বাগেরহাটে খননে প্রাপ্ত প্রত্নতাত্তিক নিদর্শনের পাঁচদিন ব্যাপি প্রদর্শনী

0
263

হেদায়েত হোসাইন, বাগেরহাট: ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত স্থাপনা বিখ্যাত মুসলিম শাসক উলুঘ খানজাহান (রহ) এর বসত ভিটা খননে প্রাপ্ত প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাগেরহাট সদর উপজেলার সুন্দরঘোনা এলাকায় বসত ভিটা চত্বরে পাঁচদিন ব্যাপি এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান। এসময়, প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনার আ লিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা, বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মোছাব্বেরুল ইসলাম, প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাগেরহাটের কাস্টোডিয়ান মোঃ যায়েদ, ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বাচ্চুসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন। প্রথম দিনেই প্রদর্শনী দেখতে স্থানীয় বাসিন্দারা আসতে শুরু করেছে।
স্থানীয় শিক্ষার্থী জুম্মান আলী বলেন, এখানে প্রত্মতাত্তিক খননে পাওয়া নিদর্শনের প্রদর্শনী হচ্ছে তাই শুনে এসেছি। এখানে পাওয়া ৬‘শ সাড়ে ৬‘শ বছর আগে প্রত্নবস্তু দেখে আমার খুব ভাল লেগেছে।
উদ্বোধন শেষে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, প্রায় ৬‘শ বছর আগে খলিফাতাবাদ নামের একটি শহর প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ষাটগম্বুজ মসজিদসহ বাগেরহাটের অনেক বিখ্যাত স্থাপনা তার হাতেই তৈরি। এখানে তার বসভিটা ছিল। এটা আমাদের অনেকে অজানা ছিল। এই খননের মাধ্যমে আমরা অনেক নতুন কিছু জানতে পেরেছি। খননের ফলে যে প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে সেসব মানুষকে দেখার সুযোগ করে দিতে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাগেরহাটসহ প্রত্নতাত্ত্ব প্রেমিরা অনেককিছু জানার সুযোগ পাবেন বলে মনে করেন তিনি।
প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনার আ লিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্য ঐতিহাসিক মসজিদের শহর বাগেরহাটের বসতভিটা ডিবিতে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে বর্তমান পর্যন্ত খনন কাজ চলমান রয়েছে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন কালপর্বের ইটের দেয়াল, চুন সুরকির মেঝে, পানি নির্গমন নালা, ব্রীত সলিং, পাথওয়ে, পোড়ামাটির তৈজসপত্র, হাড়ি, ঘট, থালা,বাটি, পিরিচ, কলমের ভগ্নাংশ, তৈল প্রদীপ, অলংকৃত ইট, পোড়ামাটির গুটিকা, পোড়ামাটির বল, কাচের চুড়ি, গ্লেইজডওয়ার, টালি, প্রদীপপদ্বানী, নল, সিড়ি, পায়ে চলার পথ, জালের গুটি, পোড়ামাটির পুতি, লাল, কালে ও ধূসর বর্ণের মৃৎপাত্র পাওয়া গেছে। খুব শীঘ্রই আমরা এই খনন কাজ সমাপ্ত করব।
তিনি আরও বলেন, আজ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বিশেষ করে বাগেরহাটবাসীর জন্য, কারণ যারা খানজাহানকে হৃদয়ে ধারণ করেন। আমরা চেয়েছি, বাগেরহাটবাসী প্রথমে এই প্রত্নবস্তুগুলো দেখবেন। তারপরে এই প্রত্নবস্তুগুলো নথিভুক্ত করা হবে। গবেষনা রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে। আমরা আশাকরি এই পাঁচদিনে শুধু বাগেরহাট নয়, অন্যান্য অ ল থেকে দর্শনার্থীরা আসবেন এখানে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here