খবর ৭১:রাজধানীর পান্থপথের বসুন্ধরা সিটির বিভিন্ন দোকান থেকে ‘শুল্ক ফাঁকি দিয়ে’ আনার অভিযোগে দেড়শরও বেশি আইফোন জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। এই ঘটনায় দোকানিদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
অভিযানের প্রতিবাদে পান্থপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করে ব্যবসায়ীরা। তারা শুল্ক গোয়েন্দাদের গাড়ির চাকাও ফুটো করে দেয়।
শনিবার বেলা একটার দিকে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে বসুন্ধরা শপিং মলে এই অভিযান চলানো হয়। মার্কেট থেকে জব্দ করা আইফোনগুলো জব্দ করে গাড়িতে তুললে দোকানিরা বিক্ষোভে নামেন। এ সময় তাদের সাথে শুল্ক গোয়েন্দা এবং র্যাবের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
দোকানিরা এ সময় শুল্ক গোয়েন্দা ও তাদের সঙ্গে যাওয়া র্যাবের গাড়ি আটকে দেয়। এতে ৩২ নম্বর থেকে কাওরান বাজার সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আর তৈরি হয় ব্যাপক জনভোগান্তি।
বেলা তিনটার পরও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শুল্ক কর্মকর্তাদের বাকবিতণ্ডা ও হাতিহাতি চলছিল। ঘটনাস্থলে র্যাব-১০ এর কর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন।
বিদেশ থেকে দামি মোবাইল ফোন আমদানিতে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক আছে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের একটি অংশ সরকারি কোষাগারে টাকা দেয়ার বদলে নানা কৌশলে দেশে মোবাইল ফোন নিয়ে আসে বলে অভিযোগ আছে। মাঝেমধ্যে বিমানবন্দরে শুল্ক গোয়েন্দাদের অভিযানে চোরাই পথে আনা বিপুল সংখ্যক ফোন ধরাও পড়েছে। তারপরও এই প্রবণতা ঠেকানো যাচ্ছে না।
তবে দোকানিরা এই অভিযানের সঙ্গে শুল্ক গোয়েন্দাদের অন্য উদ্দেশ্যের অভিযোগ তুলেছেন। তাদের অভিযোগ, প্রতি ঈদের আগে শুল্ক বিভাগের লোকেরা তাদের মোবাইল ফোন জব্দ করে নিয়ে যান। কিন্তু পরে তা আর ফেরত দেয়া হয় না।
বসুন্ধরা শপিং মলের ষষ্ঠ তলার এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না অনুরোধ করে জানান, প্রায় ২০ লক্ষ টাকার মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। কিন্তু এই জব্দের কোনো তালিকা তাদেরকে দেয়া হয়নি।
এই ফোন কীভাবে এনেছেন- জানতে চাইলে ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘কেউ বিদেশ থেকে আসলে তারা লাগেজে দুই তিনটা মোবাইল এনে আমাদের কাছে বিক্রি করে। আমরাই সেগুলো বিক্রি করে থাকি।’
বসুন্ধরা সিটির মোবাইল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘আমরা এসব মোবাইল পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিনে আনি। এসব মোবাইলের কাস্টমস বা ট্যাক্সের কাগজ কখনও কেউ দেখাতে পারবে না। প্রতি ঈদের আগে এভাবে অভিযান চালানো হয়।’
‘এবারও দেড় শতাধিক আইফোন জব্দ করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি এসব জব্দ করা ফোন তারা নিজেরাই ব্যবহার করেন এবং সেগুলো বাইরে বিক্রি করে দেন। কখনো সেগুলো নিলামে তোলা হয় না।’
ব্যবসায়ীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযান চালানো শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুমতি দিলে মোবাইল ফোনগুলো ফেরত দেওয়া হবে।