শিক্ষা যেন বাণিজ্যিক পণ্য না হয়: রাষ্ট্রপতি

0
211

খবর৭১ঃরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দশম সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বর্তমান বিশ্বে টিকে থাকা এবং এগিয়ে চলার বিষয়টি মাথায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে। এটি যেন সার্টিফিকেটসর্বস্ব না হয় এবং শিক্ষা বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত না হয়, তা দেশ ও জাতির স্বার্থে সম্মিলিতভাবে নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়বে।

শনিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম মাঠে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি। এছাড়া প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান ও গবেষণা কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার আহ্বান জানান তিনি।

রাবির চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন, ছাত্র রাজনীতির নেতৃত্ব থাকবে ছাত্রদের হাতে। লেজুড়বৃত্তি বা পরনির্ভরতার কোনো জায়গা থাকবে না। এর দায়িত্ব ছাত্রসমাজকে নিতে হবে।

রাষ্ট্রপতি গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে বলেন, এ অবস্থানে পৌঁছানোর পেছনে বাবা-মা, শিক্ষকসহ সমাজ, দেশ ও জনগণের বিশাল অবদান রয়েছে। সমাজ ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে তোমাদের মেধা, প্রজ্ঞা ও কর্ম দিয়ে জাতির আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তনের বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ইমেরিটাস আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ গবেষণা ও শিক্ষাদান। গবেষণার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ও অনুরূপ উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জ্ঞানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন ও বিতরণ করে। এক্ষেত্রে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণার মানের দিকে নজর রাখার আহ্বান জানান। তিনি উচ্চশিক্ষার প্রধান সমস্যা হিসেবে গবেষণার জন্য অপ্রতুল সম্পদ বরাদ্দকে দায়ী করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে জ্ঞানচর্চা গবেষণা ও নতুন জ্ঞান অনুসন্ধানের স্থান হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশ নির্মাতা হিসেবে প্রস্তুত করতে হবে।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ।

এর আগে বিকাল ৩টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম মাঠে প্রবেশ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

দুটি আবাসিক হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন : সমাবর্তনের আগে ছাত্রীদের জন্য দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল ও ছাত্রদের জন্য শহীদ এ এইচএম কামারুজ্জামান হল নামে দুটি দশতলা বিশিষ্ট আবাসিক হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রাষ্ট্রপতি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা প্রমুখ।

ডি-লিট ডিগ্রি : সমাবর্তনে বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সাবেক প্রফেসর হাসান আজিজুল হক ও সেলিনা হোসেনকে সন্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি।

গ্র্যাজুয়েটদের ক্ষোভ : এদিকে সমাবর্তনে দুপুরের খাবার না রাখা, পুরাতন কলম ও প্রায় দু’বছরের পুরনো ব্যাগে নতুন স্টিকার লাগিয়ে গ্র্যাজুয়েটদের দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

জানা যায়, ২০১৬ সালে সমাবর্তনের জন্য তৈরি করা ব্যাগে সাল পাল্টে ২০১৮ লেখা হয়েছে। আর কলমগুলো অনেক পুরনো হওয়ায় কালি শুকিয়ে গেছে। যার ফলে এগুলোতে লেখা যাচ্ছে না।

ক্ষোভ প্রকাশ করে সমাবর্তনে অংশ নেয়া গ্র্যাজুয়েট রহিদুল ইসলাম বলেন, সমাবর্তনে আমাদের দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে প্রবেশ করতে হয়েছে। খাবারের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। গ্র্যাজুয়েটদের পুরাতন ব্যাগ-কলম দেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here