সঠিক ইতিহাস জানতে সৈয়দপুরে সব সরকারি প্রাইমারী স্কুলে নির্মিত হচ্ছে শহীদ মিনার

0
816
সঠিক ইতিহাস জানতে সৈয়দপুরে সব সরকারি প্রাইমারী স্কুলে নির্মিত হচ্ছে শহীদ মিনার
ছবিঃ সংগৃহীত

খবর৭১ঃ

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর থেকেঃ শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝে ভাষা আন্দোলন, বিজয় অর্জন ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত করতে সৈয়দপুরে সব সরকারি প্রাইমারী স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ৪৮টি স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের সরকারি বাধ্যবাধ্যকতা থাকলেও দীর্ঘ চার যুগ তা উপেক্ষিত ছিল। তবে স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর সৈয়দপুর উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগ ওই বাধ্যবাধকতা পালনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। গত অর্থ বছরে ৪৮টি স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। চলতি অর্থ বছরের মধ্যে বাদবাকি ৩০টি স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিশু শিক্ষার্থীদের মনমানসিকতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে নির্মাণ করা হচ্ছে শহীদ মিনার। যাতে শিশু ছাত্র-ছাত্রীরা আমাদের গৌরব উজ্জ্বল সকল জাতীয় দিবসের সঠিক ইতিহাস জানতে ও স্বাধীনতা অর্জনে শহীদদের আত্মত্যাগ বুঝতে পারে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর উপজেলায় মোট ৭৮টি সরকারি প্রাইমারী স্কুল রয়েছে।

এর মধ্যে ৭টি স্কুলে অনেক আগে থেকেই শহীদ মিনার ছিল। অবশিষ্ট ৭১টি স্কুলে কোন শহীদ মিনার ছিলো না। অথচ দীর্ঘ চার যুগেও শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি স্কুলগুলোতে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের সরকারি বাধ্যবাধকতা থাকলেও পালনের কোন উদ্যোগ ছিলো না। দেরীতে হলেও সরকারি বাধ্যবাধকতা বাস্তবায়ন করছে উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগ। সরকারের দেয়া স্কুল সংস্কারের বরাদ্দ অর্থ এবং স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা টাকায় এমন ৭১টি স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হচ্ছে। গত অর্থ বছরে ৪৮টি স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। এ কাজে সরকারি টাকার সঙ্গে স্কুল ম্যানেজিং কমিটিও আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। অবশিষ্ট ৩০টি স্কুলে চলতি অর্থ বছরে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।

এর মধ্যে ৪-৫টি স্কুলে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা নিয়ে জটিলতা রয়েছে। এ জটিলতা নিরসনে চেষ্টা করছে সংশ্লিষ্টরা। সূত্র মতে, সরকারি প্রাইমারী স্কুলে শহীদ মিনার না থাকায় শহীদ ও জাতীয় দিবসের তাৎপর্য্য এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অবহেলিত হয়ে আসছিল। শিশু শিক্ষার্থীদের কাছে দিবসগুলো ছুটির দিন হিসাবে গণ্য হত। শিশুদের এসব অজ্ঞতা দূর করতে উপজেলা প্রশাসন ও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ জাতীয় দিবসগুলোর অবদান ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে শহীদ মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এতে শিশু শিক্ষার্থীরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের সঙ্গে ভাষা আন্দোলন, মহান বিজয় অর্জন ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠবে।

একই সঙ্গে জাতীয় দিবসগুলোর তাৎপর্য্য সম্পর্কে ধারণা লাভ করবে শিক্ষার্থীরা। এ ব্যাপারে মুক্তিযুদ্ধে নিহত স্থানীয় শহীদদের তথ্য সংগ্রহে নিয়োজিত সৈয়দপুর স্মারণিকা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান সরকার বলেন, আমাদের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর নিষ্ঠুরতা এবং মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের অবদান নতুন প্রজন্মকে জানাতে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু দুঃখজনক যে, বিজয়ের দীর্ঘ ৪৮ বছর পরও সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। তবে দেরীতে হলেও সরকারি প্রাইমারী স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণ যথার্থ কাজ হয়েছে।

তিনি উপজেলার সব বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারি উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান। জানতে চাইলে, সৈয়দপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহজাহান মন্ডল জানান, জাতির গৌরব উজ্জ্বল ঘটনার সঠিক ইতিহাস শিশু শিক্ষার্থীদের জানানোর লক্ষ্যে শহীদ মিনার নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য। এ উদ্দেশ্য পূরণে পর্যায়ক্রমে সব সরকারি প্রাইমারী স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণ করার কাজ চলছে। এ জন্য স্কুল সংস্কারের সরকারি বরাদ্দ ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সংগ্রহ করা টাকায় এ কাজ করা হচ্ছে।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here