পাগলা মসজিদের দানবাক্সে ৯৬ দিনে মিলল সোয়া কোটি টাকা

0
296

খবর৭১ঃপ্রতি তিন-চার মাস পরপর খোলা হয় কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স হিসেবে ব্যবহৃত পাত্রটি লোহার সিন্দুক। আর বরাবরই এসব দানবাক্স খুললে বিপুল পরিমাণ অর্থ, স্বর্ণ ও রৌপ্যালংকার মেলে।

তবে এবার ৩ মাস ৬ দিন পর অর্থাৎ ৯৬ দিন পর শনিবার এসব দানবাক্স খুলে পাওয়া গেল ১ কোটি ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬৮৫ টাকা। এছাড়া বিদেশি মুদ্রাসহ স্বর্ণ ও রৌপ্যালংকার।

রাত ৬টার দিকে এসব দানবাক্স কড়া পুলিশি প্রহরায় রূপালী ব্যাংকে জমা দেয়া হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষে সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মোহাম্মাদ সাঈদের উপস্থিতিতে সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংকের ম্যানেজার-কর্মকর্তা, মসজিদ পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তা , সদস্য এবং মসজিদ ক্যাম্পাসে অবস্থিত মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা টাকা গোনার কাজে অংশ নেয়।

সকাল ৯টা থেকে এ কাজ শুরু এবং সন্ধ্যার দিকে শেষ হয়। আর তখন সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মোহাম্মাদ সাঈদ আনুষ্ঠানিকভাবে টাকার পরিমাণ ঘোষণা করেন।

জনশ্রুতি আছে, একসময় এক আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝপথে প্রবাহিত নরসুন্দা নদের মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা উঁচু টিলাকৃতির স্থানটিতে। মুসলিম ও হিন্দু-নির্বিশেষে সব ধর্মবর্ণের লোকজনের যাতায়াত ছিল ওই কামেল পাগল সাধকের আস্তানায়।

ওই পাগল সাধকের দেহাবসানের পর তার উপাসনালয়টিকে কামেল পাগল পীরের মসজিদ হিসেবে ব্যবহার শুরু করে এলাকাবাসী। কিন্তু ওই কামেল পাগল পীরের দেহাবসানের পর থেকে আশ্চর্যজনকভাবে এলাকা এমনকি দেশের দূরদূরান্তের লোকজনের ভিড় বাড়তে থাকে।

ওই পাগল পীরের মসজিদে মানত কিংবা দানখয়রাত করলে মনোবাসনা পূরণ হয় এমন বিশ্বাস থেকে বিভিন্ন বয়সের হিন্দু-মুসলিম নারী-পুরুষ মানত নিয়ে আসেন এই মসজিদে। তারা নগদ টাকা-পয়সা,স্বর্ণ ও রৌপ্যালংকারের পাশাপাশি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি দান করেন।

বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এ মসজিদে মানত নিয়ে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের ঢল নামে। আগতদের মধ্যে মুসলিমদের অধিকাংশই জুমার নামাজ আদায় করেন এ মসজিদে। আর এ ইতিহাস প্রায় আড়াইশ বছরেরও অধিক সময়ের বলে জানা যায়।

এ মসজিদটির ব্যবস্থাপনা পরিষদের মূল দায়িত্বে রয়েছেন জেলা প্রশাসক। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুরশেদ চৌধুরী জানান, দানের বিপুল অর্থ দিয়ে মসজিদ ও মসজিদ ক্যাম্পাসে অবস্থিত দ্বীনি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান সংস্কার ছাড়াও আধুনিকায়তনের কাজের পাশাপাশি দরিদ্র্য কল্যাণ,অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ নানাবিধ সামাজিক কল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়ে থাকে।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here