নির্বাচনের আগে হঠাৎ নমনীয় ক্ষমতাসীনরা: দ্য ইকোনমিস্ট

0
375

খবর ৭১: নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে হঠাৎ করেই যেন বদলে গেল বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কৌশল। তাদের আচরণে নমনীয় ভাব একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহনমূলক নির্বাচনের আশা জাগিয়ে তুলেছে। অথচ কয়েকদিন আগেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মানুষের চিন্তাভাবনা অন্য রকম ছিল।

সাধারন মানুষ মনে করছিল, আগামী নির্বাচনও গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই হবে, খুব বেশি ভোট পড়বে না। নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। খবর- দ্য ইকোনমিস্টের।

আন্তর্জাতিক ও সংবাদ মাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবারও যেভাবেই হোক নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করতে চাইবে। কিন্তু হঠাৎ করেই পাল্টে গেছে দৃশ্যপট।

ভোট সুষ্ঠু হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থাকলেও পরিবর্তিত এ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মানুষ আশা করছে ডিসেম্বরের নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হতে পারে।

দুটি বড় চমক নিয়ে ছিল গত অক্টোবর মাসে। এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে বড় দুই রাজনৈতিক দলের একটি বিএনপি তাদের দীর্ঘদিনের ডানপন্থী মিত্রদের বাদ দিয়ে তুলনামূলক উদার ছোট দলগুলোর সঙ্গে জোট করে।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন এই জোটের নাম জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এর চেয়েও বড় চমকটি আসে পরে। কঠোর অবস্থানে থাকা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ হঠাৎ করেই নমনীয় হয়। তারা ঐক্যফ্রন্টসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করে। ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে দুই দফায় সংলাপ হয়।

এই জোটের দাবিগুলোর অন্যতম হলো দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে থাকা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন এবং নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সংলাপের পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঐক্যফ্রন্টের দাবিগুলো বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে সংবিধান লঙ্ঘন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা সম্ভব নয়।

দাবি আদায় না হলে আন্দোলনের ইঙ্গিতও দিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। তবে জোরালো আন্দোলন কিংবা নির্বাচন বয়কট, কোন পথে এগোবে তা নিয়ে তারা এখনো দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছে। এর আগে নির্বাচন বয়কট করে তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসনসহ দলটির নেতাকর্মীদের। সংসদে দলটির অনুপস্থিতি ক্ষমতাসীনদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে মামলা-হয়রানির শিকার হয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

বিএনপির হিসাবমতে, দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশে এ পর্যন্ত প্রায় ৯০ হাজার মামলা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরেই দলটির সাড়ে চার হাজারের বেশি সদস্য গ্রেফতার হয়েছেন। বিএনপির চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৩৪টি। তার বড় ছেলে ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয়েছে।

২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক সহিংসতায় শুধু ভোট গ্রহণের দিন নিহত হয় ১৮ জন। একশ’র বেশি ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। বিরোধীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত হরতাল বা অবরোধ ডাকার লক্ষণ দেখা যায়নি। বরং রাজনৈতিক পরিবেশ উন্নয়নে সরকারি দল বিরোধী জোটের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here