খবর৭১ঃ বলিউডের নামজাদা অভিনেতা আমির খানের দাম্পত্য জীবন সিনেমার গল্পের চেয়েও চমকপ্রদ। ক্যারিয়ারের একেবারে শুরুর দিকে তিনি পরিচালক রীনা দত্তের প্রেমে পড়েছিলেন। ১৯৮৬ সালে বিয়েও করেন। সংসার করেছেন দীর্ঘ ১৬ বছর। যুনাইদ খান ও ইরা খান নামে দুই সন্তানের অভিভাবকও হন তারা। কিন্তু ২০০২ সালে আচমকাই ভেঙে যায় আমির খান ও রীনা দত্তের সাজানো সংসার।
এই বিচ্ছেদের পেছনে যে কারণ ছিল সেটাও চমকপ্রদ। ২০০১ সালে মুক্তি পায় আমির খানের অন্যতম ব্যবসাসফল ছবি ‘লগান’। এটি পরিচালনা করেছিলেন তখনকার নামজাদা নির্মাতা আশুতোষ গোয়ারিকর। ওই সময় সবে ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা খুঁজছিলেন আমির খানের দ্বিতীয় স্ত্রী কিরণ রাও। চলচ্চিত্র নির্মাতা হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার।
ঠিক তখনই তিনি জানতে পারেন, একজন সহকারী খুঁজছেন আমুতোষ গোয়ারিকর। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কিরণ কাজ শুরু করেন ‘লগান’ টিমের সঙ্গে। যিনি একসময় আমির খানের প্রথম স্ত্রী পরিচালক রীনা দত্তেরও সহকারী হিসেবে কাজ করেছিলেন। কিন্তু রীনার সঙ্গে থেকে বড় কোনো সুযোগ পাচ্ছিলেন না কিরণ, যার মাধ্যমে তিনি তার পরিচালক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন।
এর পরই তিনি ২০০০ সালে রীনার টিম থেকে বেরিয়ে আশুতোষের ‘লগান’ টিমের সঙ্গে কাজ শুরু করেন। শুটিং শেষ হয়ে ছবিটি মুক্তি পায় ২০০১ সালে। এই ‘লগান’ ছবির সেট থেকেই একে-অন্যের প্রেমে পড়েন আমির খান ও কিরণ রাও। যদিও কিরণ সে সময় ভালো করেই জানতেন, আমির খান বিবাহিত, তার সন্তানও রয়েছে। এও জানতেন, আমির খানের স্ত্রী রীনা দত্ত, যার সহকারী হিসেবে তিনি কাজ করেছেন।
তা সত্ত্বেও আমির খানের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান কিরণ রাও। ঘরে স্ত্রী থাকার পরও আমির খান এই কিরণের সঙ্গে লিভ টুগেদার শুরু করেন। এতে করে রীনা দত্তের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়। এরপর ২০০২ সালে তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। সেই থেকে দুই সন্তান যুনাইদ ও ইরা তাদের মায়ের সঙ্গেই থাকে।
এদিকে, দীর্ঘ তিন বছর লিভ ইন সম্পর্কে থাকার পর ২০০৫ সালে কিরণ রাওকে বিয়ে করেন আমির খান। তাদের এই সম্পর্ক নিয়ে একসময় বেশ চর্চা হতো। বলিউডের অন্দরে কান পাতলে এখনো শোনা যায় যে, আমির খানকে উপরে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন কিরণ রাও। এ জন্য ঘরে স্ত্রী-সন্তান আছে জেনেও তিনি আমির খানের সঙ্গ ছাড়েননি। বরং রীনা দত্তের থেকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়েই করে ফেলেন।
কিন্তু আমিরের সঙ্গে সারাজীবন কাটানো হলো না কিরণেরও। ১৫ বছর সংসার করার পর তারা ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় যৌথ বিবৃতি দিয়ে সে কথা প্রকাশও করেছেন।
ওই বিবৃতিতে লেখা রয়েছে, ‘এই ১৫ বছরের সুন্দর সফরে আমরা প্রচুর আনন্দ, উচ্ছ্বাস, অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। ভরসা, ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধার মধ্যে দিয়ে আমাদের সম্পর্ক বিকশিত হয়েছে। এবার আমরা জীবনের নতুন একটা অধ্যায় শুরু করতে চলেছি। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী হিসেবে নয়, আমাদের সন্তানের মা-বাবা এবং একই পরিবারের সদস্য হিসেবে।’