উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
তিন জেলার মানুষের ভোগান্তির কারণ স্থানীয়রা জানায়, এ সড়ক দিয়ে নড়াইল, যশোর ও খুলনা এ তিন জেলার পাঁচটি উপজেলার অন্তত এক লাখ মানুষ চলাচল করে। সড়কের দক্ষিণ প্রান্তে রয়েছে নওয়াপাড়া ও ফুলতলা বাজার এবং উত্তর প্রান্তে নড়াইল জেলার বৃহত্তম বাণিজ্যিক কেন্দ্র রূপগঞ্জ বাজার। এসব বাজারে পণ্য আনা-নেয়া করা হয় নড়াইল-ফুলতলা সড়ক দিয়ে। সড়কের বর্তমান বেহালের কারণে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি সময় অপচয় হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। নড়াইল সদর উপজেলার নড়াইল-ফুলতলা সড়কটি তিন জেলার মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আওতাধীন ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে ধুলায় অন্ধকার আর বর্ষায় কাদা-পানিতে একাকার। পিচ-খোয়া উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় যানবাহন চলে ঝুঁকি নিয়ে। এছাড়া সড়কটি নড়াইল-গোবরা সাত কিলোমিটার অংশ দিয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক শহর যশোরের নওয়াপাড়ায় যাওয়া যায়। এতে নড়াইল-নওয়াপাড়া যাতায়াতে প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা কমে। আর নড়াইল-শেকেরহাট সড়কটি দিয়ে নড়াইল-ফুলতলা ও খুলনা যাতায়াতে রাস্তা কমে প্রায় ২০ কিলোমিটার। এ সড়কের আশপাশে রয়েছে অন্তত ১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গোবরা, মির্জাপুর, রুখালী ও চাকই এ এলাকার বড় বাজার। এসব বাজারে পণ্য পরিবহনে প্রতিনিয়ত মালবোঝাই ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল করে। সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সড়কটির মির্জাপুর থেকে রুখালী পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এবং চাকই থেকে শুভরাড়া পর্যন্ত তিন কিলোমিটার মোটামুটি চলাচলযোগ্য। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা মিলে আরো তিন কিলোমিটার চলাচলের অবস্থায় রয়েছে। বাকি ২০ কিলোমিটার সড়কে পিচ ও খোয়া উঠে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। যানবাহন চলছে হেলেদুলে ঝুঁকি নিয়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে ধীরগতিতে চালাতে হয়। সদরের খলিসা খালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীসহ কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে এদিক দিয়ে। মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। অটোরিকশাচালক কামরুল শেখ বলেন, ছোট যানবাহন প্রায়ই উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। অন্তঃসত্ত্বা ও অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নেয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কাভার্ড ভ্যানচালক আমীর হোসেন বলেন, এ এলাকার বাজারগুলোতে পণ্য দিতে আসি। সড়কের অধিকাংশ জায়গায় ছোট-বড় গর্ত। গাড়ি চলে হেলেদুলে। খানাখন্দে চাকা পড়লে গাড়ি তোলা দুষ্কর হয়ে যায়। উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়। তবে নড়াইল সওজ সূত্রে জানা গেছে, সড়কটি সংস্কারের জন্য ১১৩ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি হয়েছে। এ প্রকল্পের মধ্যে ভৈরব নদের সিকিরহাটে ফেরিও রয়েছে। সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হেনা মস্তফা কামাল, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। স্থানীয়রা জানায়, এ সড়ক দিয়ে নড়াইল, যশোর ও খুলনা এ তিন জেলার পাঁচটি উপজেলার অন্তত এক লাখ মানুষ চলাচল করে। সড়কের দক্ষিণ প্রান্তে রয়েছে নওয়াপাড়া ও ফুলতলা বাজার এবং উত্তর প্রান্তে নড়াইল জেলার বৃহত্তম বাণিজ্যিক কেন্দ্র রূপগঞ্জ বাজার। এসব বাজারে পণ্য আনা-নেয়া করা হয় নড়াইল-ফুলতলা সড়ক দিয়ে। সড়কের বর্তমান বেহালের কারণে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি সময় অপচয় হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
খবর ৭১/ ই: