খবর৭১ঃ চলতি মাস থেকে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের বিষয়ে পোশাক শিল্প মালিকদের কাছ থেকে ঘোষণা আসার পর ইস্যুটি নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয়। করোনা ভাইরাসের এ পরিস্থিতিতে গার্মেন্টস কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই এবং কারখানা লে-অফ (সাময়িক বন্ধ) না করতে পোশাক শিল্প মালিকদের চিঠি দিয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই)। একই চিঠি প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও পাঠানো হয়েছে। অবশ্য মালিকপক্ষ বলছেন, শ্রম আইন অনুযায়ী তাদের শ্রমিক ছাঁটাইয়ের অধিকার রয়েছে।
করোনা ভাইরাস শুরু হওয়ার পর কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই ও লে অফ শুরু হয়। এ নিয়ে শ্রম অসন্তোষও দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার কারখানা মালিক ও শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে আপাতত শ্রমিক ছাঁটাই ও লে অফ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর বিপরীতে কারখানাগুলোকে শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধের লক্ষ্যে ঘোষিত পাঁচ হাজার কোটি টাকার ঋণ সুবিধার শর্ত শিথিল করা হয়।
তবে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, ক্রয়াদেশ কমতে থাকায় কারখানাগুলোকে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের দিকে যেতে হবে। এই বক্তব্যে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এমন পরিপ্রেক্ষিতে ডিআইএফই চিঠি পাঠালো বিজিএমইএ সভাপতিকে।
ডিআইএফই’র মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায় ইত্তেফাককে বলেন, একটি সংগঠনের প্রধান হিসেবে বিজিএমইএ সভাপতির এমন ঘোষণা দেওয়া ঠিক হয়নি। শ্রমিক ছাঁটাই হলে শ্রম অসন্তোষ হতে পারে। আমাদের কাছে প্রতিদিনই বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন এসব বিষয়ে চিঠি দেয়। ডিআইএফই’র অফিসগুলোকেও ছাঁটাই ইস্যুতে আলোচনা, সমঝোতা করতে হয়।
তিনি বলেন, প্রণোদনার অর্থ দিয়েই তো জুন মাসের বেতন দেওয়া হচ্ছে। অথচ এখন আবার ছাঁটাইয়ের কথা বলা হচ্ছে। তাহলে শ্রমিকরা যাবে কোথায়? তিনি বলেন, এসব বিষয়ে আলোচনার জন্য বিজিএমইএকে ডাকা হলেও তারা এড়িয়ে গেছে।
অবশ্য ডিআইএফই’র এমন চিঠির সঙ্গে একমত নন পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। ইত্তেফাককে তিনি বলেন, শ্রম আইনের ২০ ধারায় বলা আছে কাজের অতিরিক্ত শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে। তাহলে যারা ছাঁটাই না করার জন্য বলছেন, প্রকারান্তরে শ্রম আইনকে অস্বীকার করছেন। আমাদের কাছে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের বিকল্প নেই। তাদের কাছে কোন ভালো বিকল্প থাকলে আমাদের জানান।