খবর৭১ঃ ইন্দোনেশিয়ায় ১৩ শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় এক শিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত।
দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, মঙ্গলবার স্থানীয় এক আদালত অভিযুক্ত উইরাওয়ানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। এ ছাড়া ধর্ষণের শিকার ১৩ শিক্ষার্থীকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২১ হাজার মার্কিন ডলার দিতে সরকারের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিচারকের রায় পড়ার সময় উইরাওয়ান মাথা নিচু করেছিলেন। এসময় সে নিজ সন্তানদের লালন-পালনের জন্য আদালতের নিকট প্রার্থনা করে।
এর আগে আদালতে আইনজীবীরা উইরাওয়ানকে খোঁজা করার পাশাপাশি তার মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান।
ইন্দোনেশিয়ায় প্রায় ২৫ হাজারের বেশি ইসলামিক আবাসিক (বোর্ডিং) স্কুল রয়েছে। এ সব স্কুলে প্রায় ৫০ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। সাধারণত এ সব স্কুলে দিনের বেলায় নিয়মিত ক্লাস নেওয়া হয়। আর রাতে কোরআন ও ইসলামিক শিক্ষা বিষয়ে পড়াশোনা হয়। দেশটির পশ্চিম জাভাতে অবস্থিত এ ধরনের একটি ধর্মীয় স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষক ছিলেন উইরাওয়ান। ওই স্কুলে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ছিল দরিদ্র। তারা বৃত্তি নিয়ে সেখানে পড়তে আসতো।
জানা যায়, ২০১৬ সাল থেকে শিক্ষার্থীদের ধর্ষণ করে আসছে ওই শিক্ষক। ধর্ষণের শিকার প্রত্যেকের বয়স ১১ থেকে ১৬। এদের মধ্যে অন্তত ৮ জন গর্ভবতী হয়। ইতোমধ্যে তারা ৯টি সন্তান জন্ম দিয়েছে।
গত বছরের মে মাসে এক অভিভাবক জানতে পারেন যে, তাদের মেয়ে গর্ভবতী। তারপর তারা থানায় উইরাওয়ানের বিরুদ্ধে মামলা করে। তখন এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। তখন বাকি শিক্ষার্থীরাও থানায় অভিযোগ করে।
শিশুদের ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। উইরাওয়ানের বিচারের দাবিতে দেশের সর্বত্র মিছিল হয়।
এ ঘটনায় দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
সাংবাদিকদের দেশটির জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান সুসান্ত বলেন, আদালতের চূড়ান্ত রায়ে ধর্ষণের শিকার প্রতিটি শিক্ষার্থীর প্রতি ‘ন্যায়বিচার’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।