খবর৭১ঃ
মিরসরাই প্রতিনিধিঃ যাত্রী হয়রানি, ভাড়া নৈরাজ্য, নিম্ন মানের সেবা, হাতাহাতি, তর্ক, বাকবিতন্ডা, সংঘর্ষ, অশালীন ব্যবহার, ভাড়া তালিকা না থাকা, বাড়তি ভাড়া আদায়, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালনা, লক্কর ঝক্কর গাড়ি, ফিটনেস বিহীন গাড়ি, অদক্ষ চালক, লাইসেন্স বিহীন চালক, হেলপার দিয়ে গাড়ি চালনা, ট্রাফিক রুল না মানা, হাইড্রলিক হর্ণ এর ব্যবহার, চাঁদাবাজি, মান্থলি বা টোকেন বাণিজ্য এসব বিষয় যেন পরিবহন সেক্টর এর অতি পরিচিত ও সাধারণ বিষয়।
জনবহুল এবং উন্নত যোগাযোগ ভিত্তিক মিরসরাইতেও এর ব্যতিক্রম নয়। ভাড়ায় চালিত যাত্রী পরিবহন যেমন- বাস, হিউম্যান হলার, সিএনজি অটোরিকশা, ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা এসব পরিবহনে বাড়তি ভাড়া নেওয়া, এক রুটের সাথে অন্য রুটের ভাড়ার গরমিল, ভাড়ার তালিকা না থাকা, শৃঙ্খলা না মানা, স্বাস্থ্য বিধি না মানা, মনগড়া ভাড়া নেওয়া, দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়ার পরও বেশি যাত্রী নেওয়া, যাত্রীদের সাথে অশালীন আচরণ করা সহ অনেক অভিযোগ রয়েছে এসব পরিবহনের চালক হেলপার এর বিরুদ্ধে। মিরসরাইয়ের বেশ কয়েকটি রুটে সরেজমিন পরিদর্শনে এমন চিত্র উঠে আসে। জোরারগঞ্জ টু বারইয়াহাট রুটে সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া প্রথমে ৮ টাকা, পরবর্তীতে করেরহাট টু বারইয়াহাট রুটের সাথে পাল্লা দিয়ে ৮ টাকা থেকে ১৩ টাকা সেখানে ১৫ টাকা নেওয়া হতো, পরবর্তীতে বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরবর্তী সীমিত পরিসরে যানবাহন চালু হলে ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা নির্ধারণ হয়।
অথচ মিরসরাইয়ের বারইয়াহাট টু করেরহাট রুটে ১৫ টাকা পূর্বের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এর কারণ সিএনজি অটোরিকশাতে কোনভাবেই সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব নয় এবং মানা হচ্ছে না। জোরারগঞ্জ টু বারইয়াহাট রুটে ৩ জন যাত্রী নেওয়ার কথা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে সেটা মানা হচ্ছে না। অপরদিকে জোরারগঞ্জ টু আবুরহাট রুটে ২০ টাকার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা এবং টেকেরহাট পর্যন্ত ৪০ টাকার ভাড়া ৭০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। করেরহাট টু নয়টিলা মাজার, পশ্চিম জোয়ার, শুভপুর পর্যন্ত পূর্বের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। ঠাকুরদীঘি টু ঝুলনপোল রুটে নিয়মিত যাতায়াত কারী যাত্রী শামীম অভিযোগ করে বলেন, উক্ত রুটে অটোরিকশা ভাড়া জনপ্রতি ৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে যেটা কয়েকটি রুটে চলাচল করা সিএনজি ভাড়ার সাথে তুলনা করলে বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
মিরসরাইয়ের সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়ন (২৪১১) এর সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল হক রিপন বলেন, যাত্রী, শ্রমিক নেতা, উপদেষ্টা, রাজনৈতিক নেতাসহ সকলের সাথে আলাপ ও সমঝোতা করে উক্ত সংগঠন নিয়ন্ত্রিত রুট সমূহে (৫ জন যাত্রী নিয়ে) বাড়তি ভাড়া না নিয়ে আগের নিয়মে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে কোন চালকের বিরুদ্ধে যদি অনিয়ম এর অভিযোগ আসে তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে বারইয়াহাট টু চট্টগ্রাম রুটে চলাচল কারী উত্তরা বাসের বিরুদ্ধে অনিয়ম অভিযোগ এর শেষ নেই। বারইয়াহাট টু বড় দারোগা হাট রুটে চলাচল কারী হিউম্যান হলার এর চালক-হেলপারদের বিরুদ্ধেও দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়ার পরও বেশি যাত্রী নেওয়া, মূল্য তালিকা না টাঙানো ও অহেতুক বাড়াবাড়ির অভিযোগ রয়েছে। হিউম্যান হলার এর যাত্রী নুরুল আজিম বলেন, গাড়ি ভাড়া দ্বিগুণ দিলেও লোক কিন্তু বেশি নিচ্ছে এবং কোন মূল্য তালিকা নেই, তাছাড়াও যাত্রীদের সাথে অহেতুক বাড়াবাড়ি করে। যেখানে ৩ জন নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হচ্ছে ৫ জন।
এ ব্যাপারে হিউম্যান হলার চালক নজরুল এর সাথে কথা বললে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বারইয়াহাট টু বড়দারোগা হাট হিউম্যান হলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাসুদ বলেন, আমাদের নির্দেশনা হলো পিছনে ৩ জন করে ৬ জন এবং সামনে ১ জন যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করবে। সেক্ষেত্রে যদি কেউ অনিয়ম করে অথবা বাড়তি যাত্রী বা বাড়তি ভাড়া নিয়েছে এমন অভিযোগ পাওয়া যায় তবে সে চালক – হেলপার এর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ ফিরোজ হোসেনকে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।