সুন্দরগঞ্জে বিভ্রান্তিকর তথ্য সরবরাহে প্রতারণার অভিযোগ

0
301

আবু বক্কর সিদ্দিক, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শোভাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন নূরীর বিরুদ্ধে ভুল, অসম্পূর্ণ, বিভ্রান্তিকর ও বিকৃত তথ্য প্রদানের মাধ্যমে প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, গত রবিবার সুন্দরগঞ্জ রিপোর্টার্স ক্লাব’র সভাপতি সাংবাদিক আবু বক্কর সিদ্দিক এব্যাপারে প্রধান তথ্য কমিশনার বরাবরে সু-বিচার চেয়ে পূণরায় অভিযোগ দায়ের করেন। গত ২৩ জানুয়ারি কলেজের অধ্যক্ষ ও তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা- দেলওয়ার হোসেন নূরীর বিরুদ্ধে তথ্য কমিশনে দায়েরকৃত ২৯৫/২০১৭ নম্বর অভিযোগ শুনানীকালে ১৫ দিনের মধ্যে সাংবাদিককে চাহিত তথ্য সরবরাহের আদেশ দেন প্রধান তথ্য কমিশনার। তা অমান্য করে সময়সীমা অতিক্রম করা ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা জমাদানে বাধ্য করিয়ে উক্ত তথ্য প্রদানের নামে প্রতারণা ও হয়রাণী করছেন। এর যথাযথ প্রমাণাদীসহ সু-বিচার প্রার্থণা করেন অভিযোগকারী সাংবাদিক পুণরায় অভিযোগ দায়ের করেন।
বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়, তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ মোতাবেক আবেদনকারী সাংবাদিককে চাহিত তথ্য বা জবাব না দিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ও তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা দেলওয়ার হোসেন নূরী নির্বিঘেœই কালক্ষেপণ করতে থাকেন। একইভাবে আপীল আবেদনও এঁড়িয়ে যান আপীল কর্তৃপক্ষ ও গভর্নিং বডির সভাপতি। ফলে, তথ্য কমিশনে অভিযোগ করা হলে তথ্য কমিশন কার্যালয়ে অভিযোগ শুনানীকালে প্রধান তথ্য কমিশনার মরতুজা আহমদ’র নিকট দোষ স্বীকার করে দেয়া প্রতিশ্রæতি মোতাবেক সময়সীমা অতিক্রম করে সাংবাদিককে তাঁর চাহিত তথ্যের বদলে তথ্য কমিশনের আদেশ উপেক্ষা করে সাংবাদিককে অতিরিক্ত টাকা জমাদানে বাধ্য করিয়ে ভুল, অসম্পূর্ণ, বিভ্রান্তিকর ও বিকৃত তথ্য সরবরাহের নামে প্রতারণা ও হয়রাণী করছেন।
একাধিক সূত্র জানায়, অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন নূরী উপজেলার মরুয়াদহ এইচএমকে দাখিল মাদ্রাসা থেকে জন্মের পর ১১ বছর পূর্তী না হতেই দাখিল ও বোয়ালী দারুল- উলুম সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় প্রভাষক পদে চাকরীরতাবস্থায় স্নাতক (সম্মান) পাশ করেন। এদিকে, ১৯৯৫ ইং সালে ‘শোভাগঞ্জ কলেজ প্রতিষ্ঠালগ্নে প্রথমে ভারপ্রাপ্ত ও পরে ব্যাপক জালিয়াতির মাধ্যমে অধ্যক্ষ পদ-ধুষ্ঠিত আছেন। উক্ত সিনিয়র মাদ্রাসায় প্রভাষক পদে চাকরীরত থেকেও ১৯৯০- থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি একই সঙ্গে উভয় প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরবর্তীতে কলেজটি ডিগ্রী কলেজে উন্নীত হয়। সে ক্ষেত্রে তিনি দীর্ঘদিন একযোগে ২ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালনের নামে সুবিধা ভোগ করেন। এদিকে, শোভাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে ব্যাপক জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন পদে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের নামে হাতানো লাখ লাখ টাকায় কলেজের কোন উন্নয়ন না করে নিজে কোটি পতির বনে গেছেন। কলেজের প্রয়োজনীয় জায়গা-জমি না থাকায় ৪ দলীয় জোট সরকারামলের স্থানীয় এমপি আঃ আজিজ (আন্তর্জাতিক মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যু দন্ডাদেশপ্রাপ্ত ও পলাতক ঘোড়ামারা আজিজ)দর ছত্রছাঁয়ায় একটি বাহিনী গঠন পূর্বক ভূমি দস্যু তান্ডব চালিয়ে কলেজের সীমানার পাশে অবস্থিত (উত্তর পার্শস্থ) কৃষক ইব্রাহিম আলীর জমি। যার মৌজা- উত্তর মরুয়াদহ, সাবেক দাগ নং-২৭৩৮, ডিপি খতিয়ান নং-৬৫৮, দাগ নং-৪৪৫৫ ভুক্ত জমির ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেন।
এছাড়া, সাবেক দাগ নং- ২৭৩৮ বাটা ৩০২৩ জমিও একই কায়দায় কলেজের জবর দখলে নেন। এরপর অধ্যক্ষ তার বাহিনী (ভুয়া মালিক ও স্বাক্ষী), কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদেরসহ জমির মাটি কেটে নিয়ে কলেজের মাঠ ভরাট করেন। শুধু তাই না; কৃষক ইব্রাহিম আলীর পরিবার, দোকান-পাঠ, বসতবাড়ি-ঘরে কয়েক দফা হামলা চালিয়ে ব্যাপক মারপিট, ভাংচুর, লুটপাট অগ্নিসংযোগ করিয়েছেন। এরপর অসহায় পরিবারটিকে মিথ্যা মামলায় ফেলে হয়রাণী করেন। পরবর্তীতে গাইবান্ধার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালত মামলা থেকে ইব্রাহীম আলী ও তাঁর পরিবারকে অব্যাহতি প্রদান করেন। স¤প্রতি ব্যাপক জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের নামে হাতানো সাড়ে ২৭ লক্ষ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করলে গভর্নিং বোডির সদস্যরা অধ্যক্ষের কার্যালয় তালাবদ্ধ করেন। কলেজটিকে নিয়োগ বাণিজ্যে পরিণত করে কোটিপতির বনে যাওয়া অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন নুরী ঘোড়ামারা আজিজের আশীর্বাদ পুষ্ট হিসেবে সে সময় দাম্ভিকতা চালান বীরদর্পে। তাঁর শিক্ষা জীবনের সনদ পত্র, একই সঙ্গে একাধিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি, রাজশাহী ও দিনাজপুর বোর্ডে উচ্চ মাধ্যমিক শাখা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়সহ চাকরি জীবনে বিভিন্ন স্তরে দাখিলকৃত সনদ, জাতীয় পরিচয় পত্র, সম্পদের সার্বিক অনুসন্ধানের জন্য দুদকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের আশু হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here