ব্রীজ ধ্বসে যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা

0
251

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর)প্রতিনিধিঃ  যশোরের চৌগাছায়
কপোতাক্ষ নদের উপর পুরতন বেইলি ব্রীজটি এখন মরণফাঁদে পরিনত হয়েছে।
ব্রীজের উপর বসানো অনেক গুলো লোহার পাত ভেঙ্গে বেশ আগেই হারিয়ে
গেছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। জীবনের ঝুকি নিয়ে ভাঙ্গা অতিক্রম
করে মানুষ প্রতিনিয়ত চলাচল করছে। এই ব্রীজের উপর ছোট খাটো
দূর্ঘটনা এখন নিত্য দিনের সঙ্গি। ব্রীজ ধ্বসে যে কোন সময় বড় ধরনের
দূর্ঘটনার আশংকা করা হচ্ছে। এদিকে বেইলি ব্রীজের পাশেই নব নির্মিত
সেতুর সংযোগ সড়ক    মূূল  ব্রীজ থেকে বেশ নিচু হয়ে গেছে। বেইলি
ব্রীজটি দ্রুত সংস্কারের পাশাপাশি নতুন সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ
করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসি।
সূত্র জানায়, চৌগাছার কপোতাক্ষ নদের উপর পুরাতন বেইলি ব্রীজটি
চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। বেহলি ব্রীজের পাশে নতুন
সেতু নির্মানের ফলে কর্তৃপক্ষ পুরানো ব্রীজটির দিকে আর সেভাবে নজর
দেয়নি বলে জানান স্থানীয়রা। এর ফলে ব্রীজের উপর লোহার পাত ভেঙ্গে গেছে
অনেক আগেই। কিছু অসাধু ব্যক্তি সেই পাত উঠিয়ে নিয়ে গেছে। এখন
বেইলি ব্রীজের উপর সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। পাশে নতুন সেতু
নির্মান করা হলেও তা মূল সড়ক থেকে অনেক উচু হওয়ায় ছোট খাটো
যানবাহনসহ পথচারীরা এই বেইলি ব্রীজটি ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু বছরের
পর বছর ব্রীজটি মেরামত না করায় এখন চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে
উঠেছে। এই ব্রীজের উপর দূর্ঘটনা এখন নিত্য দিনের সঙ্গি হয়ে গেছে
পথচারীদের। ব্রীজ সংলগ্নের ব্যবসায়ী চঞ্চল হোসেন জানান, লোহার
ব্রীজটি অনেক ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ব্রীজের অনেক স্থানের পাত নেই।
সৃষ্টি হয়েছে গর্তের, প্রতিদিন ভ্যান, মটরসাইকেল, আলমসাধু, নছিমন
করিমন এমনকি পথচারীরা সেখানে দূর্ঘটনার কবলে পড়ছে। অনেকে ব্রীজ
থেকে নিচে নদেও পড়ে যেতে দেখেছেন তিনি। ভ্যান চালক আইনাল হোসেন
বলেন, নতুন ব্রীজ সড়ক থেকে অনেক উচু যার কারনে আমাদের মত মানুষ এই
লোহার ব্রীজটি ব্যবহার করে। কিন্তু বর্তমানে যে অবস্থা তাতে এই ব্রীজ আর
হয়ত ব্যবহার করা সম্ভব হবে না। পথচারীরা জানান, লোহার ব্রীজটি দীর্ঘ
দিন কোন সংস্কার না করার ফলে এর নাটবোল্টসহ সব কিছুই দূর্বল হয়ে
গেছে। একটি ভ্যান এই ব্রীজের উপর উঠলেও ব্রীজটি কাঁপতে থাকে। তাদের
ধারনা ব্রীজটি যে কোন সময় ধ্বসে পড়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এদিকে বেইলি ব্রীজের পাশেই নির্মান করা হয়েছে সুবিশাল সেতু। মুলসড়ক থেকে সেতুটির উচ্চতা অনেক গুন বেশি। যার কারনে অপেক্ষাকৃত
দুর্বল যানবাহন, বয়োবৃদ্ধ এবং স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েরা অনেকটা বাধ্য
হয়ে বেইলি ব্রীজ দিয়ে যাতায়াত করছেন। এলাকাবাসি জানান, নতুন
সেতুর মুল অংশ থেকে সংযোগ সড়ক ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি নিচু হয়ে গেছে।
যার কারনে দ্রুত গতীর যানবাহন মুল সড়ক থেকে সেতুতে উঠতে যেয়ে
সেখানেও ঘটছে দূর্ঘটনা।
সূত্র জানায়, চৌগাছা উপজেলাকে দু’ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে মহাকবি
মাইকেল মধুসুধন দত্তের কপোতাক্ষ নদ। কপোতাক্ষ পারাপারের লক্ষে আশির দশকে
তৎকালীন সরকার নদের উপর একটি বেইলী ব্রীজ নির্মান করেন। ব্রীজটি
নির্মিত হওয়ার ফলে চৌগাছার সার্বিক উন্নয়নে তা অসামন্য অবদান
রাখতে শুরু করে। সময়ের ব্যবধানে ওই বেইলি ব্রীজ দিয়ে ভারী যান চলাচলের
ব্যাপক ঝুকি বেড়ে যাই। একপর্যায়ে এলাকাবাসি দাবির প্রেক্ষিতে নতুন
ব্রীজ নির্মানের সিদ্ধান্ত হয়। সাবেক আইসিটি মন্ত্রী মোস্তফা ফারুক
মোহাম্মদ নতুন ব্রীজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। নির্মিত হয়
চৌগাছাবাসির কাংখিত সেই ব্রীজ এবং তা চলাচলের জন্য ছেড়ে দেয়া
হয়। নতুন ব্রিজের উপর দিয়ে বাস, ট্রাকসহ ভারি সব ধরনের যানবাহন চলাচল
করলেও ছোটোখাটো যানবাহন চলাচল এক প্রকার অঘোষিত ভাবে বন্ধ থাকে।
নতুন ব্রীজটি নির্মান করা হয় অপরিকল্পিত ভাবে এমনটিই মনে করছেন এ
জনপদের মানুষ। কেননা ব্রীজটি মুল সড়ক থেকে অন্তত ৮/১০ ফুট উচু করে
নির্মান করা হয়েছে। যে পরিমান উচু করা হয়েছে সংযোগ সড়ক সে
পরিমান ঢালু করা হয়নি। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে নতুন ব্রীজ ব্যবহার
করতে পারছেনা। এই অবস্থায় লোহার ব্রীজটি দ্রুত মেরামতের পাশাপাশি
নতুন সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসি।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here