লালমনিরহাটে জাল সনদে প্রভাষকের চাকরি মামলা করতে এনটিআরসিএ’র চিঠি

0
281

আসাদুল ইসলাম সবুজ, লালমনিরহাটঃ জাল সনদে প্রভাষক পদে চাকুরী করায় অভিযুক্ত শিক্ষক শাহনা পারভীনের বিরুদ্ধে মামলা করতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে লিখিত নির্দেশনা দিয়েছেন জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। শাহনা আক্তার লালমনিরহাটের বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক। স্থানীয় খোদাবাগ এলাকার সৈয়দুল হোসেনের মেয়ে।
কলেজ কর্তৃপক্ষ ও এনটিআরসি’র চিঠি থেকে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক লালমনিরহাট জেলা বিএনপি’র সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু তার বাবার নামে লালমনিরহাটের বড়বাড়িতে শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ পদ থেকে চলতি বছরের ২ আগষ্ট অবসর গ্রহন করেন তিনি। এরপর প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন উপ-অধ্যক্ষ গোলাম মর্তুজা মিঠু। ২০০৯ সালে একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি পদে নিয়োগ প্রদান করেন তৎকালিন অধ্যক্ষ ও পরিচালনা পর্ষদ। সেই নিয়োগে ইতিহাস বিভাগে শাহনা পারভীন নামে একজন শিক্ষক রোল ২২০৮০৫১২ ও রেজি নং ৬১৭৩৫৭১ উলেখ করে ২য় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার সনদ দিয়ে গত ২০১০ সালে ১০ নভেম্বর এমপিও ভুক্ত হন। যার শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জাল বলে সনাক্ত করেছেন এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ। জাল সনদধারী শাহনা পারভীন বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত ১১ অক্টোবর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অঞ্চল রংপুরের উপ-পরিচালক বরাবর চিঠি পাঠান এনটিআরসিএ’র সহকারী পরিচালক মোস্তাক আহমেদ। যার প্রেক্ষিতে গত ২৫ অক্টোবর অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে নির্দেশনা দিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে আদেশ দেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা রংপুর অঞ্চলের উপ পরিচালক (ভার) আখতারুজ্জামান। মামলার দায়ের করার নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানোর এক মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত মামলা দায়ের করেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ। কালক্ষেপন করে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে অভিযুক্ত শিক্ষক ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে ম্যানেজ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে স্থানীয় একটি সুত্র দাবি করেছে। শুধু ইতিহাস বিভাগের শাহনা পারভীন নয়, সহকারী গ্রন্থগারিক পদে উপাধ্যক্ষ গোলাম মর্তুজার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী মাহবুবা আক্তারসহ ৭/৮জন শিক্ষকের সনদ জাল বলে একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র দাবি করেছে।
সুত্রটির দাবি, ২০০৯ সালের সেই নিয়োগে জাল সনদে অযোগ্যদের নিয়োগ দিয়ে কোটি টাকার উপরে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এতদিন টাকার জোরে সব গোপন রাখলেও অধ্যক্ষ অবসর নেয়ায় বেড়াতে শুরু করেছে থলের বিড়াল। সনদটি নিজের দাবি করে শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক শাহনা পারভীন জানান, বিষয়টি নিয়ে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হচ্ছে। তবে খবর প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন তিনি।
শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষের দায়িত্বে উপাধ্যক্ষ গোলাম মর্তুজা জানান, পাঠাতে এক মাস হলেও সবেমাত্র চিঠিটা পেয়েছেন তিনি। চিঠির নির্দেশানা মোতাবেক কাজ করা হবে। তবে শাহনা পারভীন বাদে বাকী ৭ শিক্ষকের বিষয়টি সংবাদের প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন তিনি।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ আলম জানান, মামলা করতে নির্দেশ দেয়া এনটিআরসিএ’র চিঠিটা দেখেছি। তবে মামলা দেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। নিয়মানুযায়ী মামলা দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here