খালেদা জিয়াকে আওয়ামী প্রক্রিয়ায় নাজেহাল করা হচ্ছে : রিজভী

0
322

খবর ৭১:
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে আইনী প্রক্রিয়ায় নয় আওয়ামী প্রক্রিয়ায় নাজেহাল করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া যেদিন হাজিরা দিবেন তারপরের দিন জামিন মেলে এটা ভাবা যায়? কিন্তু একটা মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে ছোট করা হচ্ছে। আইনী প্রক্রিয়ায় নয় আওয়ামী প্রক্রিয়ায় তাকে নাজেহাল করা হচ্ছে।  বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস কাবের মিলনায়তনে তিনি এসব কথা বলেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটস প্রতিনিধি নির্বাচন-২০১৭ উপলে জাতীয়তাবাদী প্যানেল পরিচিতির আয়োজন করে সাবেক জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ফোরাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
রিজভী বলেন, একটা মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে ছোট করা হচ্ছে। আইনী প্রক্রিয়ায় নয় আওয়ামী প্রক্রিয়ায় তাকে নাজেহাল করা হচ্ছে সমাজ রাষ্ট্রে কোথাও গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। কতৃত্ববাদী শাসনের একটাই মাত্র দল থাকবে, সেটা কে? ছাত্রলীগ! আমরা চাই কার্যকরভাবে একটা ফাংশনাল রাষ্ট্র আর আওয়ামী লীগ চায় আওয়ামী রঙ্গের রাষ্ট্র। এক দুঃসহ পরিস্থিতির মধ্যে দেশ আছে বলেই আজকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এই  অবস্থা।
শিামন্ত্রী নিজের ‘বক্তব্য পাল্টিয়ে’ দুর্নীতির দায় থেকে রেহাই পাবেন না বলে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, এখন বোধহয় তার ওপরে চরম ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এখন কেনো বলেছেন, কেনো বলেছেন. । আজকে আবার তিনি (শিামন্ত্রী) বলে বসলেন যে, না। এটা আমি ইনহেরিট করেছি, এটা আসলে বিএনপি জোট সরকার আমলের বোঝা। গত পরশুদিন তিনি এই কথা (বিএনপি জোট আমল) বলেননি। গতকাল থেকে তার উপরে কালবৈশাখী ঝড়ে চলছে। এই ঝড়ে একেবারে ন্যুয্য হয়ে এই কথা বলেছেন নিজে বাঁচার জন্য, মন্ত্রীত্ব রা করার জন্য। আমরা বলতে চাই, এতে কোনো লাভ হবে না শিামন্ত্রী।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, আপনারা শিাকে পণ্যে পরিণত করেছেন, শিাকে এতো অনৈতিক জায়গায় নিয়ে গেছেন কাস ওয়ান থেকে ইন্টার মিডিয়েট কাস পর্যন্ত। শুধুমাত্র প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নকলের মহোৎসব তৈরি করেছেন। এর দায় থেকে আপনি নিস্কৃতি পেতে পারেন না, নিস্কৃতি পাবেন না।আজকে মনের অজান্তে বলে আপনি(শিামন্ত্রী) বলে দিয়েছেন কারা চোয্র্ বৃত্তি করেছে। এই চুরি দায় আপনাকে বহনতেই হবে।
‘মন্ত্রীরা চোর, আমিও চোর’- সম্প্রতি শিামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের বক্তব্যের প্রসঙ্গে টেনে রিজভী বলেন, ‘‘এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শিামন্ত্রী হিসেবে তিনি যে অনৈতিকতার মন্যুমেন্টাল একটা জিনিস স্থাপন করলেন শিাঙ্গনের জন্য, শিার্থীদের জন্য, শিকদের জন্য, তা নজিরবিহীন।
বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ ও শিা প্রতিষ্ঠানের মতানসীন সমর্থিত ‘শিক ও ছাত্র’ সংগঠনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। সকল মূল্যবোধ, সংস্কৃতি সব কিছু ধ্বংস করে দিয়েছে এই একক কর্তৃত্ববাদী এই ভোটারবিহীন সরকার। এর বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হতে হবে।
দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রসঙ্গ টেনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রতিদিন তাকে(বেগম জিয়া) আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। আজকেও হাজিরা দিয়েছেন, কালকে হাজিরা পর্যন্ত তার জামিন আছে। এটা কী ভাবা যায়? একটা মিথ্যা, বানোয়াট মিথ্যা মামলা যার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। শুধুমাত্র তাকে(খালেদা জিয়া) হয়রানি করার জন্য শেখ হাসিনা আইনি প্রক্রিয়ায় নয়, এখন আওয়ামী প্রক্রিয়ায় হয়রানি করতে দেশনেত্রীকে আদালতে হাজির করাচ্ছে।দেশবাসী জানে, শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত ক্রোধ ও প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে যে টানা হেঁচড়া শুরু করেছেন। অন্য কিছু না।
জাতীয়তাবাদী প্যানেলকে বিজয়ী করার জন্য রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান রিজভী।
সিনেটের প্রতিনিধি নির্বাচনে সিনেট সদস্য পদে এই প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ড. মো. শামছুল আলম, আশরাফ উদ্দিন খান, আজগর হোসেন, শাহানাজ পারভীন, কেএম রাশেদুল হাসান, কামরুল আহসান, আলমগীর সরকার, রুহুল আমিন কুতুব উদ্দিন আহমেদ, জামাল উদ্দিন, ইলিম মোহাম্মদ নাজমুল হোসেন, সাবির হোসাইন, নুরুল ইসলাম, তৌফিকুল ইসলাম, শামীমা সুলতানা, সাবিনা ইয়াসমিন, মুহম্মদ নজরুল ইসলাম, ফরিদ মিয়া আরমান, সাহীদুল ইসলাম জুয়েল, মো. রবিউল ইসলাম, নাজমুল হাসান, জিয়াউর রহমান, রবিউল ইসলাম, শিহাব উদ্দিন খান ও আবদুল্লাহ আল মামুন।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর জাহাঙ্গীরনগর সিনেট রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট গ্রহন হবে। সর্বশেষ সিনেট গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন হয়েছিলো ১৯৯৮ সালে।
এবার স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী জাতীয়বাদী দল সমর্থিত প্যানেল ছাড়া বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও প্রগতিশীল গ্র্যাজুয়েট মঞ্চ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল জোট প্যানেল নামে মতাসীন দলের সমর্থিত দুইটি প্যানেল রয়েছে।
সিনেট রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক মাসুদ হাসান তালুকদার লিটনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আশরাফুল আলম খান জুয়েলের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক মজিবুর রহমান, অধ্যাপক শরিফ উদ্দিন, শামসুল কবির খান, দেলোয়ার হোসেন, এম এ আজিজ, আবদুল হামিদ, আলমগীর হোসেন, আসাদ উল্লাহ আসাদ, আব্দুর রহমান বাবুল, এইচ এস রুস্তম, প্রার্থীদের মধ্যে সৈয়দ আবদাল আহমেদ, আশরাফ উদ্দিন খান, অধ্যাপক কামরুল আহসান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here