খবর৭১ঃ
সারাদেশে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারী তাপ প্রবাহ। এতে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। রমজান মাস চলায় মানুষ রোজা রাখছেন। দীর্ঘ সময় পানিহীন থাকা অবস্থায় প্রচুর ঘাম হলে শরীরে পানি শূন্যতা তৈরি হতে পারে। হতে পারে হিট স্ট্রোক। এ অবস্থায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট বিভাগসহ নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গত ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া তাপ প্রবাহ আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানান আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এসময়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
এদিকে ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে কেনাকাটার প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন সব বয়সের মানুষ। তীব্র গরমের মধ্যে রোজাদার ব্যক্তিরা রোজা রেখে বাইরে যাচ্ছেন। বেশি ঘাম হলে তাদের শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। এ ব্যাপারে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, এই তাপপ্রবাহের ফলে সৃষ্ট তীব্র গরমে মানুষের শরীর থেকে ঘাম বের হয়ে পানি শূন্যতা তৈরি হতে পারে। শরীর থেকে পানি বের হয়ে যাওয়ার ফলে মানুষের হৃদপিন্ড ও নাড়ির গতি বেড়ে যায়। এ থেকে মাথা ঘোরা বা বমি বমি ভাব হতে পারে। অনেক সময় অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে। এই অবস্থাকে বলা হয়, হিট স্ট্রোক। এ পরিস্থিতির শিকার হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত ছায়াময় স্থানে নিয়ে যেতে হবে। সম্ভব হলে শীতলতম স্থানে নিয়ে যেতে হবে। শরীরের কাপড় ঢিলে করে দিতে হবে। চোখেমুখে পানি দিতে তবে। পাশাপাশি স্যালাইন এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি পান করাতে হবে।
তিনি এ পরিস্থিতিতে শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে বাইরের খাবার, শরবত, পানি, বরফ খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরমর্শ দেন।
এছাড়া যারা রোজা রাখছেন না, তাদের জন্য এ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ হলো- এসময় বাইরে যাওয়ার সময় ঘর থেকে খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সাথে রাখতে হবে। বাইরের পানি ঠান্ডা শরবত খাওয়া যাবে না।
তিনি আরও বলেন, প্রচন্ড গরমে কিছু ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মামস, জলবসন্ত, ডায়রিয়ায় আক্রান্তের হার বেড়ে যায়। বয়স্ক, শিশু এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম যেমন- গর্ভবতীদের মধ্যে এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
ইতোমধ্যেই দেশে এধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে ডা. লেলিন এসময় বয়স্ক, শিশু ও গর্ভবতীদের বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। জরুরি প্রয়োজনে বাইরে গেলে সুতি কাপড় পরা, বাসার খাবার ও পানি সাথে রাখার পরামর্শও দেন তিনি। বলেন, এসময় শিশুদের মধ্যে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। এ থেকে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। তাই এসময় শিশুদের ঘরের বাইরে না যাওয়া, ফ্রিজের ঠান্ডা পানি ও বরফ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে