নবীগঞ্জে ব্রীজ নির্মাণে অনিয়ম, কাজ বন্ধ করলেন এলাকাবাসী

0
339

মঈনুল হাসান রতন হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ-সঈদপুর সড়কের ইনাতগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ সংলগ্ন বিবিয়ানা নদীর উপর চার কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ব্রিজের নির্মাণ কাজ চলছে। ব্রিজ নির্মাণে কাজ পেয়েছে মিজানুর রহমান শামীম ট্রেডার্স। যার সত্ত্বাধিকারী হলেন আবুল কাশেম।
এলাকাবাসীর অভিযোগ নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রীসহ শুরু থেকেই ঠিকাদার আবুল কাশেম নানা অনিয়ম করে আসছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে ব্রিজের পাইলিংয়ের কাজ চলছে। প্রতিটি পিলারের পাইলিং ৩২ মিটার (১০৫ ফুট) থাকার কথা। কিন্তু গত শনিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে ঠিকাদার আবুল কাশেম শুধুমাত্র সাড়ে ১০ মিটারের একটি পিলারের জন্য রডের সাথে রিং বেধে লোহার খাঁচা পাইলিংয়ের গর্তে ঢালাইয়ের কাজ শুরু করেন। এসময় এলাকার শতশত জনগণ অনিয়মের বিষয়টি বুঝতে পেরে কাজে বাঁধা প্রধান করেন।
তারা প্রতিবাদ করে বলেন, যেখানে প্রতিটি পিলারের পাইলিং ৩২ মিটার (১০৫ ফুট) থাকার কথা, সেখানে কেন সাড়ে ১০ মিটার ঢালাই করে লোহার খাঁচার পিলার সম্পন্ন করতে চায় ঠিকাদার। এসময় ঠিকাদারের অনিয়ম নিয়ে জনগণ বিক্ষোভ করলে ব্রিজের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী শিমুল বড়ুয়া তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।
এ সময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ব্রিজ নির্মাণের দায়িত্বরত সুপারভাইজার লিটন দাশ বলেন, এখানে ৩২ মিটার (১০৫) ফুট পাইলিং করা হয়েছে। বিক্ষুব্ধ জনগণ তাকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন- ৩২ মিটার (১০৫) ফুট পাইলিং করা হয়নি। জনতার চাপের মুখে লোহার খাঁচা উত্তোলন করা হয়। এসময় ৩২ মিটার নয়, সাড়ে ১০ মিটারের ৩টির পরিবর্তে একটি রিং বাঁধা লোহার খাঁচা পান। এতে জনগণ উত্তেজিত হয়ে ফাইলিংয়ের কাজ বন্ধ করে দেন।
খবর পেয়ে রোববার (১৮ এপ্রিল) নবীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী সাব্বির আহমেদ, ব্রিজের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী শিমুল বড়ুয়া, সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান, কার্যসহকারী সিরাজ মোল্লা সরেজমিনে ব্রিজ নির্মাণ কাজে পরিদর্শনে আসেন। এ সময় তারা এলাকাবাসীর সাথে মতবিনিময় করেন।
সভায় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে কয়েকটি দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- সঠিক মাপে পাইলিংকৃত পিলার স্থাপন, নিম্নমানের পাথর, বালু না লাগানো, ব্রিজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ডাইভেশনটি জনগণের চলাচলের জন্য নিশ্চিত করা, ব্রিজ নির্মাণ কাজের প্রদর্শনকৃত সাইন বোর্ড টানানো।
এ সময় প্রকৌশলী নির্মাণ কাজে আর কোন অনিয়ম হবে না বলে জনগণকে আশ্বস্ত করলে ব্রিজের নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু হয়। এছাড়া এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ব্রিজ নির্মাণে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ফখরুল ইসলাম ও বর্তমান ইউপি সদস্য সাফু আলম বলেন, কাজে অনিয়ম দেখে এলাকাবাসীসহ আমরা কাজ বন্ধ রাখতে বলেছিলাম। উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে আমাদের মতবিনিময় সভা হয়েছে। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন কাজে আর অনিয়ম হবে না।
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাব্বির আহমদ বলেন, ব্রিজের পাইলিংয়ের ৩২ মিটার (১০৫) ফুট পাইলিং এর পরিবর্তে সাড়ে ১০ মিটার পিলার স্থাপন করার কোন সুযোগ নেই। ব্রিজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার না করতে ঠিকাদারকে বলে দিয়েছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here