চৌগাছা স্বর্ণপট্টিকে আলোকিত করে রেখেছেন চার ব্যবসায়ী বন্ধু সুখ শান্তি আনন্দ আর ফুর্তি

0
965

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর)ঃযশোরের চৌগাছা বাজারের সব থেকে সুনামধন্য অভিজাত এলাকা হচ্ছে স্বর্ণপট্টি। এই স্বর্ণপট্টির চার ব্যবসায়ী বন্ধু যুগযুগ ধরে অত্যান্ত সাফল্যের সাথে ব্যবসা করে নিজেদেরকে মেলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। ব্যবসায়ী দিক দিয়ে গোটা উপজেলা জুড়ে তাদের যেমন রয়েছে সুনাম, সংসার জীবনেও তারা প্রত্যেকে যথেষ্ঠ সুখি মানুষ। তেমনি ভাবে ওই চার বন্ধুর নামের সাথেও রয়েছে অভূতপূর্ব আনন্দঘন মিল মহব্বতের সমোহার। তাই অনেকে হাসির ছলে বলেন যদি সুখ শান্তি আনন্দ আর ফুর্তি পেতে চান তাহলে চলে আসুন চৌগাছার অভিজাত ব্যবসায়ী এলাকা স্বর্ণপট্টিতে।
সূত্র জানায়, যশোরের চৌগাছা একটি সীমান্তবর্তী উপজেলা। ভারতের চব্বিশ পরগোনা জেলার গা ঘেষে চৌগাছা উপজেলা বিস্তৃত। প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের বসবাস এ জনপদে। ব্যবসা, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ সব দিক দিয়ে এক অপরুপ পরিবেশ বিরাজমান এই উপজেলাতে। মহান স্বাধীনতার প্রবেশদ্বার হিসাবে খ্যাত চৌগাছা এক সময় ছোট্ট একটি বাজার নিয়ে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এই উপজেলা বৃহত্তর যশোর তো বটেই দেশ ও দেশের বাইরেও অভাবনীয় সুনাম কুড়াতে সক্ষম হয়েছেন। ব্যবসা বন্ধব উপজেলা হিসাবে খ্যাত চৌগাছায় এখন হাত বাড়ালেই সব কিছুই পাওয় যায়। ছোট্ট শহর আজ বৃহৎ আকার ধারন করেছে। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে গার্মেন্টস শিল্পের মত বড়বড় শিল্প কলকারখানা। চৌগাছা বাজারের যে সব অভিজাত এলাকা আছে তার মধ্যে অন্যতম একটি ব্যবসায়ী অভিজাত এলাকা হচ্ছে স্বর্ণপট্টি। বাজারের প্রান কেন্দ্রে অবস্থিত এই ব্যবসায়ী এলাকাকে আলোকিত করে রেখেছেন চার ব্যবসায়ী বন্ধু। তারা হলেন শ্রী সুখদেব সেন (৬৫) ওরফে সুখ, শ্রী শান্তি সরকার (৫৫) ওরফে শান্তি, শ্রী আনন্দ কুমার রাহা (৫৯) ওরফে আনন্দ আর মোঃ ওলিয়ার রহমান (৬২) ওরফে ফুর্তি। এই চার বন্ধু সুখ শান্তি আনন্দ আর ফুর্তি যুগযুগ ধরে স্বর্ণপট্টিতে সুনামের সাথে ব্যবসা করে অভিজাত এলাকাকে আলোকিত করে রেখেছেন। তাদের একে অপারের নামের সাথে যে মিল খুজে পাওয়া যায় তা নিঃসন্দেহে অনেক মানুষের কিছুটা হলেও মানষিক তৃপ্তি এনে দেয়। গতকাল স্বর্ণপট্টির এই চার ব্যবসায়ী বন্ধুর সাথে কথা হলে জানা যায় তাদের নামের বিশেষন নিয়ে তারও কতটা না আনন্দিত। ব্যবসায়ী সুখ দেবসেন ওরফে সুখ চৌগাছা পৌরসভার কালিতলা মহল্লার মৃত নারায়ন চন্দ্র সেনের ছেলে। তিনি এই পট্টিতে সান ব্যবসা করেন। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া এই ব্যবসা তিনি নিজে করছেন। তার সন্তান ও ছোট ভাই স্বর্ণ ও কসমেটিক্্েরর ব্যবসা করছেন একই পট্টিতে। ব্যবসায়ী জীবনে তিনি যেমন একজন সফল ব্যবসায় তেমনি সংসার জীবনেও যথেষ্ঠ সুখি। দুই ছেলে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করেও কোন চাকুরী না করে ব্যবসা করছেন। সুখ দেব সেন বলেন, সৃষ্টিকর্তা যথেষ্ট ভাল রেখেছেন, এভাবেই বাকি জীবনটা শেষ করতে চাই। সুখের মত শান্তিও একজন সফল ব্যবসায়ী। দীর্ঘ প্রায় তিন যুগ ধরে তিনি জুয়েলারি ব্যবসা করে আসছেন। ব্যবসায়ী জীবনে তার কোন কালিমা নেই। কথা হলে শান্তি সরকার ওরফে শান্তি বলেন, বাবা মায়ের রাখা নাম এটি। আমার নাম নিয়ে বেশ গর্ববোধ করি আমি। চৌগাছা বাজারে যখন হাতে গোনা কয়েকটি দোকান ছিল তার মধ্যেও আমি ছিলাম, এখনও আছি। সততার সাথে ব্যবসা করি। এই ব্যবসা করে আমি ও আমার পরিবার যথেষ্ঠ সুখি। চার ব্যবসায়ী বন্ধুর অপরজন হলেন আনন্দ কুমার রাহা ওরফে আনন্দ। চৌগাছা নিরিবিলিপাড়ার বাসিন্দা তিনি। অত্যান্ত ক্লিন ইমেজের লোক আনন্দ সরকার ব্যবসা জীবনে মনে হয় সবার চেয়ে সুখি মানুষই ছিলেন। কিন্তু এক সড়ক দূর্ঘটনায় তার একমাত্র ছেলের অকাল মৃত্যুতে তিনি অনেকটাই নিঃসঙ্গ হয়ে গেছেন। আনন্দ বলেন, ব্যবসা আমার ধর্ম বলে আমি করি। সকলের অর্শিবাদ নিয়ে ব্যবসা করি। এই ব্যবসায় আমি আমার পরিবার পরিজন নিয়ে বেশ সুখেই আছি। সততার সাথে ব্যবসা করে বাকি জীবনটা শেষ করতে চান তিনি। অপর বন্ধু ওলিয়ার রহমান ফুর্তি। চৌগাছা বাকপাড়া মহল্লার মোহাম্মদ আলী বিশ্বাসের ছেলে তিনি। প্রায় ৪০ বছর ধরে স্বর্ণপট্টিতে জুয়েলারী ব্যবসা করে আসছেন তিনি। তিনিও এই ব্যবসায় এজজন সফল ব্যবসায়ী বলে মনে করেন। সুখ-শান্তি আর আনন্দ-ফুর্তি চৌগাছার স্বর্নপট্টিকে যে ভাবে আলোকিত করে রেখেছেন তা সকল ব্যবসায়দের জন্য দৃষ্টান্ত বলে মনে করছেন অনেকে।

খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here