শায়েস্তাগঞ্জে নিহত টমটম চালকের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন মানবাধিকার কমিশন নেতৃবৃন্দ-

0
221

মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ শায়েস্তাগঞ্জে নিহত টমটম চালক মোঃ শাকিল মিয়ার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন হবিগঞ্জ জেলা ও উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার বিকেলে শায়েস্তাগঞ্জে তাদের বাড়িতে গিয়ে শাকিলের পরিবারের সার্বিক খোঁজ খবর নেন মানবাধিকার কমিশন নেতৃবৃন্দ।এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন জেলা শাখার সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক হারুনুর রশিদ চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক কবি তাহমিনা বেগম গিনি, শায়েস্তাগঞ্জ মডেল কামিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক ফিরোজুল ইসলাম চৌধুরী, , শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিল শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সভাপতি মঈনুল হাসান রতন, মানবাধিকার কমিশন শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ আব্দুর রকিব, সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল কাউন্সিলর, গাজীউর রহমান ইমরান, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান আল রিয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মামুন চৌধুরী, আব্দুল হক রেনু, অর্থ সম্পাদক এম শামীম চৌধুরী, সাংবাদিক হামিদুল হক, সমাজসেবক সৈয়দ আরিফ প্রমুখ।মানবাধিকার কমিশন নেতৃবৃন্দকে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নিহতের মা মরিয়ম চান। এক পর্যায়ে তিনি লেখক ও কবি তাহমিনা বেগম গিনিকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকেন। এ সময় এক হৃদয়বিধারক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল। তিনি শাকিলের নাম ধরে কান্না করে বলছিলেন তাকে এনে দেওয়ার জন্য। অনেকক্ষণ বুঝানোর পর মরিয়ম শান্ত হন। তাৎক্ষণিক নেতৃবৃন্দ মিলে তার হাতে তুলে দেন একটি কাপড়, খাদ্য সামগ্রী (তেল, ডাল, লবণ, চাল, সাবানসহ ইত্যাদি) ও নগদ টাকা।এর মধ্যে মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী, লেখক ও কবি তাহমিনা বেগম গিনি নগদ টাকা ও পৌর কাউন্সিলর আব্দুল জলিলের পক্ষ হতে কাপড় ছিল।নগদ টাকা ও এসব সামগ্রী পাওয়ার পর মরিয়ম চান বলেন, এগুলো নিয়ে নিয়ে কি করব? ছেলেকে ফিরে পেতে তিনি আবারো কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি এভাবে ছেলের অপেক্ষায় থেকে থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছেন। সূত্র জানায়, ৩ জুন রোববার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার জগতপুর নামক স্থানে হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কের পাশে থাকা খাল থেকে টমটম চালক শাকিলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।এর আগে শুক্রবার (১ জুন) দুপুরে শাকিল মিয়া বাড়ি থেকে টমটম নিয়ে বের হয়ে আর ফিরেননি। রাতে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ থাকায় শুক্রবার রাতেই তার বড় ভাই মিজান মিয়া শায়েস্তাগঞ্জ থানায় অভিযোগ দেন। এরপর থেকে পুলিশ বিভিন্ন থানায় বার্তা পাঠায় এবং উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে সদর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে টমটমটি উদ্ধার করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সিলেট জেলার ওসমানীনগর থানার দাসপাড়ার মৃত গপেষ করের পুত্র দিপুল করকে (৩০) আটক করা হয়। এ হত্যাকান্ডে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি চুরির মামলা ও শায়েস্তাগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। হত্যা মামলায় ফকির আলী ও শুভ নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশ। বাকী আসামীরা পলাতক রয়েছে। পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন হবিগঞ্জ জেলা ও উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ এ হত্যাকান্ডের সুবিচার কামনা করেছেন।৫ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে মোঃ শাকিল মিয়া সবার ছোট। গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহেরগৌরীপুর। তাদের পিতা মোঃ মুসলিম মিয়া প্রতিবন্ধী। তিনি সেখানেই (গৌরীপুরে) বসবাস করছেন। আজ থেকে প্রায় ২০ বছর পূর্বে শাকিলদের শায়েস্তাগঞ্জে আসা হয়। তার বোন নিলুফার স্বামীর বাড়ি শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার মহলুল সুনাম এলাকায়। শাকিল তার ভাই মিজান ও মা মরিয়ম এখানেই বসবাস করছেন। একদিকে তার পিতা অসুস্থ। আবার পরিবারে অভাব নিত্যসঙ্গী। পরিবারের এমন হাল দেখে পড়াশুনা ছেড়ে শাকিল টমটম চালিয়ে সৎ পথে জীবিকা নির্বাহের পথ বেছে নিয়েছিল।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন জেলা শাখার সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, আমরা মানবতা নিয়ে কাজ করছি। আমরা শাকিলের পরিবারের পাশে আছি। তার মায়ের আহাজারি দেখে আমরা ব্যথিত। এ দৃশ্য দেখে আমারা চোখের পানি ধরে রাখতে পারছি না। এ হত্যাকান্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান হারুনুর রশিদ চৌধুরী। শায়েস্তাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, আমরা এ মামলাটি অতিগুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here