হবিগঞ্জ জেলায় ১ হাজার ৫২টির মধ্যে ২১০টি স্কুলের ভবন জরাজীর্ণ, ঝুকিপূর্ণ ভবনেই ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা

0
391

মঈনুল হাসান রতন হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের ৮টি উপজেলায় ২১০টি প্রাইমারী স্কুলের ভবনে ফাটল সৃষ্টি ও জরাজীর্ন অবস্থায় পাঠদান চলছে। ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা ঝুকি নিয়ে ক্লাস করছে। আবার অনেক ভবন পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হলেও বিকল্প কোন ধরনের ভবন না থাকায় কারনে বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত ও ঝুকিপূর্ণ ভবনেই ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। এর ফলে যে কোন সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় ১ হাজার ৫২টি প্রাইমারী স্কুল রয়েছে। এর মধ্যে ২১০টি স্কুলের ভবন ফাটল, ঝুকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। এর মধ্যে হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ১টি স্কুল, আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ১১টি, বাহুবল উপজেলায় ২৪টি, নবীগঞ্জ উপজেলায় ২২টি, মাধবপুর উপজেলায় ৪০টি, লাখাই উপজেলায় ৯টি, চুনারুঘাট উপজেলায় ৪০টি এবং বানিয়াচং উপজেলায় ৬৩টি বিদ্যালয়ের ভবন ফাটল, ঝুকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত রয়েছে। এসব ভবনেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে হচ্ছে বিকল্প কোন ধরনের ভবন না থাকায়। অনেকটা বাধ্য হয়েই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।সম্প্রতি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার এতবারপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে ঘুরে ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে। স্কুলের দুটি ভবন প্রায় ৫ বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হয়েছে কিন্তু বিকল্প কোন ধরনের ভবন না থাকায় বাধ্য হয়েই শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে ভবনে। ভবনের দেয়ালে একাধিক ফাটল, টিনসেটের উপরে ভেঙ্গে পড়েছে, আবার কোন কোন স্থানে সিলিং ভেঙ্গে ঝুলে রয়েছে। যে কোন সময় সিলিং কিংবা ভবন ভেঙ্গে পড়ে শিক্ষার্থীদের মারাত্মক ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে শিক্ষার্থীও শিক্ষক-অভিভাবকরা। স্কুলের ক্ষুদে শিক্ষার্থী রুবেল মিয়া জানান, বর্তমান সময়ে কাল বৈশাখী কিংবা ঝড় তোফান আসলে আমরা বই নিয়ে দৌড়ে বাড়িতে চলে যায়। যে কারনে আমাদের লেখাপড়ায় বিঘœ ঘটছে।স্কুলের শিক্ষার্থী সাবিনা আক্তার জানান, আমরা যখন দেখি ঝর বৃষ্টি আসছে তখন আমাদের অনেক ভয় হয় অনেক সময় দৌড়ে অফিস কক্ষে চলে আসি। সে জানায় দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবনে তৈরী করে দিলে তাদের শিক্ষার মান আরো বাড়বে।একই এলাকার অভিভাবক রহিমা আক্তার জানান, আমরা ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে সবময় ভয়ে থাকি কখন জানি কি হয়। তিনি বলেন বিদ্যালয়ের ভবনের একাধিক স্থানে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে যে কোন সময় ভেঙ্গে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।অপর অভিভাবক শুক্লা রানী জানান, স্কুলের ভবন অনেক বছর যাবত পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হয়েছে কিন্তু নতুন ভবন না থাকার কারনে ঝুকির মধ্যেই তাদের সন্তানদের লেখাপড়া করতে হচ্ছে।স্কুলের প্রধান শিক্ষক আয়েশা খানম জানান, আমার স্কুলের ৩টি ভবন রয়েছে। স্কুলের ছাত্রÑছাত্রীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩শ জন। এর মধ্যে দুটি ভবনই পরিত্যক্ত ও ঝুকিপূর্ণ। অত্যন্ত ঝুকি নিয়ে দুটি ভবনে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হচ্ছে। তিনি বলেন শুধু শিক্ষার্থী নয় শিক্ষকরা ঝুকির মধ্যে রয়েছে তাই ঝড় তোফান আসলে স্কুল শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে একটি কক্ষে নিয়ে বসে থাকতে হয়। ঝড় তোফান শেষ হলে আবার পুণরায় ক্লাসে ফিরে যেতে হয়। তিনি বলেন আমরা অত্যন্ত ঝুকির মধ্যে রয়েছি।এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রেজ্জাক জানান, পরিত্যক্ত ভবন, জরাজীর্ণ ভবন ও ফাটলকৃত ভবনগুলো নির্মান ও পূনঃনির্মানের জন্য মন্ত্রনালয়ে চিঠির মাধ্যমে লিখা হয়েছে। এছাড়া বৃষ্টি আসলে যাতে করে ক্লাসের কোন সমস্য না হয় সে জন্য স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আশা করি মন্ত্রনালয় থেকে পর্যায়ক্রমে ভবন মেরামত করে দেয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here