ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে এক বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বেলা ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
এদিকে সংগঠনিটি আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ভারতে একজন বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশিদের প্রতি ভারতে বিজেপির তৈরি করা ঘৃণা এখন আক্রোশে রূপান্তরিত হয়েছে। উগ্রবাদী কর্তৃক একজন বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যাকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সম্ভ্রমহানির চেষ্টা হিসেবেই আমি দেখছি।’
হাসনাত বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়কে অতিদ্রুত ভারতের কাছে জবাবদিহি চাইতে হবে। হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করতে হবে৷ পাশাপাশি, ভারতে থাকা বাংলাদেশের নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে রামমূর্তি নগরের কেলকেরে লেকের কাছে ২৮ বছর ওই বয়সী বাংলাদেশি নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই নারী একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন এবং গত বৃহস্পতিবার বাড়ি ফেরার পথে এই ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা নির্জন এলাকায় তার মরদেহ আবিষ্কার করে এবং সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, নিহত নারী একজন বিবাহিত ছিলেন এবং তার স্বামী ব্রুহাত বেঙ্গালুরু মহানগর পালিকার পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করেন। তারা তিন সন্তানসহ শহরে বসবাস করতেন।
এক পুলিশ কর্মকর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, ধর্ষণের পর হত্যার শিকার ওই নারী বাংলাদেশি নাগরিক এবং গত ছয় বছর ধরে এখানে বসবাস করছিলেন। তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি চিকিৎসা ভিসায় ভারতে প্রবেশ করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার ওই নারী তার সহকর্মীকে জানিয়েছিলেন যে তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ আছে এবং তার দেরি হতে পারে। তাই সহকর্মীকে আগে চলে যেতে বলেন। তবে রাতে বাড়ি না ফেরায় তার স্বামী রামমূর্তি নগর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তিনি পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করতে সেখানে গিয়েছিলেন। শুক্রবার সকালে মাথায় বড় পাথরের আঘাতসহ তার মরদেহ পাওয়া যায়। সম্ভবত কোনো তর্ক-বিতর্কের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা বিএনএস ধারা ৬৩ (ধর্ষণ) এবং ১০৩ (হত্যা)-এর অধীনে মামলা দায়ের করেছি এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি।
এদিকে ঘটনার খবর পাওয়ার পর পূর্ব বিভাগের ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ (ডিসিপি) দেবরাজ ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ডগ স্কোয়াড নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, শুক্রবার সকালে ১১২ নম্বরে কল পেয়ে আমরা একটি পরিত্যক্ত স্থানে এক নারীর মরদেহ পাওয়ার তথ্য পাই। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এটি একটি নৃশংস অপরাধ। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে।