মোঃ জহির রায়হান-সিরাজগঞ্জঃ বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর,অর্ধেক তার করিয়াছে নারী,অর্ধেক তার নর।
শিল্প, অর্থনীতিতে পিছিয়ে থাকা উত্তরবঙ্গকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পিছনে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের ভুমিকাও উল্লেখযোগ্য। এই অ লের নারীরা শিক্ষা, সরকারী –বেসরকারী চাকুরীর পাশাপাশি ব্যবসা এমনকি শ্রমিকের কাজ করেও পারিবারিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা পালন করছেন।
সিরাজগঞ্জ জেলার তা সমৃদ্ধ এলাকা হিসেবে পরিচিত বেলকুচি, এনায়েতপুর, শাহজাদপুর উপজেলাতে সুতা রঙ করা হতে শুরু করে আধুনিক পাওয়ার লুম পর্যন্ত চালনা করছেন নারী শ্রমিকেরা।
খুকনী এলাকার এমনি একজন নারী তাত শ্রমিক হেলেনা খাতুন জানান- “ স্বামী ঋন করে মালয়েশিয়াতে গিয়েছিল কিন্তু প্রতারক দালালের খপ্পরে পরার কারনে জেল খেটে দেশে ফেরত আসে এবং নিঃস্ব হয়ে পরেন। তখন আমি পরিবারের হাল ধরার জন্য তাত শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করি। এখন আমারই ৫ টি পাওয়ার লুম রয়েছে”।
কৃষি কাজ করার জন্যও নারীদের ব্যাপক সুনাম রয়েছে। ধান ক্ষেত প্রস্তুত করন, চারা ধান রোপন , ধানের আগাছা পরিষ্কার, ধান কাটা সকল কৃষি কাজেই পুরুষের সমান কাজ করে থাকেন গ্রামের অসহায় দরিদ্র নারীরা। সয়দাবাদ এলাকার এমনই একজন নারী শ্রমিক হালিমা বেওয়া জানান “ স্বামী
দ্বিতীয় বিবাহ করে চলে যান অন্য নারীর নিকট, রেখে যায় দুটি অবুঝ শিশু। আবাদী জমি না থাকায় অন্যের জমিতে কাজ করে দিনের হিসেবে মজুরী নিয়ে দুই সন্তানের লেখা পড়ার খরচ চালাই। কিন্তু পরিতাপের বিষয় , আমরা পুরুষের চাইতেও একশত টাকা কম মজুরী পাই । যদিও তাদের চাইতে আমাদের কাজ ভালো”।
রাস্তা-ঘাট সহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত নির্মান কাজেও পিছিয়ে নেই নারী শ্রমিকেরা। মাটি কাটা থেকে শুরু করে ইট মাথায় করে বয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ সবই নারী শ্রমিকেরা করে থাকেন। এমনই একজন নারী শ্রমিককে দেখা যায় সিরাজগঞ্জ শহরের রামগাতি এলাকায় কাজ করতে । এই নারী শ্রমিক জানান- “ পুরুষদের সমান কাজ করেও মজুরী যেমন কম পাই ঠিক তেমনি সমাজের কিছু দুশ্চরিত্র পুরুষদের দ্বাড়া পরোক্ষ ভাবে নির্যাতিত হয়ে থাকি। কিন্তু পেট কোন বাধাই মানে না। মুলত: পেটের ক্ষুধা নিবারনের জন্যই কাজ করে থাকি। কোন দুর্ঘটনার শিকার হলেও মালিক পক্ষ কোন চিকিৎসা খরচ দেননা”।
খবর৭১/জি: