৩ সিটিতে ভোট কাল

0
226

খবর৭১ঃ রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট এই তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচনেনে ভোট গ্রহণ করা হবে আগামীকাল সোমবার।

সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলবে। ভোট দেওয়ার সুবিধার্থে নির্বাচনের দিন সংশ্লিষ্ট এলাকায় সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে।

ভোটাররা যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তার জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তিন সিটির প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্সসহ নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এজন্য কমিশন সব কিছু করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচনে কোন ধরনের অনিয়ম বা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের যেকোন ধরনের শৈথিল্য বরদাস্ত করা হবে না।

সচিব জানান, গাজীপুরের মতো এই তিন সিটিতেও ভোট গ্রহণ পরিস্থিতির তথ্য তাৎক্ষণিক জানার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে দুঘণ্টা পরপর প্রয়োজনীয় সার্বিক তথ্য কমিশন সচিবালয়কে জানাবেন।

কোনো কেন্দ্রে জাল ভোট বা সিল মারার ঘটনা ঘটলে বা তথ্য পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে কমিশন। ভোট কেন্দ্রে কোনো অঘটন বা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে তা তাৎক্ষণিকভাবে কর্মকর্তারা এসএমএসের মাধ্যমে কমিশনকে জানাবেন। এক্ষেত্রে কমিশন ঢাকায় বসে এসব এসএমএসের তথ্য অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

প্রতি তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে ইসির নিজস্ব পর্যবেক্ষক মোতায়েন করা হয়েছে। ভোটে কোনো ধরনের অনিয়ম দেখলে তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ, রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবহিত করা এবং প্রয়োজনে তারা কমিশনকেও ঘটনার তথ্য জানাবেন।

আচরণবিধি দেখভাল করতে নির্বাচনী এলাকায় নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে উল্লেখ করে সচিব বলেন, ১৪ জুন থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ২৪ দিন ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তিন সিটিতে আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে। ১০ জুলাই থেকে ১ আগস্ট এই ২৩ দিন ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তিন সিটিতে আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে।

নির্বাচন সামনে রেখে নিরাপত্তার জন্য ৩১ জুলাই মঙ্গলবার পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকবে। পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, নির্বাহী ও বিচারিক হাকিমসহ মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নির্বাচনকালীন দায়িত্বে থাকবেন।

এর আগে শনিবার দুপুর থেকে তিন সিটিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ৪৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৫ প্লাটুন, বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৫ প্লাটুন এবং সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

এছা্ড়া, ভোটের দিন সাধারণ কেন্দ্রে ২২ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে।

এছাড়া নির্বাচনের দুই দিন আগে থেকে পরদিন পর্যন্ত আচরণ বিধি প্রতিপালন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রতি সিটিতে ২০ জন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং আজ থেকে পরবর্তী চার দিন রাজশাহী ও বরিশালে ১০ জন করে এবং সিলেটে ৯ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে।

সচিব জানান, তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বরিশালে ১০টি, রাজশাহীতে দুটি ও সিলেটে দুটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে ৩ লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৫ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৩ জন।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে ২ লাখ ৪২ হাজার ৬৬৬ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ৪৩৬ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ২০ হাজার ৭৩০ জন।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনে ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৪৪ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৫০ হাজার ২৮৮ জন।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন (নৌকা), বিএনপির মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মো. শফিকুল ইসলাম (হাতপাখা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মুরাদ মোর্শেদ (হাতী)।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদেক আবদুল্লাহ (নৌকা), বিএনপির মো. মজিবুর রহমান সরোয়ার (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির মো. ইকবাল হোসেন (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর ওবায়দুর রহমান মাহবুব (হাতপাখা), বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির আবুল কালাম আজাদ (কাস্তে),ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের মনীষা চক্রবর্তী (মই)।

সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাতজন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বদর উদ্দীন আহম্মদ কামরান (নৌকা), বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর ডা. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন খান (হাতপাখা), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের-বাসদ মো. আবু জাফর (মই) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. এহসানুল হক তাহের (হরিণ), মো. বদরুজ্জামান সেলিম (বাস) ও এহসান মাহবুব জোবায়ের (টেবিল ঘড়ি)। আর তিন সিটিতে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫৩০ জন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here