অগ্রগতিতে শীর্ষে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন: ডব্লিউএইচও

0
484
অগ্রগতিতে শীর্ষে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন: ডব্লিউএইচও

খবর৭১ঃ চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস করোনার যে কয়েকটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন এখন পরীক্ষাধীন রয়েছে তার মধ্যে অগ্রগতি বিবেচনায় শীর্ষে রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথম শুক্রবার এমন কথা জানিয়েছেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্রিটিশ ওষুধ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি এই ভ্যাকসিনটি বৃহৎ ও মাঝারি পরিসরে ইতোমধ্যে মানবদেহে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এর উৎপাদন নিয়ে চলতি সপ্তাহে দশম কোনো কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে তারা।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ওষুধ উৎপাদনকারী অ্যাস্ট্রাজেনেকার পরীক্ষামূলক এই ভ্যাকসিন প্রথম ভ্যাকসিন হিসেবে চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছেছে। এটি কোভিড-১৯ থেকে মানুষকে কতটা কার্যকরভাবে সুরক্ষা দিতে পারে, তা পরীক্ষা করে দেখা হবে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকার লাইসেন্সকৃত সিএইচএডিওএক্সওয়ান এনকোভ-১৯ (ChAdOx1 nCoV-19) ভ্যাকসিনটি যুক্তরাজ্যে ১০ হাজার ২৬০ জন প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুকে দেওয়া হবে। এটি দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলেও পরীক্ষা করা হচ্ছে।

ভ্যাকসিনটি তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে ‘সিএইচএডিওএক্সওয়ান’ভাইরাস, যা মূলত সাধারণ সর্দিকাশির দুর্বল ভাইরাস (অ্যাডেনোভাইরাস) হিসেবে পরিচিত। এটি শিম্পাঞ্জিকে সংক্রমিত করে। গবেষকেরা এ ভাইরাসের জিনেটিক পরিবর্তন করেছেন, যাতে তা মানুষের ক্ষতি না করে।

গত বছরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে শুরু হওয়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা এখন বিশ্বব্যাপী তাণ্ডব চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে অচেনা ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন কোটি ছুঁই ছুঁই মানুষ। মারা যাওয়ার সংখ্যাটাও অনেক লম্বা। চার লাখের কাছাকাছি।

ভাইরাসটি শনাক্তের পর থেকে এর প্রতিষেধক বের করতে মরিয়া বিজ্ঞানীরা। প্রবল গতিতে ছড়ানোর পাশাপাশি ভাইরাসটি যখন হাজার হাজার মানুষের প্রাণ কাড়ছে তখন ভাইরাসটি প্রতিরোধে কার্যকর একটি ভ্যাকসিন হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে বিশ্ব।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওষুধ প্রস্তুতকারক থেকে শুরু করে গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে৷ এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক ভ্যাকসিন বা টিকা নিয়ে গবেষণা চলছে। এর মধ্যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে ১৫টির। ইতোমধ্যে মানবদেহে বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন প্রয়োগের পরীক্ষাও শুরু হয়েছে৷ তবে সেগুলো কবে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

ডব্লিউএইচও’র প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথম শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, করোনার যে কয়েকটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন এখন পরীক্ষাধীন রয়েছে তার মধ্যে অগ্রগতি বিবেচনায় শীর্ষে রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনটি।

তিনি বলেন, ‘অবশ্যই তারা কতটা অগ্রসর অবস্থানে রয়েছে, সেই পর্যায়ে যে দিক দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে, আমার মনে হয় এটাই (অক্সফোর্ডের তৈরি ভ্যাকসিন) শীর্ষস্থানীয়। সম্ভবত খুব দ্রুতই এর ফলাফল পাবে তারা।’

সৌম্য স্বামীনাথম বলেন, মার্কিন কোম্পানি ‘মডার্নার তৈরি ভ্যাকসিনটিও উন্নতির দিক দিয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকার চেয়ে খুব দূরে নেই। এ প্রসঙ্গে সৌম্য স্বামীনাথম বলেন, ‘আমরা জানি যে, মডার্নার তৈরি ভ্যাকসিনটিও তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শুরু করতে যাচ্ছে, সম্ভবত জুলাইয়ের মাঝামাঝি এবং সম্ভাব্য এই ভ্যাকসিনটিও সম্ভাব্য এই ভ্যাকসিনটিও (অ্যাস্ট্রাজেনেকার থেকে) খুব বেশি দূরে নেই।’

‘কিন্ত আমি মনে করি অ্যাস্ট্রাজেনেকা যেখানে যেখানে ভ্যাকসিনটির ট্রায়াল চালাচ্ছে এবং যেখানে ট্রায়াল চালানোর পরিকল্পনা করছে সেসব দিক বিবেচনায় নিলে বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে তারা সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here