আপনার বেল শেষ, বেল আর আসবে না: ওবায়দুল কাদের

0
230

খবর৭১ঃআওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির নাম হচ্ছে এখন বাংলাদেশ নালিশ পার্টি। তারা শুধু নালিশ করে, নালিশ ছাড়া আর কিছু করতে পারে না। নালিশ করতে করতে শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘে গেছে।

তিনি বলেন, তারা বলে জাতিসংঘের মহাসচিব নাকি তাদের দাওয়াত দিয়েছে। পরে দেখা গেল কি সব ভুয়া। এরা জাতিসংঘের নামে ব্ল্যাকমেইল করে। জাতিসংঘ মহাসচিবের নাম ভাঙ্গিয়ে দেশে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এদের হাতে দেশ নিরাপদ না। এদের হাতে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, ১৬ কোটি মানুষও নিরাপদ নয়। বিএনপির আন্দোলনে মরা গাঙ্গে জোয়ার আসবে না।

মঙ্গলবার দুপুরে তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মধ্য চরকাঁকড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দলীয় জনসভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

মওদুদ আহমদের সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, এখন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ গণতন্ত্রের জন্য কাঁদে, তিনি বসুরহাট ডাকবাংলোর মধ্যে বসে বলেন, ভাত ছিটলে কাকের অভাব নেই। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ তখন বলেছিল, আপনারা আমাকে ভোট না দিলে রাস্তা থেকে ইট তুলে নিয়ে যাব। জনগণ মওদুদ আহমদের এসব কথা ভুলে নাই।

তিনি আরও বলেন, মওদুদ আহমদ ৪০ বছর ঢাকার গুলশানে একটি বাড়ি দখল করে রেখেছিল বিনা কাগজে। মরা মানুষের নামে ভুয়া সার্টিফিকেট দেখিয়ে ওই বাড়িটি দখল করে রেখেছিল। বাড়ি হারানোর পর মওদুদ সাহেব বলেন, আমার বাড়ি নাই, ঘর নাই, আমি এখন রাস্তায় পড়ে আছি, অথচ এখন দেখা যায় ঢাকা শহরে তার ৪টি বাড়ি রয়েছে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ২২ বছর রাজত্ব করেছেন। আপনার বেল শেষ হয়ে গেছে, আপনার বেল আর আসবে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি কয়েক দিন পরপর বলে আন্দোলন, সর্বাত্মক আন্দোলন চলবে। মওদুদ আহমদ বলেন, আন্দোলনে এক মাসের মধ্যে দেশের চেহারা বদলে যাবে। ২০০১ সাল বাংলাদেশে আর ফিরে আসবে না। বিএনপি বলে ঈদের পর আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে। একবার বলে রোজার ঈদের পর আবার বলে কোরবানির ঈদের পর। এ ঈদে না কোন ঈদে, আন্দোলন হবে কোন ঈদে। ১০ বছরে ২০টি ঈদ গেল। আন্দোলন হলো না কোনো ঈদে।

তিনি বলেন, আন্দোলন এখন বেগম খালেদা জিয়ার ভ্যানেটিব্যাগের মধ্যে রয়েছে, তা-ও জেলখানায়। বেগম খালেদা জিয়া এত নেতা, এত মন্ত্রী বানিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছে, আন্দোলনের সময় এখন তারা কোথায়। আন্দোলনের জন্য ৫০০ নেতাকর্মী একসঙ্গে রাজপথে বের হতে পারে না। আন্দোলনে নেতা বের না হলে কর্মীরাও বের হয় না। নেতারা এসি রুমে বসে ইন্ডিয়ার হিন্দি সিরিয়াল দেখে। ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা নারীদের যে সম্মান দিয়েছে, যার কোনো তুলনা নেই। বেগম খালেদা জিয়ার সময় কোনো সন্তান জন্মগ্রহণ করলে মায়ের পরিচয় ছিল না। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর কোনো সন্তান জন্মগ্রহণ করলে বাবার নামের পাশাপাশি মায়ের নামও অন্তর্ভুক্ত করার প্রচলন চালু করেছে। যে মা সন্তান জন্ম দেয় সে মায়ের পরিচয়ে সন্তান থাকতে হবে। মায়ের সম্মান শেখ হাসিনা দিয়েছে। উপবৃত্তির টাকা মায়েদের মোবাইলে তাদের কাছে পৌঁছে যায়।

মন্ত্রী বলেন, তার নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় একাডেমিক ভবন করা হয়েছে। সব এলাকায় রাস্তা, পুল কালভার্ট, ব্রিজ করা হয়েছে। সোনাপুর থেকে জোরারগঞ্জ পর্যন্ত বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। সারা দেশে সড়ক, মহাসড়কের ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ফোর লেন রাস্তা, ফ্লাইওভার নির্মাণ করে যানজট নিরসন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের ১০ বছরে সারা দেশে গ্যাস, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাটসহ ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এ সরকারের আমলে যে উন্নয়ন হয়েছে আর কোনো সরকারের আমলে এত উন্নয়ন হয়নি।

আগামীতে ক্ষমতায় আসলে আমার নির্বাচনী এলাকায় প্রধান সড়কগুলো ফোর লেন করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ এলাকাকে নতুনভাবে মডেল করে সাজিয়ে তুলব। কোম্পানীগঞ্জে শেখ রাসেল নামে একটি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে। এ এলাকায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ চোখে পড়ার মতো এমন কোনো উন্নয়ন করেনি। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ৭০ জন কর্মজীবী নারীকে ৬০ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আমি উন্নয়ন করব, তোমরা মানুষের সঙ্গে ভালো আচরণ করবে। যারা উন্নয়নের নামে অনিয়ম করবে আমি তাদেরকে ছাড় দেব না। অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হস্তে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারা আমার সঙ্গে থাকতে পারবে না।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নোয়াখালী জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস, জেলা পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনম সেলিম, সহসভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নুরনবী চৌধুরী, চরকাঁকড়া আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী সফি উল্যা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আরজুমান পারভীন, যুবলীগের সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল, সাধারণ সম্পাদক গোলাম ছরওয়ার, স্বাধিনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সদস্য ফখরুল ইসলাম রাহাত, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি নুরুল করিম জুয়েল, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন মুন্না, সরকারী মুজিব কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নুর এ মাওলা রাজু প্রমুখ।

এর আগে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে শিক্ষা প্রকৌশলীর অধিদফতরের ৭টি একাডেমিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন।

এর আগে সকালে কবিরহাট উপজেলায় নির্বাচনী প্রস্তুতি সভায় মন্ত্রী বলেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার পাঁচমিশালি নেতৃত্বে জনগণের আস্থা নেই। এই যে ১০ দল, ২০ দল তাদের নেতা কে? নেতৃত্ব দেবে কে? নেতা ছাড়া কি কোনো আন্দোলন হবে। বিএনপি এখন ঘরে ঢুকে গেছে। তারা এখনো তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে কোনো আন্দোলন করতে পারেনি। তারা নির্বাচন নিয়ে কী আন্দোলন করবে।

বিএনপি একসময় হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে লুটপাট করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন পুনরায় চক্রান্তের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। তাদের এবারের উদ্দেশ্য হলো, খাওয়া ভবন সৃষ্টি করা। বাংলার জনগণ তাদের এ অপতৎপরতা সফল হতে দেবে না।

খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here