শেষ মুহূর্তে রাজধানীতে জমে উঠেছে কোরবানি পশুর হাট

0
664
শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানি পশুর হাট

খবর৭১ঃ কোরবানির হাটে বেচাকেনা শনিবারই জমে উঠেছে। গতকাল থেকে পুরোদমে শুরু হয়েছে কেনাবেচা। আগের দুই দিন বিরূপ আবহাওয়া ও বাজারের গবাদিপশুর হাটের অবস্থা বোঝার জন্য অনেকে বাজার ঘুরে দেখেছেন। ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে গবাদিপশু বেচাকেনা নিয়ে তেমন দরকষাকষি হতে দেখা যায়নি।

রাজধানীর সবচেয়ে বড় পশুর হাট গাবতলীতে শনিবার থেকে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। তারা সময় নিয়ে সাধ্যের মধ্যে পছন্দের কোরবানির পশু দেখছেন, দরদাম করছেন। অনেকে অল্প সময়ের মধ্যে পশু কিনেও নিচ্ছেন। ব্যাপারিরা বলছেন, শনিবার ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। বেড়েছে বিক্রিও। তবে বড় গরুর কাছে ক্রেতা আসছে কম। তারা আরো অপেক্ষা করবেন। দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মধ্যেই খুশির ভাব দেখা গেছে।

শনিবার দুপুরের পর থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতার সরব উপস্থিতি ও দরকষাকষি করে গরু-ছাগল বেচাকেনা চলছে। বিক্রেতারা বলছেন, দেশি গরুর চাহিদা বেশি। দামও লাখ টাকার ওপরে। তবে দাম একটু বেশি বলে অভিযোগ করছেন অনেক ক্রেতা। বেশির ভাগ ক্রেতাই দেশি ও বিদেশি গরুর সংমিশ্রণে ক্রস প্রজাতির ও ছোটো সাইজের গরু কেনার প্রতি ঝুঁঁকছেন। তবে অনেকেই পশুর দাম ও আর্থিক সঙ্গতির হিসাব মেলাতে না পেরে একাধিক হাটে ঘুরছেন। শেষ মুহূর্তে যদি অর্থের সঙ্গে পছন্দ মিলে যায় সেই আশায়। গতকাল দুপুরে সরেজমিনে রহমতগঞ্জ ক্লাব মাঠ ও হাজারীবাগ পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে। ছোটো সাইজের গরু ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার, মাঝারি থেকে বড় ধরনের ক্রস গরু আকারভেদে ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা ও দেশি গরু ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রহমতগঞ্জ ক্লাব মাঠে এক ব্যবসায়ীকে পাঁচটি বড় সাইজের গরু ৮ লাখ টাকায় কিনতে দেখা যায়। গরু পছন্দ হওয়ায় দুই কথায় গরুগুলো কিনে নেন তিনি। পল্টনের বাসিন্দা রকিব উদ্দিন জানান, তিনি সব সময় দেশি গরু কোরবানি দেন। তাই বাজার ঘুরে ঘুরে বাছাই করে পছন্দসই গরু কেনেন। এবারও হাজারীবাগ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় গরু কিনেছেন বলে জানান। বিক্রেতারা বলছেন, এবার ভারতীয় গরু না আসায় দেশি ক্রস প্রজাতির গরু বেশি উঠেছে। গতবারের চেয়ে দামও একটু বেশি। ক্রেতারা যেভাবে হাটে আসছেন, তাতে শেষের দিকে গরু খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে ধারণা অনেকের। এবার গরুর তুলনায় ছাগলের বিক্রি কম।

মোহাম্মদপুর থেকে স্যানিটারি ব্যবসায়ী কবিরুদ্দিন গাবতলী পশুর হাটে যান সকাল ১১টার দিকে। তিনি সাড়ে ১২টার দিকে গরু কিনেছেন। দেড় ঘণ্টা দেখেছেন, দরদাম করেছেন। দুটো গরু তার বাজেট অনুযায়ী পছন্দ হয়েছিল। এর মধ্যে ৫৫ হাজার টাকায় একটি কিনেছেন। মানিকগঞ্জ থেকে এক ব্যবসায়ীর আনা ৭টি দেশি গরুর মধ্যে এটি একটি। তিনি বলেন, ‘বাজেট অনুযায়ী গরু কিনেছি। হারজিত বিবেচনা করার কিছু নেই। হাটে গরুর দাম বেশিও না, আবার কমও না।’ তবে গত বছর দাম একটু কম ছিল।

শেওড়াপাড়া থেকে এসেছেন লেদ ব্যবসায়ী জাকির হোসেন। সকাল থেকে ঘুরে ঘুরে গরু দেখছেন তারা। তাদের চাহিদা মাঝারি সাইজের দুই থেকে আড়াই মণ ওজনের গরু। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে গরু দেখছি। গরুর তুলনায় কোনো কোনো বিক্রেতা বেশি দাম চাইছেন। তবে আমি এখনো সেভাবে দরদাম করিনি। আরো দেখব, তারপর কিনব।’ আজকে না কিনলে আরও একদিন পর কিনবেন বলে জানান তিনি।

মানিকগঞ্জ থেকে আটটি গরু নিয়ে এসেছেন ব্যাপারি লাভলু হোসেন। তিনি বলেন, ‘এক বছর ধরে গরু খামারে রেখে কোরবানির উপযোগী করা হয়েছে। সামান্য লাভ পেলেই ছেড়ে দেব।’ এই ব্যাপারির আটটির মধ্যে দুটা গরু এরই মধ্যে বিক্রি হয়েছে। একটি ৯৬ হাজারে, অপরটি ৮২ হাজার টাকায়। বাকি ছয়টির দামও ভালোই বলছেন ক্রেতারা। তবে এখনো আশানুরূপ দাম পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here