ভারতীয় বিদ্যুৎ আমদানিতে জটিলতা

0
344

খবর৭১: প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিক্রয় নীতি চূড়ান্ত না হওয়ায় দেশটি থেকে বিদ্যুৎ আমদানি প্রক্রিয়া জটিলতার মধ্যে পড়েছে। ফলে বিদ্যুৎ কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। উল্লেখ্য, চলতি বছর ভারত থেকে নতুন করে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির কথা রয়েছে।

জানা গেছে, ভারত গত বছর নতুন করে ক্রস বর্ডার ট্রেড অব ইলেক্ট্রিসিটি ট্রেড আইন প্রয়ণন করেছে। কিন্তু এটি বাস্তবায়নের জন্য যে নীতিমালা করা দরকার, তা এখনও তৈরি করা হয়নি। ফলে দেশটি থেকে বিদ্যুৎ রপ্তানির যেসব প্রক্রিয়া রয়েছে, তার সবক’টি ঝুলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পাওয়ার সিস্টেম মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী, প্রতিবছর দেশে ১০ ভাগ হারে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। সেই হিসাবে ২০২১ সাল নাগাদ দেশে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে। চাহিদা সামাল দিতে সরকার দেশি-বিদেশি খাত থেকে বিদ্যুতের সংস্থান করছে।
বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সরকার দেশে উৎপাদন বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে ভারত থেকে। এর বাইরে আরও তিন হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এ বছরই আসার কথা রয়েছে। বিহার ও আসামকে সংযুক্ত করা গ্রিড লাইন দিয়ে আরও এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া, ভারতের মধ্যে আদানীর স্থাপন করা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আরও এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করবে বাংলাদেশ।

একই কারণে সমপ্রতি ভারতের বেসরকারি খাত থেকে ২৫০ মেগাওয়াটের দরপত্রও বাতিল করা হয়েছে। এখন বিদ্যুৎ-জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বিশেষ বিধানের আওতায় পাওয়ার ট্রেডিং কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার (পিটিসি) সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।

বর্তমানে ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুতের মধ্যে ২৫০ মেগাওয়াট আসে বেসরকারি খাত থেকে। এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশকে সরবরাহ করে পিটিসি। এজন্য ২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বর পিটিসি ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) মধ্যে একটি বিদ্যুৎ বিক্রি চুক্তি (পিপিএ) সই হয়। এই চুক্তির মেয়াদ গত বছর ৩১ জুলাই শেষ হয়ে গেছে। এজন্য নতুন করে দরপত্র আহ্বান করে বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতের ক্রস বর্ডার নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় এই দরপত্রও খুলতে পারছে না বাংলাদেশ।

এদিকে, বেসরকারি খাতের এই বিদ্যুৎ আমদানি যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সে কারণে পিটিসি’র সঙ্গে করা আগের পিপিএ’র মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। প্রচলিত আইনে পিপিএ’র মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ না থাকায় বিশেষ আইনে মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস সম্প্রতি এক চিঠিতে জানান।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। ভারত আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র। ভারত থেকে এখন প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়। আগামীতে এই আমদানির পরিমাণ অনেক বাড়বে। এসব বিদ্যুৎ আনতে নীতিমালা জরুরি। তাই সম্প্রতি যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকেও ভারতের কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই নীতিমালা দ্রুত সম্পন্ন করার অনুরোধ করা হয়েছে। তা না হলে বিকল্প উপায়ে কিভাবে বিদ্যুৎ আমদানি করা যায়, সে বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে।’
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here