বিএসএমএমইউ পরিচালক সরকারের শেখানো কথাই বলছেন: রিজভী

0
554
বিএসএমএমইউ পরিচালক সরকারের শেখানো কথাই বলছেন: রিজভী

খবর৭১ঃ
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএসএমএমইউ পরিচালক সরকারের শেখানো কথাই বলছেন। পরিচালকের বক্তব্যে এটি সুস্পষ্ট যে, ৭৫ বছর বয়সী ভয়ানক অসুস্থ চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কারাবন্দী রেখে বিনা চিকিৎসায় তিলে তিলে নিঃশেষ করার মহাআয়োজন চলছে।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মনোভাবই প্রতিফলিত হয়েছে পরিচালকের বক্তব্যে। পরিচালক সাহেবের বক্তব্যের অনেকাংশই এখতিয়ার বহির্ভূত। কারাবন্দী ও ভীষণ অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়াকে শেখ হাসিনার মতোই পরিচালকের বক্তব্যও অযাচিত, অগ্রহণযোগ্য, অসৌজন্যমূলক, পূর্বকল্পিত, বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও কুৎসামূলক।

আজ সোমবার বিকালে বিএনপির নয়া পল্টন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী একথা বলেন। রিজভী বলেন, বিএসএমএমইউ এর পরিচালক বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-ব্লকের শহীদ ডাঃ মিল্টন হলে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যগত বিষয়ে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে গিয়ে বলেন, ‘খালেদা জিয়া ভাল আছেন, চিকিৎসায় সন্তুষ্ট।

গত সাত মাস আগে খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও বাতজ্বরজনিত বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও এখন বেশীরভাগ অসুখের উন্নতি হয়েছে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অবস্থা স্থিতিশীল হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার সাথে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও দেখা পাওয়া যায় না। প্রায় সময় ডাক্তাররা কেবিনে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পান না।’ অথচ বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ঝিলন মিয়া সরকার বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসকদেরকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেন এবং অত্যন্ত বিনয়ী ব্যবহার করেন। তিনি হাঁটতে পারেন না, অন্যজনের সহায়তায় তাঁকে হাঁটতে হয়। তাঁর আরও চিকিৎসা প্রয়োজন।

একজন অসুস্থ মানুষের লাইফ স্টাইল অনেক রকম হয়, এটা আমি স্বাভাবিক মনে করি। এসব বিষয়গুলো সম্মান করেই আমাদের চিকিৎসা করতে হয়। ম্যাডাম আমাদের সাথে সবসময় হাসিখুশি কথা বলেন। কিন্তু চিকিৎসক হিসেবে নানা অসুবিধার কারণে আমাদেরও প্রতিদিন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করা সম্ভব হয় না।’ অধ্যাপক ঝিলন মিয়া সরকারের বক্তব্যের সাথে পরিচালকের বক্তব্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রাণনাশের দুরভিসন্ধি নিয়েই কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে। প্রতিদিন তার শরীর ভেঙ্গে পড়ছে, স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। উন্নতমানের চিকিৎসার অভাবে তিনি এখন প্রতিনিয়ত চলৎশক্তিহীন হয়ে পড়ছেন। তাঁকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার সুযোগ দেয়ার জন্য দেশের সর্বস্তরের মানুষের অব্যাহত দাবী ও তাঁর পরিবারের আবেদন-অনুরোধ কানে তুলছে না সরকার। তারা কোনভাবেই মুক্তি না দিয়ে কারাগারে হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়নে উন্মত্ততা দেখাচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শনিবার সন্ধ্যায় আজারবাইজানে স্থানীয় হিলটন হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বলেছেন, ‘বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিকে আন্দোলনের ইস্যু বানাতে তাকে অসুস্থ বলছে। খালেদা জিয়া কারাগারে অন্য বন্দীদের চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা লাভ করছেন।’

এর আগে শেখ হাসিনা লন্ডনে গিয়ে বলেছিলেন ‘খালেদা জিয়াকে সারাজীবন কারাগারে রাখবেন তিনি! এসব কথাবার্তাতেই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ মেলে-বেগম জিয়াকে বন্দী অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় চিরতরে পঙ্গু করে দিতে চান। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, অবিলম্বে বেগম জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার সুযোগ দিন। অন্যথায় তাঁর যদি কোন খতি হয় তবে সকল দায় শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারকেই বহন করতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here