শেষমেষ দুই চড়ে’ই শিশু ধর্ষন চেষ্টার বিচার শেষ

0
203

বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটের মোল্লাহাটে মাত্র দুই চড় মেরে ধর্ষন চেষ্টার ঘটনার দফা-রফা করেছেন সেখানকার সমাজপতিরা। মাত্র ১৫ মিনিটের এই টর্নেডোর গতি সম্পন্ন শালিশীর আয়োজন করা হয় গত বুধবার রাতে। আয়োজক ছিলেন চাউলটুরী এলাকার সাবেক-বর্তমান জনপ্রতিনিধি সহ বেশ কয়েকজন সমাজপতি। তবে শালিশীতে উপস্থিত অনেকেই সমাজপতি দের এহেন বিচার ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট হতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।
ধর্ষন চেষ্টার শিকার শিশুটির বাবা জানায়, মোল্লাহাট উপজেলার চাউলটুরি গ্রামে তার বাড়ি। ওই গ্রামের একটি স্কুলে তৃতীয় শ্রেনীতে পড়ে তার মেয়ে। গত ৪ জুলাই বিকেলে প্রতিবেশী কৃষ্ণবালা (৪৫) ওই শিশুটিকে তার ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে শিশুটির স্যালোয়ার ছিড়ে ফেললে সে চিৎকার দেয়। পরে ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে নানা টালবাহানা শুরু করে সেখানকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। ঘটনার পর এক মাস সময় পার হলেও কৃষ্ণবালা (৪৫) নামের ওই স্বভাব লম্পটকে বাঁচাতে মাতুব্বররা নানা ভাবে কালক্ষেপন করেন বলেও অভিযোগ ওঠে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত বুধবার দুপুরে সেখানকার সমাজপতিরা আকস্মিকভাবে শালিশীর আয়োজন করে ধর্ষন চেষ্টার শিকার শিশুটির বাবার বাড়িতে। সেখানে হাজির হন কোদালিয়া ইউপি’র সাবেক সদস্য সুশীল বিশ্বাস, বর্তমান ইউপি সদস্য তরুন কান্তি বিশ্বাস, কৃষ্ণবালা’র অতি কাছের লোক বাদল মাঝি, পাগল কীত্ত্র্নিয়া, ট্যাপা কীত্ত্র্নিয়া, ওই ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: আকাশ, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কোদালিয়া ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো: সবুর আলীসহ অনেকে। শালিশ বিচারে কৃষ্ণবালা’কে ডেকে স্যান্ডেল দিয়ে দুটি চড়-থাপ্পড় মারে তার চাচাতো ভাই ট্যাপা কীত্ত্র্নিয়া। বিচার এ পর্যন্তই শেষ। শালিশের প্রতিক্রিয়ায় কোদালিয়া ইউপি’র সাবেক সদস্য সুশীল বিশ্বাস মুঠোফোনে এ প্রতিনিধিকে জানান, “সার্বিক দিক বিবেচনা করে এ বিচারে আমি সন্তুষ্ট। এলাকার কথাও তো ভাবতে হবে।” স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কোদালিয়া ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো: সবুর আলী বলেন, অপরাধ হিসেবে উপযুক্ত শাস্তি হয়নি।
মনে মনে অসন্তোষ থাকলেও প্রকাশ্যে শালিশী মেনে নিতে হয়েছে শিশুটির বাবাকে। জানা গেছে, শিশুটির বাবা’র মামা সাবেক ইউপি সদস্য সুশীল বিশ্বাসের চাপে নাকি ওই পরিবার শালিশীতে বসতে বাধ্য হয়েছিল। আবার দুই চড়-থাপ্পড়েই বিচার শেষ হলেও কোন জরিমানা করা হয়নি কৃষ্ণ’কে। ওদিকে এলাকার রথিন নামের এক ব্যক্তির কাছে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলতে কৃষ্ণবালা’র স্ত্রী একা রানী দিয়েছিল ১৭ হাজার টাকা । সে টাকা কার পকেটে গেল- তা নিয়ে নানা কথা বলছে আশপাশের লোকেরা।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here