খবর৭১ঃ
ধরিত্রীর তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের দেশগুলো যে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল তা সফল হতে চলেছে। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় তৈরি করা ‘প্যারিস জলবায়ু চুক্তি’র লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হতে চলেছে বলে একটি শীর্ষস্থানীয় জলবায়ু বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে।
‘ক্লাইমেট অ্যাকশন ট্রেকার’ নামক ঐ প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, চলতি শতকের শেষে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ১ সেলসিয়াসে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। দূষণের তালিকায় শীর্ষে থাকা চীনসহ অন্যান্য দেশ যেভাবে বিষয়টির ওপর কাজ করছে তাতে তাপমাত্রা প্রতিনিয়ত কমে আসবে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইতিমধ্যে কার্বন নিঃসারণ কমিয়ে আনতে যে ঘোষণা দিয়েছেন তাতে সুফল মিলবে বলে মনে করছে ক্লাইমেট ট্রেকার গ্রুপ। খবর বিবিসির।
খবরে বলা হয়, প্যারিস জলবায়ু চুক্তির আগে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার তিন শতাংশে কমিয়ে আনার পরিকল্পনা ছিল। বিশ্লেষকরা তখন বলেছিলেন যে, এ হারে তাপমাত্রা কমলে পৃথিবী বাসযোগ্য থাকবে না। এরপর তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার কমিয়ে আনতে দেশগুলো কাজ করতে থাকে। এরপর প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বিশ্ববাসীকে আশার আলো দেখায়। এছাড়া গত এক দশক ধরে ক্লাইমেট অ্যাকশন ট্রেকার গ্রুপ দেশগুলোর কার্বন নিঃসারণ কমিয়ে আনার পরিকল্পনার ওপর গবেষণা চালায়। ২০০৯ সালের কোপেনহেগেন সম্মেলন ব্যর্থ হওয়ার পর অ্যাকাশন গ্রুপ বলেছিল যে, পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার গড়ে সাতে তিন শতাংশ হারে বাড়বে। কিন্তু ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তি হওয়ার পর দেশগুলোর চিন্তা দ্রুত বদলাতে থাকে। অনেক দেশ জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার থেকে সরে আসতে থাকে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায় যে, ২১০০ সালে বিশ্বের তাপমাত্রা গড়ে ২ দশমিক ৭ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে যা প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা থেকে বেশি। উল্লেখ্য, প্যারিস চুক্তিতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি গড়ে ২ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
খবরে বলা হয়, গত তিন মাসে পরিস্থিতি দ্রুত বদলাতে থাকে। সেপ্টেম্বরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং ২০৬০ সালের মধ্যে তার দেশের দূষণের মাত্রা শূন্য হারে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেন। কিন্তু ২০৩০ সাল পর্যন্ত দূষণ অব্যাহত থাকবে বলে দেশটির পক্ষে জানানো হয়। জাপান এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ২০৫০ সালের মধ্যে দূষণ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে জো বাইডেন জয়ী হওয়ার পর পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে বলে আভাস মিলছে। যদিও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।