৭ দফা না মানলে বিচারের হুমকি ড. কামালের

0
460

খবর৭১ঃসরকার সাত দফা দাবি মেনে না নিলে ভবিষ্যতে ‘বিচার’ করার হুমকি দিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম প্রধান নেতা ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন,  দেশের মানুষ আজ নিরাপদ নেই। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হয়নি। ওই নির্বাচন সংবিধানবিরোধী হয়েছে। তাই এবার সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সাত দফা ঘোষণা করেছে ঐক্যফ্রন্ট। এই সাতদফা আদায় না হলে ঐক্যফ্রন্ট ঘরে ফিরবে না। এটা গণমানুষের দাবি। দাবি না মানলে আপনাদের আইনের কাঠগড়ায় উঠতে হবে।

শনিবার বিকালে চট্টগ্রামের কাজির দেউড়িতে অবস্থিত মহানগর বিএনপির কার্যালয় নসিমন ভবনের সামনে আয়োজিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দ্বিতীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘যারা আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, অপরাধ করে—তারা মনে করে, পার তো পেয়ে গেছি। এখন কে আমাদের বিচার করবে? ইনশাআল্লাহ, এবার ন্যূনতম যেটা আমাদের দাবি, যে সাত দফা দাবি এগুলো সময় থাকতে মেনে নিন। কিন্তু, এটা অমান্য করলে বিচার হবে। ২০১৪ সাল থেকে সংবিধান লঙ্ঘন করার জবাবদিহিতা, সেটাও জনগণ আপনাদের থেকে আদায় করবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কারও পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। এদেশের মালিক ১৬ কোটি জনগণ। যারা ১৬ কোটি মানুষকে কষ্ট দেয়। আমি বেঁচে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করবো।’

সিলেটে গণরায় হয়েছে উল্লেখ করে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আজকে আপনারা জানিয়ে দিন, যারা ক্ষমতা আকড়িয়ে বসে আছে তাদের হাত উঁচু করে বলুন, আপনারা সাত দফার পক্ষে আছেন কি না। আপনার রায় দিয়েছেন, এখানেও গণরায় হয়ে গেছে। এরপর আমরা রাজশাহীতে যাবো, শেষে ঢাকায় এটাকে আমরা সম্পন্ন করবো। এবার জনগণ যখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। আপনারা জেনে রাখুন, এই চিটাগং থেকে জনসভা করে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। অর্থাৎ এটা অসম্ভব না। এটা সম্ভব।’

এ বক্তব্যেও ঐক্যফ্রন্টের পক্ষের দাবি ও দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সময় কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবির কথা তিনি শুরুতে বলেননি। এ সময় পাশ থেকে এক নেতা তাকে বিষয়টি মনে করিয়ে দিলে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাওয়ার কী আছে? মুক্তি চাওয়ার ব্যাপার নয়, এটা তো হওয়ার ব্যাপার। আর কত চাইবো। চাইতে চাইতে তো মানুষ ক্লান্ত হয়ে গেছে। মুক্তি চাইতে হবে কেন? মুক্তি দিতে হবে। যদি অবিলম্বে মুক্তি দেয়া না হয়- আর তার কিছু হয় তাহলে এর জন্য জবাব দিতে হবে। আমরা জবাব চাইবো।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চট্টগ্রামের অন্যতম সমন্বয়ক নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাৎ হেসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামী আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, আবদুল্লাহ আল নোমানসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।

এর আগে দুপুরে সমাবেশ শুরু হলেও সকাল থেকেই সমাবেশস্থল নুর আহমেদ সড়কে আসতে থাকেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

এদিকে সমাবেশকে ঘিরে নগরীতে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হয়। ভোর থেকে পুলিশের একাধিক টিম নুর আহমেদ সড়ক, কাজীর দেউড়ি এলাকায় অবস্থান করছে। সমাবেশের চারপাশে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো মহসীন জানান, সমাবেশ থেকে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা করতে না পারে সে জন্যই পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায়ে নবগঠিত জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের চট্টগ্রামে এটি দ্বিতীয় সমাবেশ। এর আগে ২৪ অক্টোবর এই জোট সিলেটে সমাবেশ করে।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here