শরীরের মাংস খসে খসে পড়ছে তার,

0
223

খবর৭১ঃকুড়িগ্রামের চিলমারী হাসপাতালে প্রায় দু’বছর ধরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এক গৃহবধূ। জটিল কুশিন সিনড্রোম রোগে ভুগছেন তিনি। বর্তমানে তার শরীরে পচন ধরে মাংস খসে খসে পড়ছে। দুর্গন্ধে আশপাশে টেকা দায়।

তার স্বজনরা রোগীর পেছনে সহায়সম্বল খুইয়ে এখন হাল ছেড়ে দিয়েছে। হাসপাতালে এখন দেখতেও আসছে না কেউ। ফলে প্রচণ্ড যন্ত্রণা আর একাকিত্ব নিয়ে গৃহবধূ এখন মৃত্যুর প্রহর গুনছেন।

তার উন্নত চিকিৎসার খরচ জোটাতে বৃত্তবানরা এগিয়ে এলে বাঁচতেও পারেন উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের গয়নার পটল চরের অধিবাসী গৃহবধূ ময়না বেগম।

চিলমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মোস্তারী বেগম জানান, এই হাসপাতালে ময়না বেগমের এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। তাকে রংপুর অথবা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারলে সে সুস্থ হয়ে উঠবে। কিন্তু রোগীর স্বজনরা এতই গরিব যে তাকে নিয়ে যেতেও পারছে না। দুই বছর ধরে রোগীটি এখানে রয়েছে। আমরা কিছু টাকা তুলে তার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। তার স্বজনরা এখন হাল ছেড়ে দিয়ে খোঁজখবরও নিচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ময়না বেগমের পরিবারের করুণ কাহিনী। প্রায় দুই বছর আগে তার স্বামী তারেক রহমান দুরারোগ্য ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। দুই সন্তানের মধ্যে ছোট ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। মেয়েটির বিয়ে দেয়া হয়েছে।

স্বামী সন্তান নিয়ে ভালোই চলছিল স্বচ্ছল পরিবারটি। কিন্তু স্বামী অসুস্থ হওয়ায় তার চিকিৎসার পেছনে সহায়সম্বল বিক্রি করে দিতে হয়। তাকে বাঁচানো না গেলেও ব্রহ্মপুত্রের করাল গ্রাস থেকে শেষসম্বল বাড়িটিও রক্ষা করতে পারেনি তারা।

একদিকে স্বামীর মৃত্যু অপরদিকে ভাঙনে নিঃস্ব ময়না বেগম যখন অথই সাগরে ভাসছিলেন তখন তার দিনমজুর ভাই আব্দুল গফুর ময়নাকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন।

এ সময় অসুস্থ ময়না বেগমের চিকিৎসার ভার নেন তার মেয়ে জামাই। শাশুড়ির পেছনে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে জামাইও নিঃস্ব হয়ে পড়েন। কারণ প্রতিদিন প্রায় এক হাজার টাকার ওষুধ লাগে ময়না বেগমের জন্য।

অর্থ সংকটের কারণে এখন ময়না বেগমের কাছে ভিড়ছে না কেউই। হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মোস্তারী বেগমের আর্থিক সহায়তায় চলছে কোনো রকমে চিকিৎসা।

এই বিপদাপন্ন গৃহবধূর চিকিৎসার জন্য বিত্তবান বা কোনো সংগঠন এগিয়ে এলে ময়না বেগম তার অসহ্য যন্ত্রণা আর মৃত্যু থেকে বাঁচতে পারেন। এজন্য সবার সহায়তা কামনা করেছেন ময়না বেগম।

হাসপাতালের বেডে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে শুয়ে থাকা অসহায় ময়না বেগম ফেলফেল করে তাকিয়ে এ প্রতিনিধিকে বলেন, এই কষ্ট আর সহ্য হয় না। আল্লাহ আমাকে নিয়ে গেলেই বাঁচি। দুর্গন্ধে আমার কাছে কেউ এখন আসতে চায় না। দু’বছর ধরে এই হাসপাতালই আমার ঘর-সংসার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here