বিবস্ত্র করে নির্যাতনে আরও দুই আসামির স্বীকারোক্তি

0
388
বিবস্ত্র করে নির্যাতনে আরও দুই আসামির স্বীকারোক্তি

খবর৭১ঃ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আরও দুই আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুক্রবার আলোচিত এই মামলার আসামি আনোয়ার হোসেন সোহাগ ও নুর হোসেন রাসেল ১৬৪ ধারায় এই স্বীকারোক্তি দেন। এ নিয়ে মামলাটিতে চারজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন।

নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল বলেন, শুক্রবার দুপুরে সোহাগ ও রাসেলকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ২নং আমলি আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের জ্যেষ্ঠ হাকিম এস এম মোসলে উদ্দিন মিজান ১৬৪ ধারায় আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে এই ঘটনায় দায়ের করা নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি মামলা দুটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়েছে। দায়িত্ব পেয়ে পিবিআইয়ের একটি দল নির্যাতিতা ওই নারীকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

শুক্রবার সকালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন নোয়াখালী ইন্সেপেক্টর সুভাষ চন্দ্র পালের নেতৃত্বে একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের নির্যাতিতার বাড়ি পরিদর্শন করে পিবিআই তদন্ত প্রতিনিধি দল। ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে নির্যাতিতার বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

পুলিশ জানায়, গৃহবধূকে নির্যাতন ও ভিডিও ধারণের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। যার মধ্যে নির্যাতনের মামলাটি ইন্সেপেক্টর মামুনুর রশিদ পাটোয়ারী ও পর্নোগ্রাফি মামলাটি ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় তদন্তকারী কর্মকর্তারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের পিবিআই কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ ও মামলা দুটির সাবেক তদন্তকারী কর্মকর্তা বেগমগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মোস্তাক আহমেদ এবং বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ।

এদিকে পঞ্চম দিনও ধর্ষক ও নির্যাতনকারীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বেগমগঞ্জ শাখা, মানবসেবায় বাংলাদেশ নোয়াখালী জেলা কমিটি, নোয়াখালী জেলা উদ্যম ফাউন্ডেশন, মানবিক ব্লাড ফাউন্ডেশন নোয়াখালী, বাংলাদেশ মানবধিকার কমিশন চাটখিল উপজেলা ও পৌরসভা শাখা, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভা শাখাসহ বিভিন্ন সংগঠন।

গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর আগের স্বামী তার সাথে দেখা করতে তার বাবার বাড়ি একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে আসেন। বিষয়টি দেখতে পান স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার। রাত ১০টার দিকে দেলোয়ার তার লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে ঢুকে পরপুরুষের সঙ্গে অনৈতিক কাজ ও তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে পিটিয়ে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে। ৪ অক্টোবর দুপুরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ওইদিনই গৃহবধূ বাদী হয়ে দুটি মামলায় করেন। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার মধ্যে চারজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here