মাত্র ছয় হাজার টাকার জন্য খুন হন এই অভিনেত্রী

0
232

খবর ৭১: এক অভিনেত্রী যাকে মাত্র ছয় হাজার টাকার জন্য খুন হতে হয়েছিল। তার সেই কাহিনি চার বছর পরও গায়ে কাঁটা দেয়। তিনি কৃতিকা চৌধুরি। হাতেগোনা কয়েকটি ছবিতেই দেখা গেছে তাকে।
১৯৯০ সালে উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে জন্ম তার। পড়াশোনা করেছেন উত্তরপ্রদেশের চিত্রকুট ইন্টার কলেজ থেকে। বরাবরই পড়াশোনায় মনোযাগী ছিলেন কৃতিকা। সে কারণে মা-বাবা ভেবেছিলেন তিনি পড়াশোনা নিয়েই থাকবেন। কিন্তু শেষে তা হয়নি। কৃতিকার লক্ষ্য ছিল বলিউড।
পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে তাই অভিনয় শিখতে দিল্লি চলে আসেন তিনি। তার জীবনের মোড় ঘুরতে শুরু করে দিল্লি থেকেই। দিল্লিতে তার পরিচয় হয় বিজয় দ্বিবেদী নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। বলিউডে নামজাদা পরিচালকদের সঙ্গে ওঠাবসা রয়েছে বলে নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন বিজয়।

কৃতিকা বিশ্বাস করেছিলেন বিজয়কে। তার সঙ্গেই মুম্বাই চলে আসেন তিনি। ক্রমে তাদের বন্ধুত্ব গাঢ় হয়ে যায় এবং মুম্বাইয়ে দুজনে বিয়ে করে থাকতে শুরু করেন। ততদিনে ছোটখাটো মডেলিং করতে শুরু করেছিলেন কৃতিকা। ২০১১ সালে ‘পরিচয়’ নামে একটি হিন্দি ধারাবাহিকেও সুযোগ পান।
তারপর ২০১৩ সালে কঙ্গনা রনৌতের ছবি ‘রাজ্জো’তেও সুযোগ পান। এর বাইরে কয়েকটি ধারাবাহিকে ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করছিলেন। তবে কোনোটাই তার মনের মতো চরিত্র ছিল না। যে বিজয়ের ওপর ভরসা করে তিনি মুম্বাই এসেছিলেন, কৃতিকার ক্যারিয়ারে সেই বিজয়ের কোনো অবদান ছিল না। এ নিয়ে দুজনের সম্পর্কে চিড় ধরতে শুরু করেছিল।
এরই মধ্যে ২০১৬ সালে আচমকা তাদের ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে বিজয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিজয়ের গ্রেফতারের পর তার কুকীর্তি সামনে আসে স্ত্রী কৃতিকার। তারকা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মুম্বাই আসা নবাগতদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন বিজয়। এ রকমই এক নারীর কাছ থেকে ২২ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। সেই অপরাধেই গ্রেফতার হন বিজয়।
বিজয়ের এ কীর্তি সামনে আসার পরই তাকে ডিভোর্স দিয়ে দেন কৃতিকা। তার পর মুম্বাইয়ের লোখান্ডওয়ালার একটি এক কামরায় ফ্ল্যাটে একা থাকতে শুরু করেন।
২০১৭ সালে ১২ জুন ওই ফ্ল্যাট থেকেই তার পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুর্গন্ধ পেয়ে যখন পুলিশ ওই ফ্ল্যাটে পৌঁছায় তখনও তার পরিচয় জানত না পুলিশ। এক কামরায় ওই ফ্ল্যাটের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র তখনও চালু ছিল। তার ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হওয়ারও কোনো প্রমাণও মেলেনি।
এই ঘটনায় প্রথমেই প্রাক্তন স্বামী বিজয়কে আটক করে জেরা শুরু করে পুলিশ। কিন্তু বিজয় এ খুনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। পরে সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কৃতিকার ফ্ল্যাটে শেষ বার এদেরই ঢুকতে দেখা গিয়েছিল। জেরায় ওই দুজন খুনের কথা স্বীকারও করেন। কিন্তু খুনের কারণ জেনে হতচকিত হয়ে যায় পুলিশ।
অবসাদগ্রস্ত কৃতিকা ক্রমেই মাদকের নেশায় বুঁদ হয়ে পড়েছিলেন। ওই দুজনের কাছ থেকে তিনি মাদক কিনতেন। কৃতিকার থেকে নাকি তারা ছয় হাজার টাকা পেতেন। বার বার বলা সত্ত্বেও যা দিচ্ছিলেন না কৃতিকা।
শেষে ওই ছয় হাজার টাকার জন্যই খুন হন কৃতিকা। ধারালো অস্ত্র নিয়ে কৃতিকার মাথা বরাবর আঘাত করে তাকে খুন করা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় তার।
সূত্র: আনন্দবাজার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here