খবর৭১ঃ রোজায় আমাদের সুস্থতা থাকার জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন। একজন মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য যেই পরিমাণ খাবার প্রয়োজন হয় তাকে ব্যালেন্স ডায়েট বলে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রায় ২০০০-২৫০০ ক্যালরি সমপরিমাণ খাবার গ্রহণ করতে হয়। তবে রোজার সময় ১০০০ থেকে ১৫০০ ক্যালরি খাবার গ্রহণ যথেষ্ট।
কারণ রোজায় অল্প খাবার গ্রহণ করলেই অটোফ্যাজি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরের ক্ষতিকর কোষসমূহ পরিষ্কার হয়। তাই অন্যান্য সময় যেই পরিমাণ খাবার খাওয়া যায় রোজায় তার চেয়ে এক তৃতীয়াংশ কম খেতে হবে।
আমাদের ক্যালরিজেনিক খাবারগুলি মূলত তিন ভাগে বিভক্ত ।
১. কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাবার যথা, চাল, আটা, ময়দা, আলু, ছোলা বুট, খেজুর, ফলমুল ইত্যাদি এক গ্রাম শর্করা থেকে ৪ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়।
২. প্রোটিন তথা আমিষজাত খাবার। যথা-মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, ইত্যাদি।এক গ্রাম প্রোটিন থেকে ৪ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়।
৩. ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাবার, বা তৈলাক্ত খাবার। এক গ্রাম ফ্যাট থেকে ৯ ক্যালরি পাওয়া যায়।
নরমাল ব্যালেন্স ডায়েটের মধ্যে খাবারবে অনুপাত হচ্ছে,
কার্বোহাইড্রেট : প্রোটিন : ফ্যাট= ৪ঃ১ঃ১
আরো সহজে দৈনিক খাবারের
৬৫% হবে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা (ভাত, মুরি, রুটি, আলু, খেজুর, কলা, ছোলা ভুট, অন্যান্য ফলমুল )
২৫% হবে প্রোটিন বা আমিষ (মাছ, মাংস, ডিম)
১০% ফ্যাট (তৈল)
রোজার সময় ১৫০০ ক্যালরি পেতে হলে
৬৫% শর্করা , তথা ৯৭৫ ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত।
২৫০ গ্রাম শর্করা জাতীয় খাবার। ৬০ গ্রাম প্রোটিন জাতীয় খাবার
৩০ গ্রাম স্নেহদ্রাব্য খাবার।
ইফতারী আর ডিনার মিলিয়ে ৬০০-৭০০ ক্যালরি খেতে হবে আর সেহরিতে ৬০০-৭০০ ক্যালরি। আর যারা ওজন কমাতে চান তারা ইফতারিতে ৩০০ ক্যালরি খাবেন, সেহরিতে ৩০০ ক্যালরি পরিমান , সঙ্গে ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার ও পর্যাপ্ত ফাইবার জাতীয় খাবার যেনো খাওয়া যায়৷
এবার আসুন জেনে নিই ইফতারি ও সেহরিতে কি কি খেতে হবে আর কি কি পরিহার করতে হবে:
ইফতারিতে খাবার তালিকা-
ইফতারিতে ৬০০ ক্যালরি পেতে হলে যা খেতে হবে.
১. খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নত। খেজুর শর্করা জাতীয় খাবারের মধ্যে অন্যতম। খেজুরের মধ্যে শর্করা ছাড়াও প্রায় সব ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে, ৪টা মাঝারি (৩৫ গ্রাম) খেজুরের মধ্যে প্রায় ১০০ ক্যালরি রয়েছে। তাই ইফতারিতে ৪-৫ টা খেজুর খাওয়া যেতে পারে।
২. ফলমূলের মধ্যে ইফতারিতে কলা অন্যতম একটা কলায় প্রায় ১০৫ ক্যালরি রয়েছে তাই ইফতারির তালিকায় ১ টা করে কলা খাওয়া যেতে পারে।
৩. ছোলা বুট খাওয়া যেতে পারে। ৫০ গ্রাম ছোলা বুটের মধ্যে প্রায় ১৮০ ক্যালরি রয়েছে। ছোলাবুট অল্প পরিমান খাবে ২০-২৫ গ্রাম এর চেয়ে বেশি না খাওয়াই ভালো। কারণ এটা পরিপাক হতে দীর্ঘ সময় লাগে।
৪. একটা ডিম খাওয়া যেতে পারে, একটা ডিমের মধ্যে ৮০ ক্যালরি রয়েছে।
৫। অন্যান্য ফলমূল খাওয়া যেতে পারে যথা তরমুজ, আপেল, কমলা এইসব পানিশূন্যতা রোধে অনেক উপকারী।
৬. ডাবের পানি, ইসুপগুলের ভুসি, লেবুর শরবত ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। এইগুলি পানিশূন্যতা রোধে অনেক উপকারী।