খবর ৭১: রমজান ও ঈদে সাধারণত বেড়ে যায় অর্থপ্রবাহ। আর এই অর্থে ভাগ বসাতে মরিয়া হয়ে উঠে বিভিন্ন চক্র। তাদের মধ্যে একটি হচ্ছে অজ্ঞান পার্টি। রাজধানীতে বেশি দেখা গেলেও অন্যান্য জেলায় দেখা যায় এদের দৌরাত্ম। তাই এ সময় জনসাধারণকে সাবধানে চলাচলের পরামর্শ দেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একই সঙ্গে এ সব চক্রের সদস্যদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর চালায়।
রমজানের তিন দিন আগে গত সোমবার রাজধানীর হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় অজ্ঞান পার্টি চক্রের ৮ সদস্যকে। তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে তৎপরতা শুরু করে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শাহআলম (৫২), হারুন বেপারী (৪৫), আসলাম মোল্লা (৪৪), নয়ন মোল্লা (৪০), টুকু (৩৮), হাফিজ (৩৫),শিপলু সিকদার (৩০) ও রুহুল আমিন (২৪)। এই চক্রের সদস্যরা পুলিশকে জানায়, তারা ৫ থেকে ৬ জনের দলে ভাগ হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তৎপর হয়। নতুন ও পুরনো কৌশলে অভিনব কায়দায় অজ্ঞান করে শিকারের সর্বস্ব হাতানোর ফাঁদ পাতে।
ডিবি পূর্ব বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) খন্দকার নুরুন্নবী জানান, গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ১২০টি চেতনানাশক ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে। রমনা থানায় দায়ের করা এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, রমজান ও ঈদে ৫ থেকে ৬ জনের দলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন এলাকায় তৎপরতা শুরু করে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা। রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড ও ব্যস্ততম এলাকায় নানা ছদ্মবেশে ওঁৎ পেতে থাকে। অভিনব কায়দায় লুটে নেয় টাকা-পয়সা। রাস্তার ধারে ডাব, কোমল পানীয়, ইফতারি বিক্রির আড়ালে চক্রটির সদস্যরা বিভিন্ন ভূমিকায় শিকার ধরার চেষ্টা করে। কোমল পানীয় বা বোতলের পানির সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে তা তুলে দেয়া হয় তৃষ্ণার্তের মুখে। তা খেয়ে অজ্ঞান হলেই চক্রের অন্য সদস্যরা তাকে বাঁচানোর নাম করে নিরাপদে নিয়ে সব কিছু কেড়ে নিয়ে রাস্তায় ফেলে চলে যায়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পূর্ব বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত বছর পুলিশের ব্যাপক অভিযানের কারণে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা কমেছিল। সম্প্রতি অন্তত ৮ থেকে ১০টি চক্র সক্রিয় হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের সংখ্যা প্রায় দেড় শতাধিক। এদের ধরতে ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।