খবর৭১ঃ ঢালাওভাবে অভিবাসীদের আটক করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারী কিংবা বেশ কয়েক বছর ধরে যারা বসবাস করছেন তাদের।
কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়াই বাবা-মাকে আটক করা হচ্ছে। ছেলেমেয়ে এমনকি শিশু হলেও তাদের আটক করা হচ্ছে। এরপর বাবা-মাকে এক বন্দিশিবিরে, ছেলেমেয়েকে আরেক জায়গায় রাখা হচ্ছে।
এভাবে কয়েক লাখ বাবা-মার সঙ্গে প্রায় ১৩ হাজার শিশু আটক করা হয়েছে। এদের জন্য জায়গা সংকুলান করতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। তাই রাতের আঁধারে লোকচক্ষুর আড়ালে শিশুদের মরুভূমির মধ্যে ফেলা তাঁবুর বন্দিশিবিরে নেয়া হচ্ছে।
নিউইয়র্ক টাইমস রোববার জানিয়েছে, দীর্ঘ রাস্তা পাড়ি দিতে তল্পিতল্পা ও কিছু শুকনো খাবার দিয়ে এক রাজ্য থেকে বাসে করে আরেক রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন শত শত অভিবাসী শিশুকে কানসাস, নিউইয়র্ক ও ওয়েস্ট টেক্সাসের নতুন বন্দিশিবিরে নেয়া হয়েছে। টেক্সাসের টর্নিল্লোর তাঁবু দিয়ে তৈরি বন্দিশিবিরগুলোতে দেখা গেছে, একেকটা তাঁবুতে ২০ জনকে রাখা হয়েছে।
সেখানে বাংকারের মতো ছোট জায়গায় গুটিশুটি মেরে ঘুমাতে হয়। এখানে লেখাপড়ার কোনো সুযোগ নেই। আইনি সুবিধাও তারা পায় না।
মার্কিন হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিস ডিপার্টমেন্টের মতে, টেক্সাসের ওই ক্যাম্প অস্থায়ী ভিত্তিতে নির্মাণ করা হয়েছে এবং যতক্ষণ প্রয়োজন হবে ততক্ষণ ব্যবহার করা হবে।
এ পর্যন্ত এক হাজার ৬০০ শিশুকে টেক্সাসের ক্যাম্পে নেয়া হয়েছে। বাকিদেরও সেখানে নেয়া হবে। মার্কিন আদালতের রায় অনুযায়ী, ২০ দিনের বেশি কোনো শিশুকে আটকে রাখার এখতিয়ার নেই অভিবাসন কর্তৃপক্ষের। কিন্তু এই নির্দিষ্ট সময়ের দ্বিগুণ ও তিনগুণ সময়ও তাদের আটকে রাখা হচ্ছে।
অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের থাকা-খাওয়া, আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেয়ার আড়ালে শত কোটি ডলারের রমরমা ব্যবসা জমে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রে।
অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো বহু আগে থেকেই এ কাজে জড়িয়ে রয়েছে। তবে সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর নীতি গ্রহণের পর রীতিমতো ফুলে ফেঁপে উঠেছে এ ব্যবসা।
‘সাউথওয়েস্ট কি’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র ও আটক কেন্দ্রে থাকা অভিবাসী শিশুদের বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত সরকারের কাছ থেকে ৯৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারের কাজ পেয়েছে। অভিবাসীদের আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলার নামে গজিয়ে উঠেছে অন্তত ডজনখানেক প্রতিষ্ঠান।
খবর৭১/এসঃ