দেশের উন্নয়ন করে মানুষের আস্থা বিশ্বাস অর্জন করেছি: প্রধানমন্ত্রী

0
137

খবর৭১ঃ

তার সরকার জনগণের ক্ষমতায়নের বিশ্বাস করে বলেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন করে মানুষের আস্থা বিশ্বাস অর্জন করেছি। দেশের জনগণের ভোটেই বার বার সরকারে এসেছি। যতই মানুষকে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা করুক কোনো লাভ নেই।’

রাজধানীতে মিরপুর-কালশী ফ্লাইওভারের উদ্বোধন উপলক্ষে এক সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। রবিবার মিরপুর বালুর মাঠে এ সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বক্তব্য দেওয়ার আগে কালশী ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান।

ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে মিরপুর-কালশী ফ্লাইওভার উদ্বোধন ছাড়াও ইসিবি চত্বর থেকে মিরপুর পর্যন্ত ছয় লেনে উন্নীত হওয়া সড়কেরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর তিনি সেখানে মোনাজাতে অংশ নেন।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই ধারা অব্যহত রাখতে হবে। আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি, বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্ব সভায় মাথা উঁচু করে চলবো, এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। কাজেই গণতন্ত্র নিয়ে সুরক্ষিত করে জণগণের ভাবমূর্তি সুরক্ষিত করা এটাই আমাদের লক্ষ্য।’

‘দুর্নীতি করার মানসিকতা নেই, মা-বাবা তেমন শিক্ষা দেননি’

দেশের অর্থ অন্যকে দিয়ে দুর্নীতি করার মানসিকতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, ‘দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে এসেছি। আমার দেশের অর্থ অন্যকে দিয়ে সেখান থেকে দুর্নীতি করব, সেই মানসিকতা আমাদের নেই। সেই শিক্ষা আমার বাবা-মা আমাকে দেননি। নিজের ভাগ্য নয়, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়াই আমার লক্ষ্য।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জনগণের সুবিধার দিকে লক্ষ্য রেখেই পরিকল্পনা গ্রহণ করে। মানুষের ভাগ্য করার জন্যই বর্তমান সরকার এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গের অবতারনা করেন তার বড় কন্য শেখ হাসিনা।

বলেন, ‘সেদিন আমার তো বেঁচে থাকারই কথা ছিলো না। ঘাতকের নির্মম বুলেট কেরে নেয় বাংলাদেশের তখনকার রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একই সঙ্গে নির্মমভাবে হত্যা করে আমার মা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবকে। আমার মা সারা জীবন বাবার পাশে থেকে সব ধরণের প্রেরণা যুগিয়েছিলেন, তাকেও ঘাতকরা রেহাই দেয়নি।’

‘আমার ছোট তিন ভাই মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, ১০ বছরের ছোট ভাই শেখ রাসেলকেও নির্মম ভাবে হত্যা করে। আমার পরিবারের সকল সদস্যদের হত্যা করা হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জার্মানিতে ছিলাম বলে বেঁচে গিয়েছিলাম। সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা আমাদের দেশে আসতে দেয়নি। জনগণের ব্যাপক সমর্থন নিয়ে আমরা দেশে ফিরে আসি।’

‘খুনিদের পুরস্কার করা হয়। যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় ছিল, তা সত্বেও আমি একটি লক্ষ্য নিয়ে দেশে ফিরে আসি। বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে গড়ে তুলতে হবে। বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে। বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেটাই ছিল আমার লক্ষ্য।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৯৬ সালে আমরা প্রথম সরকার গঠন করি। তখন ১৬শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। আমরা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করি। বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪ হাজার ৩শ মেগাওয়াটে উন্নীত করি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পথে আমরা এগিয়ে যাই।’

পদ্মা সেতু নির্মাণে বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘দুর্নীতির মিথ্যা অপবাদ দিতে চেয়েছিল। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার প্রতিজ্ঞা করি। আমি ধন্যবাদ জানাই আমার দেশের মানুষকে। তারা আমার পক্ষে ছিল। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে, আমরা ইচ্ছা করলে পারি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘ইসিবি চত্বর থেকে মিরপুর ডিওএইচএস পর্যন্ত ৩ দশমিক ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তা চার লেন থেকে ছয় লেনে উন্নীতকরণ করা হয়েছে। ২ হাজার ৩৩৫ মিটার ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে।’

‘ফলে বৃহত্তর মিরপুর, পল্লবী, মাটিকাটা, মানিকদী, ভাসানটেক ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার সর্বস্তরের জনগণ অল্প সময়ের মধ্যে যাতায়াত করতে পারবেন। আপনারই সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন।’

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা, সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here