মনপুরার মেঘনায় অবৈধ জালে অবাধে মৎস্য শিকার

0
268

ভোলা প্রতিনিধিঃ
ভোলার মনপুরায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনায় অবৈধ বেহুন্দী, চর ঘেরা জাল দিয়ে মৎস্য শিকার করছে অসাধু জেলেরা। একশ্রেণীর অসাধু জেলেরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মৎস্য শিকার করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেঘনা থেকে দ্রুত অবৈধ বেহুন্দি ও চরঘেরা জাল দিয়ে মাছ ধরা বন্ধ করার জোর দাবী জানিয়েছেন ইলিশ জেলেরা।

মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, ভোলার মদনপুর,চর ইলিশা থেকে মনপুরার চরপিয়াল পর্যন্ত মেঘনা নদীর শাহবাজপুর শাখা নদীর ৯০ কিলোমিটার এলাকায় ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস সকল প্রকার মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা জারী করে মৎস্য বিভাগ।

নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে একশ্রেণীর দালাল অসাধু জেলেদের কাছ থেকে প্রশাসনকে ম্যানেজের নামে টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খোদ মৎস্য অফিসের এক কর্মকর্তা ( নাম প্রকাশে অনীহা) এই প্রতিনিধির কাছে স্বীকার করেন ওই দালাল চক্রের কথা। তারাও মৌখিক অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান। তারা এই ব্যাপারটি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে জানিয়েছেন।

এছাড়াও বেহুন্দি জালের জেলে রহিম মাঝি জানান, প্রশাসনকে ম্যানেজ করতে সে ১৫ দিন অন্তর ৫শত টাকা করে দিয়েছেন বলে জানান। এভাবে প্রত্যেক বেহুন্দি জালের জেলে সপ্তাহে টাকা দেয় বলেও জানান তিনি। অভিযানের এক মাঝি টাকা কালেকশন করে বলে জানান, তিনি এখনো পূর্বপাশের মেঘনায় বেহুন্দি জাল ফেলে মাছ ধরেন বলে স্বীকার করেছেন।

সরেজমিনে, রবিবার মনপুরার দাসেরহাট, লতাখালী, নাইবেরহাট, জংলার খাল, ভূইয়ারহাট, জনতা, মাঝেরকাঠি, সূর্যমুখী এলকায় মেঘনা পাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, অবৈধ বেহুন্দি জালে অবাধে মাছ শিকার করছে জেলেরা। বেহুন্দি জালের ড্রাম সারিবদ্ধভাবে ভাসছে মেঘনায়। মেঘনার বিস্তৃর্ন জলরাশি এলাকায় শুধু বেহুন্দি আর বেহুন্দি জাল।

মনপুরা মৎস্য সমিতির সভাপতি সুলতান মাঝি ও মৎস্য জীবি সমিতির সভাপতি আবদুর রব মাঝি জানান, বেহুন্দি ও চর ঘেরা জালে সকল প্রকারের ছোট ছোট মাছের পোনাসহ জীববৈচিত্র্য নিধন করা হচ্ছে। এই সমস্ত জাল দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করতে না পারলে ইলিশ উৎপাদন কমে যাবে। তাই তারা এই সমস্ত জাল দিয়ে মাছ ধরা বন্ধ করার জোর দাবী জানান।

চাঁদপুর মৎস্য গবেষনা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ আনিসুর রহমান মুঠোফোনে জানান, বেহুন্দি জাল ও চর ঘেরা জাল মৎস্য সম্পদ সহ জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরুপ। এই সমস্ত জাল মেঘনা থেকে অপসারন করতে পারলে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ জীব বৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হবে।

এই ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবদুল গাফফার জানান, মনপুরার মেঘনায় দুই মাস সকল প্রকার মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বেহুন্দি জালে সারাবছর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে অভিযানের মাধ্যমে দ্রুত মেঘনা থেকে অবৈধ জালে মাছ ধরা বন্ধ করা হবে। তবে টাকা আদায়ের ব্যাপারে কারো অভিযোগ থাকলে লিখিত জানাতে বলেছেন তিনি।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির আহমেদ জানান, জেলা থেকে মেঘনায় অভিযানের ব্যাপারে একজন ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়া হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার থেকে মেঘনায় পুরোদমে অভিযান চলবে।

খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here