আবু সাইদ, পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর পত্নীতলায় চলছে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক ইট ভাটা তৈরীর হিড়িক। অন্যান্য ব্যবসার তুলনায় ইট ভাটার ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় ইট ভাটা তৈরীতে মানুষ যেন প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। বিধিমালা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি ও পরিবেশ দপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হলেও অনুমোদন ছাড়াই ব্যবসায়ীরা ইট ভাটা নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। পত্নীতলা য় বিভিন্ন স্থানে নিয়ম বর্হিভূত ভাবে ইট ভাটা নির্মাণ করা হলেও অদৃশ্য কারণে প্রশাসন যেন নির্বিকার। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কিভাবে পরিবেশ বিপর্যয়কারী ইট ভাটা নির্মাণ হচ্ছে সেটাই এখন সচেতন মানুষের জিজ্ঞাসা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পত্নীতলায় বর্তমানে ১৮ টি ইটভাটা চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ১টির বৈধ অনুমতি আছে তাও মেয়াদ উত্তীর্ণ। অবশিষ্ট ১৭টি ইট ভাটারই নেই সরকারি অনুমোদন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। এরপর বহাল তবিয়তে চলছে অনুমোদনবিহীন এ সকল অবৈধ ইটভাটা। ইট ভাটার প্রভাবে এর আশে পাশের আবাদি জমি ও বাগানের উপর মারাত্বক প্রভাব পড়ছে। জমির টপ সয়েল বিক্রয় হওয়ার কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে জমির উৎপাদন ক্ষমতা। ইট ভাটার বিষাক্ত গ্যাস ও তাপের কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আশেপাশের বাগান ও শস্য। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থরা স্থানীয় প্রশাসনের নিকট একাধিকবার অভিযোগ করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই ১শত বিঘা কৃষি জমিতে চকদূর্গা আয়াম মাঠে এফবিএফ নামে ১টি ও পত্নীতলা মাঠে বিএম ব্রিকস নামে ১টি নতুন ইটভাটার নির্মাণ কাজ চলছে। এ বিষয়ে উক্ত গ্রামের আনারুল ইসলাম চৌধুরী ও মনসুর ইসলাম চৌধুরীর সাথে কথা বললে তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, পুরাতন ইটভাটার কারণে তাঁরা প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে আসছেন। এর মধ্যে নতুন ২টি ইটভাটা চালু হওয়ায় এলাকাবাসী শংসয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। ইটভাটার প্রভাবের কারণে তাঁরা আবাদি জমিতে ফসল ফলাতে পারবেন কিনা তা নিয়ে খুবই চিন্তিত।
এ বিষয়ে এফবিএফ ইট ভাটার স্বত্তাধিকারী পত্নীতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা শাহ চৌধুরীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ইট ভাটা তৈরীর পর লাইসেন্স করা হবে এবং পরিবেশের ছাড়পত্র নেওয়া হবে। অন্য ভাটাগুলো লাইসেন্স ছাড়া যেভাবে চলছে তিনিও সেভাবেই চালাবেন বলে মতদেন। অন্যদিকে বিএম ব্রিকস এর স্বত্তাধিকারী ইঞ্জিনিয়ার আকতারুজ্জামান এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, লাইসেন্সের জন্য ইতিমধ্যে আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শরিফুল ইসলামের মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, কৃষি জমি নষ্ট করে ইটভাটা তৈরীর কোন সুযোগ নেই। ইটভাটার মালিকদের যদি বৈধ কাগজপত্র না থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খবর ৭১/ই: