উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ নড়াইলের দু’টি আসনে ১২ প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন (পিপিএম)। তিনি বলেন, নড়াইল-১ আসনে ১০২টি কেন্দ্রের মধ্যে ২২টি কেন্দ্র এবং নড়াইল-২ আসনে ১৪০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান” তবে রোববার (৩০ ডিসেম্বর) সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে পুলিশ, আনসার, বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে নিরাপত্তা ছক তৈরি করা হয়েছে। এসপি পদমর্যাদার দুইজন বাড়তি ফোর্স অফিসার পেয়েছি। এ ছাড়া নড়াইলের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় যাতে কোনো সহিংসতা না হয় এবং তারা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছে। এদিকে সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ লাইন্স মাঠে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় দিক-নির্দেশনামূলক কথা বলেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচনী ফোর্স অফিসার পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম, মোহাম্মদ রেজাউল মাসুদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শরফুদ্দীন, সহকারী পুলিশ সুপার (পিবিআই) মনিরুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়া) রিপন চন্দ্র সরকার, সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিনসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা। নির্বাচনে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি নড়াইলে ৮৭৮ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। জেলা রিটার্নিং কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলের দু’টি আসনে ১২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নড়াইল-১ আসনে পাঁচ প্রার্থী ও নড়াইল-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত প্রার্থী। ভোটাররা জানান, নড়াইল-২ আসনে মূল আলোচনায় আছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা ও বিএনপি প্রার্থী ডক্টর এ জেড এম ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। এ আসনের অন্য প্রার্থীরা হলেন- ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী এস এম নাসির উদ্দীন, ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মাহাবুবুর রহমান এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (রব) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফকির শওকত আলী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে, নড়াইল-১ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কবিরুল হক মুক্তি ও বিএনপি প্রার্থী বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন। এ আসনের অন্য প্রার্থীরা হলেন- জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রার্থী দলের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিল্টন মোল্যা, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হাফেজ মোহাম্মদ খবির উদ্দীন ও এনপিপি’র (ছালু) প্রার্থী মুনসুরুল হক। নড়াইল-১ আসনে ভোটার ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫১ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ১৯ হাজার ১১৩ এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৮ হাজার ৯৩৮ জন। কালিয়া পৌরসভাসহ ১৪টি ইউনিয়ন ও সদর উপজেলার কলোড়া, বিছালী, সিঙ্গাশোলপুর, সেখহাটি ও ভদ্রবিলা ইউনিয়ন নিয়ে নড়াইল-১ আসন গঠিত। বিগত নির্বাচনে এ আসনে পাঁচবার আ’লীগ, দু’বার করে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি এবং একবার স্বতন্ত্র প্রার্থী (আ. লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী) বিজয়ী হন। নড়াইল-২ আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৭ হাজার ৫১১ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৬০ হাজার ৬২৪ এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৮৭ জন। নড়াইল ও লোহাগড়া পৌরসভাসহ এ আসনের অধীনে সদর উপজেলায় আটটি ইউনিয়ন এবং লোহাগড়ার ১২টি ইউনিয়ন রয়েছে। বিগত নির্বাচনে এ আসনে পাঁচবার আ. লীগ ও একবার মহাজোটের প্রার্থী এবং দুইবার করে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, (পিপিএম), আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে বলেন, আসন্ন জাতীয় একাদশ সংসদ নির্বাচনে যাতে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না ঘটে এ লক্ষে নড়াইল জেলা পুলিশের একাধিক টিম ইতোমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছে। নির্বাচনী সহিংসতা রোধে মোবাইল টিম গঠন ও তৎক্ষণাৎ এ্যাকশান গ্রহণের জন্যও পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ সময় নড়াইল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ রাজু আহম্মেদ বলেন, ভোটাধিকার প্রয়োগের জনগণের অধিকার। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য নড়াইলবাসীকে উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।