বাগেরহাটে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট

0
319
SAMSUNG CAMERA PICTURES

খবর৭১:এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের ৯উপজেলা ৩ পৌরসভায় গ্রীষ্মের শুরুতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। চারিদিকে চলছে পানির জন্য তীব্র হাহাকার। এতে দূষিত পানি পান করে নানা রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে এলাকায়। সমস্যা সাধানের জন্য জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট লোকজনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে,অধিকাংশ টিউবয়েলে অতিমাত্রায় আর্সেনিক ও নদী-খাল, পুকুরের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় গ্রীষ্মের শুরুতেই পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে তীব্র পানির হাহাকার লেগেছে।ফলে বেঁচে থাকার তাগিদে অনেকেই দূষিত পানি পান করে জীবন ধারণ করছেন । ফলে ডাইরিয়া, আমাশয়, টাইফেয়ডসহ নানা পানিবাহী রোগ-ব্যাধি দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পানির অপর নাম জীবন হলেও এই পানি এখন ডেকে আনছে মৃত্যু। বিশুদ্ধ পানির অভাবে শত শত লোক এখন ভুগছে নানা রোগ-ব্যাধিতে। সুপেয় পানির এ এসংকট যেন এলাকা বাসির নিত্য দিনের সমস্যা। উপজেলা ব্যাপি বিশুদ্ধ পানীয় জলের তীব সংকটে এখন দিশেহারা হয়ে উঠেছে লোকজন। গত কয়েক যুগ ধরে এ সমস্যা চলে আসলেও এটি সমাধানের জন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসির।
এলাকার বেশিরভাগ নদী-খাল ও পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় গোসল ও খাবারের পানি মিলছেনা কোথাও। ফলে লোকজনকে আর্সেনিকযুক্ত টিউবয়েলের পানি পান করতে হচ্ছে। বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবে শত শত পরিবারের খাওয়া গোসল বন্ধ হতে বসেছে। এছাড়া সদরে অবস্থিত হাসিনা বেগম বালিকা বিদ্যালয়, এসএম মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শিশু কানন বিদ্যা নিকেতন, শেখ হেলাল উদ্দিন একাডেমিসহ ৬-৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শত শত শিক্ষার্থীদের জন্য সুপেয় কোন পানির ব্যবস্থা না থাকায় তারা দুষিত আর্সেসিক যুক্ত পানি পান করছে তারা। এ অবস্থায় এ পানি পান করে বিভিন্ন পানিবাহী রোগে ভুগছে লোকজন।
এছাড়া এখানকার বাসাবাড়ি ও হোটেল-রেষ্টুরেন্টে সুপেয় পানির অভাবে বিভিন্ন পুকুরের দুগন্ধযুক্ত পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। যেটি পান করার অযোগ্য। বিভিন্ন লোক ভ্যানযোগে পুকুর থেকে এসব পানি তুলে এনে বিক্রি করছে হোটেল-রেঁস্তোরায়। পানির এ প্রকট সমস্যায় যেন দিশেহারা হয়ে উঠেছে লোকজন।
সদর বাজারের চায়ের দোকানদার মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, টাকায়ও অনেক সময় পানি মিলছেনা।ফলে বাধ্য হয়ে পুকুরের নোংড়া পানি পান করতে হচ্ছে। প্রতি বছর গ্রীষ্ম মৌসুম শুরু হলেই এ সমস্যা দেখা দেয়।
চিতলমারী হাসিনাবেগম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শৈলেন্দ্র নাথ বাড়ৈ জানান, তার বিদ্যালয়ে প্রায় ৪ শতাধিক ছাত্রী রয়েছে তাদের জন্য সুপেয় কোন পানির ব্যবস্থা না থাকায় চরম সংকটে রয়েছে তারা। এ অবস্থায় আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করতে হচ্ছে এসব শিক্ষার্থীদের। ফলে এ পানি পান করে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এছাড়া নানা ধরণের পানিবাহি রোগ-ব্যাধিতে ভুগছে অনেকে।
এলাকার গৃহবধু চপলা বিশ্বাস,সোনালি বিশ্বাসসহ অনেকে জানান, এক কলসি পানির জন্য উপজেলা পরিষদের সাপ্লাইএ লাইন দিতে হয়। বেশির ভাগ সময়ে লাইনে থেকেও পানি মেলেনা। খালি কলসি নিয়ে ফিরে যেতে হয়। বাধ্য হয়ে পুকুরের দূষিত পানি পান করতে হয় তাদের।
চিতলমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ নিজাম উদ্দিন জানান, বিশুদ্ধ পানির সংকট নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। এ প্রকল্পটি পাশ হলে মধুমতি থেকে পানি এনে এলাকায় সাপ্লাই করা হবে।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন অরুন কুমার মন্ডল জানান, বিশুদ্ধ পানির অভাবে ডাইরিয়া, আমাশয়, টাইফেয়ডসহ বিভিন্ন পানিবাহি রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here