ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশের সামনেই বিএনপি নেতাদের নিয়ে আ’লীগ নেতার হামলা!

0
282

খবর৭১:
পহরডাঙ্গা বাজারের একটি হোটেল ভাংচুরের দৃশ্য
নড়াইলের নড়াগাতীতে এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের উপস্থিতিতে বিএনপি নেতাদের নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার সমর্থকরা।

অভিযুক্ত ওই নেতার নাম লাবু শিকদার। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ১৫ নেতাকমী আহত হয়েছেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কার্যালয়, ২টি দোকান, ১টি হোটেল ও কয়েকটি ঘরবাড়ি ভাঙচুরও করা হয়েছে।

রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গরুর হাট ইজারা নেয়াকে কেন্দ্র করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কালিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী ও পুলিশের উপস্থিতিতে নড়াগাতি থানার পহরডাঙ্গা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় উভয় গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলায় আহতদেরকে গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, পহরডাঙ্গা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক বিএনপি নেতা ও নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তির সমর্থক আওয়ামী লীগ নেতা লাবু শিকদারের সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মফিজুর রহমান শেখের পূর্ব দ্বন্দ্ব চলে আসছে।

সম্প্রতি পহরডাঙ্গা গরুর হাট ইজারা নেয় লাবু শিকদারের লোকজন। এ নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে পহরডাঙ্গা বাজারে রোববার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী ও নড়াগাতি থানা পুলিশ পৌঁছায়।

প্রশাসনের উপস্থিতিতে লাবু শিকদার গ্রুপের পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নয়ন শেখ, ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আরিফ শিকদার ও ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল শরীফ লাঠিসোঠা এবং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষ মফিজুর রহমান শেখ গ্রুপের লোকজনের ওপর হামলা চালান।

এতে পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও একই গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল শেখ (২৮), খোকা শিকদার (৬০), বরকত শিকদার (৩০), পলাশ শিকদার (৩০), সরসপুর গ্রামের দৌলত খান (৭০), শওকত মল্লিকসহ (৫৫) অন্তত ১৫ জনের মতো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আহত হন।

এ সময় হামলাকারীরা পহরডাঙ্গা বাজারে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ কার্যালয়, পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসমত শেখের মালিকানাধীন পহরডাঙ্গা বাজারের পোল্ট্রি দোকান ও একটি হোটেল, এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা মফিজুর রহমান শেখ, তার বড় ভাই হাফিজুর শেখ, হাসমত শেখের বাড়ি, আকাশ সিকদার, নিয়ামত সিকদার, শরিফুল শেখ ও হাসিবুর রহমানের বাড়িঘর ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ প্রসঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কালিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, ‘উভয় গ্রুপের উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা দেখেছি। এতে দু’জনকে আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উভয়পক্ষকে মীমাংসার জন্য আগামীকাল (সোমবার) ইউএনও মহোদয়ের দফতরে জরুরি তলব করা হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে হামলার শিকার আওয়ামী লীগ নেতা হাফিজুর শেখ বলেন, ‘রোববার দুপুরে গরুর হাটে ঢুকতে গেলে প্রতিপক্ষ লাবু শিকদার গ্রুপের লোকজন ধারালো অস্ত্রসহ ঢাল-সড়কি নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে ১৫ জন আহত হয়েছেন। পুলিশের উপস্থিতিতে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে।’

অপর গ্রুপের অন্যতম নেতা সেলিম সিকদার আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ ভাঙচুরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘মাফিজুর শেখের লোকজনই গরুর হাট দখলের চেষ্টা করে আমাদের ওপর হামলা চালায়।’

এ ব্যাপারে নড়াগাতি থানার উপপরিদর্শক নজরুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, ‘গরুর হাট ইজারাকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দু’পক্ষের মধ্যে রোববার কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here