সৈয়দপুরে সোনালী সঞ্চয় সমিতিতে ডাকাতির মূল হোতা গ্রেফতার, ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা উদ্ধার

0
453
মুল হোতা মাসুদ রানা

সৈয়দপুর শহরের সোনালী সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতিতে প্রকাশ্য দিবালোকে ১৭ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ডাকাতির ঘটনা জড়িত মূল হোতা মাসুদ রানাকে (২৮) গ্রেফতার করেছে সৈয়দপুর থানা পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে বগুড়া থানা পুলিশের সহযোগিতায় বগুড়া শহরের শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাঁর দেয়া তথ্য ও স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার ভোরে দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলায় তাঁর ফুফুর বাসা   থেকে ডাকাতির ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সৈয়দপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আতাউর রহমান জানান, শহরের শহীদ জহুরুল হক সড়কে অবস্থিত সোনালী সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতিতে ডাকাতির ঘটনার মামলার তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারেন ডাকাতির মূল হোতা মাসুদ রানা বগুড়ায় অবস্থান করছে। পরে তার অবস্থানের বিষয়টির সত্যতা পেয়ে সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পালের নেতৃত্বে বুধবার রাতে বগুড়া যায় সৈয়দপুর থানা পুলিশের একটি দল। সেখানে গিয়ে বগুড়া থানা পুলিশের সহযোগিতায় বগুড়া শহরের শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম সংলগ্ন তাঁর খালার বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় মাসুদ রানাকে। সে ঠাকুরগাঁও জেলা সদরের ভূল্লীর বাজার এলাকার কুমারপুর গ্রামের আনিছুর রহমান রহমানের পুত্র এবং ওই মামলার পূর্বে গ্রেফতার হওয়া অফিসের ফিল্ড সুপারভাইজার আলমগীর হোসেনের শ‌্যালক। পরে রাতেই তাঁর দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ডাকাতির টাকা উদ্ধারে বৃহস্পতিবার ভোরে দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ধুকুরঝাড়ির গোবিন্দপুরে ফুফু আইমন বিবির বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এসময় ওই বাড়ির একটি ঘরে বিশেষ কায়দায় কাঁসার হাঁড়িতে রাখা ডাকাতির ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া টাকা

সৈয়দপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (তদন্ত) আবুল হাসনাত খান জানান, গত ২৮ এপ্রিল বিকেলে সৈয়দপুর শহরের প্রানকেন্দ্র শহীদ জহুরুল হক সড়কের (বিচালীহাটি) একটি ভবনে অবস্থিত সোনালী সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতিতে ডাকাতি ঘটনা ঘটে।  অফিসের সুপারভাইজার আলমগীর হোসেনের পরিকল্পনায় তাঁর শ‌্যালক ওই ঘটনার মূল হোতা মাসুদ রানাসহ মোট ৫জন ওই ডাকাতিতে অংশ নেয়। আটক মাসুদ প্রাথমিক ভাবে ৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ডাকাতি করেছে বলে পুলিশকে জানায়। এব্যাপারে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে থানায় সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পালের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজের ছায়াছবি দেখে আসামীকে সনাক্ত করা হয়েছে। আত্মগোপনে থাকা অন্য আসামীদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, মামলায় বাদী ১৭ লাখ ৪৪ হাজার টাকা উল্লেখ‌্য করলেও আসামী মাসুদ ৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে।

উল্লেখ‌্য যে, গত ২৮ এপ্রিল বিকেলে ডাকাত সদস্যরা সমিতির অফিসে প্রবেশ করে ডাকাতির ঘটনা ঘটায়। তারা অস্ত্র ঠেকিয়ে অফিসের ম্যানেজার জাকারিয়া সরকার এবং দুই সহকারী ফিল্ড সুপারভাইজার আলমগীর হোসেন ও ইলিয়াছ হোসেনকে জিম্মি করে সমিতির কার্যালয়ের  টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন ২৯ এপ্রিল সমিতির ম্যানেজার জাকারিয়া সরকার  বাদী হয়ে সমিতির ১৭ লাখ ৪৪ হাজার ৮০৯ টাকা ডাকাতি হয়েছে দাবি করে অজ্ঞাত ৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।

এদিকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া ডাকাতি মামলার আসামী মাসুদ রানা মোট ৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ডাকাতি করা হয়েছে স্বীকার করলেও ম্যানেজার জাকারিয়া সরকার ১৭ লাখ ৪৪ হাজার ৮০৯ টাকা ডাকাতি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করায় ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here