শেরপুরে পূজা পরিষদের আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবীতে মানব-বন্ধন বিক্ষোভ

0
240

শেরপুর প্রতিনিধি :
“অবৈধ, ফরমায়েসি, গঠনতন্ত্রবিরোধী, বিতর্কিত, হিন্দু সম্প্রদায়ের স্বার্থবিরোধী তথাকথিত পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক কমিটি মানিনা মানব না, বাতিল কর” এমন শ্লোগান দিয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারী শনিবার শেরপুর শহরের নিউমার্কেট প্রধান ফটকে বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার শেরপুরের সর্বস্তরের হিন্দু সম্প্রদায়, পুরোহিত সমাজ, বিভিন্ন মন্দির মঠ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধাসহ সর্বস্তরের মানুষের উদ্যোগে এ মানববন্ধন-বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলা শহরের বিভিন্ন মন্দির, মঠের নেতৃবৃন্দ, পুরোহিত সমাজসহ সহসাধীক সনাতন ধর্মাবলম্বী উপস্থিত ছিলেন।
শেরপুর জেলা পুরোহিত কল্যাণ পরিষদের সাধারন সম্পাদক সঞ্জীব চক্রবর্তী সঞ্জুর সভাপতিত্বে মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শেরপুর সদর উপজেলা পূজা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মিহির কুমার সাহা, সাধারন সম্পাদক শ্রী কমল চক্রবর্তী, পূজা পরিষদের জাতীয় পরিষদ সদস্য মলয় চাকী, জেলা পূজা উদযাপর পরিষদের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা বাদল চন্দ্র দে, নালিতাবাড়ী শহর কমিটির সাধারন সম্পাদক বিধান সরকার শিবু, গোপাল জিউর মন্দির কীর্ত্তন পরিচালনা কমিটির সম্পাদক শ্রী প্রিয়তোষ সরকার জেলা আদিবাসী সংগঠনের সভাপতি শ্রী মনিন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস, জেলা ঋষি সম্প্রদায়ের সাধারন সম্পাদক বিকাশ ঋষি, পূজা পরিষদ নেতা ইন্দ্রজিৎ চাকী, চিনময় সাহা মিঠু প্রমুখ। সমাবেশের দাবীর সাথে একাত্মতা ঘোষনা করে বক্তব্য রাখেন গনফোরামের কেন্দ্রিয় নেতা মো আযহার আলী, শেরপুর সদর উপজেলা কমিউনিষ্ট পার্টির সভাপতি সোলায়মান আহমেদ প্রমূখ।
বক্তারা জেলা পূজা কমিটির আহবায়ক কমিটিকে একটি অসাংবিধানিক কমিটি উল্লেখ করে বলেন, এ কমিটি শেরপুরের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করার মত যোগ্যতা রাখেনা। কমিটির সদস্য সচিব একজন চিহ্নিত সুদখোর ও কালো ব্যবসায়ী। সে কাপড়ের ব্যবসার নামে ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে সে টাকা ব্যক্তি পর্যায়ে সুদে খাটিয়ে কালো ব্যবসার সাথে জড়িত। দেশের বৃহত্তম লুঙ্গি প্রস্তুতকারক আমানত শাহ লুঙ্গির জাল কারাখানা খুলে জাল লুঙ্গিসহ ধরা পড়ে তাঁরা। সিরাজগঞ্জ থানায় এ ঘটনায় একটি মামলা হয়। এছাড়াও কমিটিতে হুন্ডি ব্যবসায়ীসহ বিতর্কিত যেসব লোকজন রাখা হয়েছে তারা ইতোপূর্বে হিন্দু সম্প্রদায়ের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। তাই অবিলম্বে ওই কমিটি বাতিল না করলে জেলায় পূজা অর্চণা বন্ধসহ হরতালের মত কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারী দেন বক্তারা।
মানববন্ধন শেষে শহরের একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয় । সেখানে ৫ শতাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বীর স্বাক্ষরকৃত একটি স্মারকলিপি পুলিশ সুপারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
চলতি বছর জানুয়ারী মাসে কেন্দ্রিয় পূজা কমিটির সভাপতি-সাধারন সম্পাদক জেলা পূজা কমিটির সম্মেলন করার জন্য সুব্রত দে ভানুকে আহবায়ক ও চন্দন সাহাকে সদস্য সচিব করে শেরপুরে ৩৭ সদস্যের একটি কমিটি দেয়। কিন্তু কেন্দ্রিয় কমিটির সাধারন সম্পাদক তাপস পাল কয়েকমাস আগে সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদ নামে ২০ সদস্যের অপর একটি কমিটি অনুমোদন দেন। এ নিয়ে দু’পক্ষই নিজেদের বৈধ কমিটি বলে দাবী করে আসছে।
এ ব্যাপারে পূজা কমিটির জাতীয় পরিষদ সদস্য মলয় চাকী বলেন, কেন্দ্রিয় কমিটির সম্পাদক তাপস পাল ৬ মাস আগে ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি সম্মেলন প্রস্তুতি করে দেন। তাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয় সাংগঠনিক কমিটি গঠনের কাজ শেষ করে সম্মেলন করার জন্য। ডিসেম্বরের মধ্যেই জেলার সকল উপজেলার সম্মেলন শেষ হয়। বিষয়টি কেন্দ্রিয় কমিটি জানে। কিন্তু হঠাৎ করে কাউকে না জানিয়ে গোপনে একটি বিতর্কিত অ্যাডহক কমিটি করে দেন তাঁরা। জাতীয় পরিষদ সদস্য হিসেবে আমাকে ঘটনাটি অবশ্যই জানান উচিত ছিল। কিন্তু তারা সেটি করেনি। এমনকি জেলা কমিটিকে সম্মেলন করার জন্য একটি চিঠি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। আজ পর্যন্ত কমিটি ভাঙ্গার চিঠিও আমরা পাইনি। এটি গঠনতন্ত্রের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here