- কমিশনের নির্দেশনার বাইরে জালভোট দেয়া, নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালটে সিল মেরে রাখা, বুথ দখল করে প্রকাশ্যে সিল মেরে জালভোট প্রদান, পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়া ও কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়া, ভোটারদের জোর করে নির্দিষ্ট মার্কায় ভোট দিতে বাধ্য করা, আগ্রহী ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে হুমকি, ব্যালট বাক্স আগে থেকে ভরে রাখা এবং প্রতিপক্ষ দলের প্রার্থীর নেতাকর্মীদের মারধর করার মতো অভিযোগ উঠেছে।

সিইসির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে টিআইবি। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- প্রধান নির্বাচন কমিশনারও স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে পারেননি। তার নিকটাত্মীয় প্রার্থী হলেও নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে পারেননি তিনি। এ ছাড়া নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ছিল না।

তাই এসব অনিয়মের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা উচিত বলে মনে করছে টিআইবি।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিন থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৫ জেলার ৫০টি আসন থেকে সংগ্রহ করা বিভিন্ন তথ্য নিয়ে গবেষণার প্রাথমিক প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব তথ্য তুলে ধরে টিআইবি।

সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি দাবি করে, নির্বাচনে ৪৭ আসনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আর জালভোট পড়েছে ৪১ আসনে। ৩৩ আসনে আগের রাতে ব্যালটে সিল মারা হয়েছে।

টিআইবির দাবি, ৮২ শতাংশ আসনে জালভোট পড়েছে। আর ৬৬ শতাংশ আসনে নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্সে সিল মারা হয়েছে। আর নির্বাচনী অনিয়ম হয়েছে ৯৪ শতাংশ আসনে।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here