খবর৭১:ফ্রান্সে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ার প্রতিবাদে রাজধানী প্যারিসে ‘ইয়লো ভেস্ট’ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে।ফ্রান্সজুড়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে জনতার বিক্ষোভ চলছে। গতকাল পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে রাজধানী প্যারিস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এই সংঘর্ষে অন্তত ১১০ জন আহত হয়েছে। ২৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সরকারের জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ‘হলুদ জ্যাকেট’ পরিহিত আন্দোলনকারীরা এই বিক্ষোভ করছে। টানা তৃতীয় সপ্তাহের বিক্ষোভে আন্দোলনকারীরা প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর পদত্যাগের দাবি করেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে শতাধিক আন্দোলনকারীকে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনী। তবে এমন সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি না করে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন, দেশটির প্রধানমন্ত্রী এ্যাডওয়ার্ড ফিলিপি।
কর এবং তেলের লাগামহীন মূল্য বাড়ার প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে স্থানীয় সময় শনিবার সকাল থেকে প্যারিসের ‘শঁজেলিজের’ প্রধান সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করে প্রতিবাদকারীরা। তারা প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও তার সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলে, তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে, টিয়ার সেল ছোঁড়ে পুলিশ। এসময় কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় প্যারিসের আকাশ। বিক্ষোভকারীরাও পুলিশের উদ্দেশ্যে পাল্টা ইট-পাটকেল ছোঁড়ে। দু’পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা। ঘটনাস্থল থেকে শতাধিক মানুষকে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনী। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা গুরুত্বপূর্ণ সড়কের যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। বিক্ষোভকারীরা বলেন, ‘দ্রুত কর কমানো হোক। আমাদেরকে বেঁচে থাকার সুযোগ দিন। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর আত্মাঘাতী পদক্ষেপে এখন আমরা বেঁচে থাকার আশাটুকু হারিয়ে ফেলেছি।’
বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি না করে বিক্ষোভকারীদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এ্যাডওয়ার্ড ফিলিপ। তিনি বলেন, ‘আমি বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্য জোড়ালো আহ্বান জানাচ্ছি যে, আলোচনার জন্য আমাদের দরজা এখনো খোলা রয়েছে। আন্দোলোনকারীদের মধ্যে থেকে প্রতিনিধি আসলে, তাদেরকে আমরা স্বাগত জানাবো। ফ্রান্স সরকার খোলামেলা আলোচনার জন্য সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।’ ফ্রান্সে গত এক বছরে ডিজেলের মূল্য ২৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। দেশটিতে গেল কয়েক দশকের মধ্যে এখন জ্বালানি তেলের দাম সবেচেয়ে বেশি। মূলত ফ্রান্সে দূষণ কমাতে দেশটির প্রেসিডেন্ট জ্বালানি তেলের উপর কর আরোপ করলে–গেল ১৭ নভেম্বর থেকে বিক্ষোভে নামে সাধারণ মানুষ।
খবর৭১/জি