সুশীল সমাজকে ‘ডাক’ দিলেন ফখরুল

0
271

খবর৭১: বিএন‌পি মহাস‌চিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সকল রাজনৈতিক দল, সকল প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, গণতান্ত্রিক শক্তি এবং সুশীল সমাজের প্রতি অনুরোধ জানাবো দেশের এই ক্লান্তিলগ্নে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষের অধিকারের পক্ষে কথা বলুন। কারণ গণতন্ত্র আজ ধ্বংস হতে চলেছে।’ বৃস্পতিবার (১৫ ফেব্রয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বানের কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে আমরা যেসব কর্মসূচি দিচ্ছি তা একেবারেই শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক। অথচ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিগুলো করতে দিচ্ছে না সরকার। গতকাল আমাদের শান্তিপূর্ণ অনশন কর্মসূচি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত করার কথা ছিল। হঠাৎ করে আমাদেরকে বলা হলো দুপুর ১টার মধ্যে কর্মসূচি শেষ করতে হবে। আমরা অশান্তি চাই না। আমরা সংঘাত চাই না বলেই ১টা পর্যন্ত কর্মসূচি করেছি। এর মধ্যেও আমাদের কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে জেলাগুলোতে কোথাও দাঁড়াতেই দিচ্ছে না।’

তিনি ব‌লেন, কোন স্পেসই দেয়া হচ্ছে না। তারা নকশা তৈরি করেছে সেদিকে তারা যেন বাধাহীনভাবে যেতে পারে, সে লক্ষ্যেই এটা করছে। তারা নাশকতার কথা বলে বাধা দিচ্ছে। অথচ নাশকতার প্রশ্নই উঠে না। কারণ আমাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। কিন্তু নাশকতার কথা বলে গ্রেফতার করা হচ্ছে।’

সরকার‌কে উ‌দ্দেশ্য ক‌রে বিএন‌পির মহাস‌চিব ব‌লেন, আপনারা একদিকে বলছেন গণতান্ত্রিক কোন কর্মসূচি, নিয়মতান্ত্রিক কোন কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হ‌বে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ডিএমপি কমিশনার বলেছেন এমনকি প্রধানমন্ত্রী বিদেশ যাওয়ার আগেও বলেছেন। তাহলে কেন বাধা দেয়া হচ্ছে? একটা স্থানেও দেখাতে পারবে না কর্মসূচিকে ঘিরে বিশৃঙ্খলা সংঘাত হচ্ছে। তাহ‌লে আজকে এভাবে কেন গণগ্রেফতার করা হচ্ছে? উদ্দেশ্য একটাই বিএনপিকে নেতৃত্বশূন্য করা, যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে। সেজন্য তারা নিত্য নতুন নীল নকশা করছে।

‘আমরা দেশে একটা শান্তিপূর্ণ অবস্থা তৈরি করতে চাই জনগণ যাতে তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে সরকার সেটা চায় না। আর চায় না বলেই এ সব করছে। নাশকতা কে করছে, আপনারা করছেন। সন্ত্রাস কে করছে, আপনারা করছেন। সন্ত্রাস করে গোটা পরিবেশকে ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করছেন।’

আমরা দেশে শান্তিপূর্ণ ভাবে সকলের অংশগ্রহণ অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই ব‌লেও মন্তব্য ক‌রেন ফখরুল।

তি‌নি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটা সমাবেশের অনুমতি চাইবো। আমরা শিগগিরই করবো। আশা করি কতৃপক্ষ অনুমতি দিবেন। আমরা বসে তারিখ নির্ধারণ করবো।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, অত্যাচার নির্যাতন নিপীড়ন করে কেউ কখনো ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না। ক্ষমতায় যেতে পার‌লেও কিন্তু ফল শুভকর হয়নি। অনুরোধ করবো ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষের মন বুঝার চেষ্টা করুন। অবিলম্বে খালেদা জিয়াসহ অন্য নেতাদের মুক্তি দিন। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করুন যাতে সব দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে।

খা‌লেদা জিয়ার সাজা ও জা‌মিন নি‌য়ে এক প্র‌শ্নের জবা‌বে তি‌নি ব‌লেন, শঙ্কা আমাদের প্রথম থেকেই শুরু হয়েছে। যখন দ্রুততার সঙ্গে মামলা শেষ করা হয়। শঙ্কা তৈরি হয়েছে যেখানে তাকে রাখা হয়েছে সেখান থেকে। রায়ের কপিতে সই করতে এক সপ্তাহ লেগে গেলো। আমরা এখনো সার্টিফাইড কপি পাইনি। সার্টিফাইড কপি পেতে এখন রবিবার, এরপর আবার কি হবে। আমরা আশঙ্কা করছি শুধু রায়ের ব্যাপার নয় আরো উটকো ঝামেলা আসতে পারে। কারণ এই সরকারের লক্ষটাই হচ্ছে খালেদা জিয়াকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখা। দলকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখা। তারা সর্বক্ষেত্রে বল প্রয়োগ করছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, আতাউর রহমান ঢালী, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here